ইংল্যান্ডে বেড়েই চলেছে গৃহহীন মানুষের সংখ্যা

1 day ago 2
ARTICLE AD
468x60 AD AFTER 4 POSTS

ইংল্যান্ডের ম্যানচেস্টার শহরে ডিসেম্বরের শেষের দিকে এক শীতল সন্ধ্যায় ভিক্ষা করছিলেন ৩৪ বছর বয়সী অ্যারন। তার লক্ষ্য অন্তত ১৭ পাউন্ড জোগাড় করা। কারণ, তা না হলে তিনি হোস্টেল ভাড়া নিতে পারবেন না। ফলে তাকে হয়তো এই রাতটিও প্রচণ্ড ঠান্ডার মধ্যে খোলা আকাশের নিচে কাটাতে হবে। তিন বছর ধরে এভাবেই দিন কাটছে গৃহহীন অ্যারনের।

তিনি একা নন, ইংল্যান্ডে শীতের এই সময়টায় প্রায় নয় হাজার মানুষ উষ্ণতা বা আশ্রয় ছাড়াই রাত কাটাচ্ছেন। যদিও রাস্তার ওপর ঘুমানো (রাফ স্লিপিং) গৃহহীনতার সামগ্রিক সমস্যার একটি অংশ মাত্র, তবে এটিই সবচেয়ে দৃশ্যমান। স্থানীয় প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে অস্থায়ী আশ্রয়ে থাকা অসংখ্য মানুষ যোগ করলে ইংল্যান্ডে মোট গৃহহীন মানুষের সংখ্যা দাঁড়ায় ৩ লাখ ৫৪ হাজারে। চ্যারিটি সংস্থা শেল্টারের তথ্যমতে, গত পাঁচ বছরে এই সংখ্যা ২৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

আরও পড়ুন>> 

গৃহহীনতা মূলত আবাসন বাজার, সামাজিক নিরাপত্তা, অভিবাসন এবং অন্যান্য সামাজিক সমস্যার জটিল সংযোগের ফল। গত জুলাই মাস থেকে ক্ষমতায় থাকা লেবার পার্টির সরকার গৃহহীনতা ‘চিরতরে বন্ধ’ করার জন্য এক উচ্চাভিলাষী লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। গত ডিসেম্বর মাসে তারা স্থানীয় প্রশাসনের জন্য বরাদ্দ ২৮ শতাংশ বাড়িয়েছে।

গৃহহীনতা মোকাবিলার উদ্যোগ

গ্রেটার ম্যানচেস্টারের মেয়র অ্যান্ডি বার্নহ্যাম ২০১৭ সাল থেকে গৃহহীনতা কমাতে কাজ করছেন। তার ‘এ বেড ফর এভরি নাইট’ প্রকল্পের মাধ্যমে প্রতি রাতে ৫৫০টি শয্যা প্রদান করা হয়, যার বাৎসরিক খরচ ৫৫ লাখ পাউন্ড।

তবে অভিবাসন ব্যবস্থাও এই সমস্যাকে জটিল করেছে। উদাহরণস্বরূপ, ২৯ বছর বয়সী সুদানের অনুল যুক্তরাজ্যে আশ্রয়ের অনুমতি পাওয়ার পরও সম্প্রতি সরকারি বাসস্থান থেকে উচ্ছেদ হয়েছেন।

আবাসন সংকট ও ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ

ইংল্যান্ডের সামগ্রিক আবাসন সংকট পরিস্থিতিকে আরও জটিল করেছে। বর্তমানে ১ লাখ ২৩ হাজার পরিবার অস্থায়ী আশ্রয়ে রয়েছে, যা গত পাঁচ বছরে ৪৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ম্যানচেস্টার একটি ‘গুড ল্যান্ডলর্ড চার্টার’ প্রণয়ন করেছে, যা ভাড়াটেদের অধিকার রক্ষা করবে।

গৃহহীনতা কমাতে দীর্ঘমেয়াদি সমাধান হলো নতুন ঘর নির্মাণ। ম্যানচেস্টারের মেয়র ২০২৮ সালের মধ্যে ১০ হাজার ‘বাস্তবিকভাবে সাশ্রয়ী’ ঘর তৈরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তবে সমস্যার সমাধানে অনেক সময় ও প্রচেষ্টা প্রয়োজন।

শেল্টারের ডেবোরা গারভি বলেছেন, গৃহহীনদের জন্য একটি মর্যাদাপূর্ণ বাসস্থানের দরজা এখনো বন্ধ। এটি খুলতে দীর্ঘমেয়াদি প্রচেষ্টা প্রয়োজন।

সূত্র: দ্য ইকোনমিস্ট
কেএএ/

Read Entire Article