ARTICLE AD
468x60 AD AFTER 4 POSTS
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ সক্রিয় হয়ে উঠেছেন ঢালিউডের এক সময়ের জনপ্রিয় অভিনেত্রী শাবনূর। নিজের মতো করে সেখানে শেয়ার করছেন নানা অনুভূতি ও ছবি। তবে এই ভুবনে একটু দেরিতেই সরব হয়েছেন তিনি। সম্প্রতি তার একটি ছবিতে মন্তব্যের জের ধরে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন এই অভিনেত্রী।
গত ১২ জানুয়ারি ফেসবুকে সাদা পোশাকে নিজের কয়েকটি ছবি পোস্ট করেন শাবনূর। সাদা পোশাকের ওপর ল্যাভেন্ডার রঙের ফুলের কারুকাজ। ঠিক তার পেছনে একটি সাদা বাড়িতে ঝুলছিল ল্যাভেন্ডার রঙের ফুল। চমৎকার সে ছবিতে কটূ মন্তব্য করেছেন বেশ কজন ব্যক্তি। ছবিতে অভিনেত্রীর বক্ষ বিভাজক উদ্ভাসিত, এ নিয়েও মন্তব্য করেছেন কেউ কেউ, যা সহ্য করেননি এই অভিনেত্রী।
কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যকারীদের ‘ভণ্ড’ সম্বোধন করে আজ ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছেন শাবনূর। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘যারা আমার ওয়ালে এসে বিরূপ মন্তব্য করেন, তারা আবার দেখি আমার নামে অ্যাকাউন্ট খুলে, পেজ চালিয়ে, আমার পোস্ট করা ছবি-ভিডিও নিয়ে ব্যবসাও করেন। আমাকে পুঁজি করে অনেকেই সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হচ্ছেন, রমরমা ব্যবসা করছেন, করেন, কিন্তু আমার এখানে এসে ভন্ডামী করছেন কেন? কেনইবা সংঘবদ্ধ হয়ে খারাপ মন্তব্য করে যাচ্ছেন?’
‘সবার উদ্দেশ্যে কিছু কথা বলতে চাই’ শিরোনামে ওই পোস্টে শাবনূর লিখেছেন, অনেকেই হয়তো জানেন যে, আমি আমার সোশ্যাল মিডিয়া নিজের মতো করে হ্যান্ডেল করি, কোনো অ্যাডমিন নিয়োগ দিইনি। আমার যখন যেটা ভালো লাগে, নিজের ব্যক্তিগত পছন্দ বা বিশেষ কোন আনন্দ-বেদনার বিষয় থাকলে তা সবার সাথে শেয়ার করতে সোশ্যাল মিডিয়ায় যুক্ত রয়েছি। যে ছবি বা ভিডিও পোস্ট করি, সেগুলো নিয়ে অনেকেই বিভিন্ন মন্তব্য করেন। এমনকি কেউ কেউ আমার ড্রেসআপ নিয়েও উদ্ভট প্রশ্ন তোলেন। অস্ট্রেলিয়ায় আমি সচরাচর ক্যাজুয়াল ড্রেস পরতেই অভ্যস্ত এবং এতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। আর কে কী পরবে সেটা তো তার ব্যক্তিগত পছন্দের ব্যাপার, তাই না!
যে কোনো মন্তব্য গ্রহণ করার মানসিকতায় শাবনূর ওই লেখায় যুক্ত করেছেন – যদি আমার শেয়ারকৃত কোনো কিছু কারো ভালো না লাগে, তবে শালীনতার সঙ্গে গঠনমূলক সমালোচনা করতে পারেন। কিন্তু রিপিটেডলি আজেবাজে মন্তব্য যেন না করেন, তা থেকে বিরত থাকতে সবাইকে বিনীত অনুরোধ করছি। আর একান্তই যদি আমার একটিভিটিস কারো পছন্দ না হয়, তবে আমাকে ফলো না করলেই পারেন।
ক্ষুব্ধ শাবনূর আরও লিখেছেন, ‘যারা আমার ওয়ালে এসে বিরূপ মন্তব্য করেন তারা আবার দেখি আমার নামে অ্যাকাউন্ট খুলে, পেজ চালিয়ে, আমার পোস্ট করা ছবি-ভিডিও নিয়ে ব্যবসাও করেন। আমাকে পুঁজি করে অনেকেই সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হচ্ছেন, রমরমা ব্যবসা করছেন, তা করেন, কিন্তু আমার এখানে এসে ভন্ডামী করছেন কেন? কেনইবা সংঘবদ্ধ হয়ে খারাপ মন্তব্য করে যাচ্ছেন? এদের আবার কেউ কেউ আমাকে আড়ালে চলে যেতে বলেন, হাহাহা। এই ডিজিটাল যুগে এসেও মানুষ এসব জ্ঞান দেয়। আমি আড়ালে চলে যাব না প্রকাশ্যে থাকবো তা আমি বুঝবো।’
সবাইকে শ্রদ্ধাশীল হওয়ার পরামর্শ জানিয়ে শাবনূর লিখেছেন, অন্যের প্রতি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি, আচার ব্যবহার, কথা বলার ভাষা, এইসব আমাদের পারিবারিক মূল্যবোধ ও পারিবারিক শিক্ষার পরিচয় বহন করে। মন্তব্য করার ক্ষেত্রে আমরা যেন একে অন্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হই।
বেশ কয়েক বছর অস্ট্রেলিয়ায় পরিবার নিয়ে স্থায়ী হয়েছেন ঢালিউড অভিনেত্রী শাবনূর। চলচ্চিত্রে হয়ে পড়েছেন অনিয়মিত। তবে শাবনূরকে আজও মনে রেখেছে মানুষ, রেখেছে ভালোবাসায়। তার অভিনীত সিনেমার গানগুলো এখনো ইউটিউবে সর্বোচ্চ সংখ্যকবার দেখার নজির তৈরি হয়েছে।
চলচ্চিত্রে তিন দশক পূর্ণ করা শাবনূর দীর্ঘ বিরতির পর ফিরেছিলেন ঢাকায়। গত বছর নতুন সিনেমায় যুক্ত হয়েছিলেন তিনি। সেগুলোর মধ্যে রয়েছে আরাফাত হোসাইনের ‘রঙ্গনা’ ও চয়নিকা চৌধুরীর ‘মাতাল হাওয়া’। একটি ছবির কয়েক দিনের শুটিং করে অস্ট্রেলিয়ায় ফিরে যান তিনি।
১৯৯৩ সালের ১৫ অক্টোবর এহতেশাম পরিচালিত ‘চাঁদনী রাতে’ সিনেমার মাধ্যমে ঢালিউডে অভিষেক হয় শাবনূরের। কিংবদন্তীতুল্য অকাল প্রয়াত অভিনেতা সালমান শাহর সঙ্গে জুটি গড়ে একের পর এক হিট সিনেমা উপহার দেন শাবনূর। দীর্ঘ তিন দশকের ক্যারিয়ারে শাবনূর অভিনীত উল্লেখযোগ্য ও ব্যবসাসফল বাংলা সিনেমাগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘স্বপ্নের ঠিকানা’, ‘প্রেমের তাজমহল’, ‘আমার প্রাণের স্বামী’, ‘ও প্রিয়া তুমি কোথায়’, ‘ভালোবাসি তোমাকে’, ‘আনন্দ অশ্রু’, ‘বউ-শাশুড়ির যুদ্ধ’, ‘হৃদয়ের বন্ধন’, ‘মোল্লাবাড়ীর বউ’।
এমএমএফ/আরএমডি