ARTICLE AD
468x60 AD AFTER 4 POSTS
মাগুরার সেই শিশুটির মৃত্যুর পর আসামিদের বাড়িতে গতরাতে অগ্নিসংযোগ ভাঙচুরের পর আজ শুক্রবার (১৪ মার্চ) আবারও মালপত্র লুটপাট এবং গাছ কেটে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এদিন দুপুরে মাগুরা শহরতলীর নিজ নান্দুয়ালী মাঠ পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।
শিশুটির মৃত্যুর পর ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলার আসামিদের বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট চালান স্থানীয় লোকজন।
দুপুরে ওই বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির মূল কাঠামো ভাঙার পাশাপাশি সেখান থেকে গাছপালাও কেটে নিচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। বাড়িতে কয়েকটি দেয়াল ছাড়া কিছুই অবশিষ্ট নেই।
স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল থেকেই ওই বাড়িতে লুটপাট শুরু হয়। প্রথমেই বাড়ির জানালা-দরজা ভেঙে বাড়িতে থাকা জিনিসপত্র লুট করে নেন কিছু লোকজন। এরপর সন্ধ্যা সাতটার পর বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। গভীর রাত পর্যন্ত ওই বাড়িতে আগুন জ্বলতে দেখা যায়।
গাছ কাটতে থাকা এক ব্যক্তির কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এই বাড়ির জন্য গ্রামের দুর্নাম হয়েছে। এ কারণে এই বাড়ির কোনো নাম-নিশানা আমরা রাখতে চাই না। এই বাড়ির পরিণতি দেখে অন্যরা যেন শিক্ষা নেয়, সে ব্যবস্থাই আমরা নিচ্ছি।”
স্থানীয় কয়েকজন জানান, ওই বাড়িতে আধা পাকা দুটি ঘর ছিল। একটি ঘরে পাশাপাশি তিনটি কক্ষ এবং আলাদা একটি এক কক্ষের ঘর। সেখানে মা, দুই সন্তান, এক পুত্রবধূ ও স্ত্রীকে নিয়ে থাকতেন মামলার মূল অভিযুক্ত (শিশুটির বোনের শ্বশুর) হিটু শেখ।
ঘটনার পর হিটু শেখ, তার স্ত্রী ও দুই ছেলেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর ওই বাড়িতে হিটু শেখের বৃদ্ধা মা একাই বসবাস করছিলেন। তবে গতকাল দুপুরের পর তাকে আর ওই বাড়িতে দেখা যায়নি। তিনি কোথায় আছেন, সে বিষয়েও এলাকার লোকজন কোনো তথ্য দিতে পারেননি।
স্থানীয় এক বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘‘শিশুটির ন্যায়বিচারের কথা বলে এই লোকগুলো আরেকটি বড় অন্যায় করছে। এটা করছে মূলত লুটের উদ্দেশ্যে। এই বাড়ি ভাঙচুরের মধ্যে ভালো কিছু দেখি না।”
শিশুটির পরিবারের সদস্যদের সান্ত্বনা জানাতে আজ মাগুরা শ্রীপুর উপজেলায় গিয়েছিলেন জেলা বিএনপির সদস্যসচিব মনোয়ার হোসেন খান। আসামিদের বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের বিষয়ে তিনি বলেন, “আমরা এই ভাঙচুর-লুটপাটকে সমর্থন করি না। যারা এটা করেছে, তারাও অপরাধ করেছে। আমরা তাদেরও বিচার চাই। বিএনপি আইনের শাসনে বিশ্বাসী। আমরা এ ঘটনায় ন্যায়বিচার চাই। আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই। সেটা নিশ্চিত না হলে আমরা আন্দোলন করব। তবে এ ঘটনায় যারা বারবার মহাসড়ক অবরোধ করে জনভোগান্তি সৃষ্টি করছে, আমরা এটাও সমর্থন করি না।”
আসামিদের বাড়িতে আগুন দেওয়া হলেও তা নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা আসেননি। এছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোনো সদস্যও ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের কাজে বাধা দেননি।
মাগুরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘‘এ বিষয়ে এখনো কোনো আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। ওদিকে নজর দেওয়ার সুযোগ পাইনি।”