ARTICLE AD
468x60 AD AFTER 4 POSTS
দেশের সব নদ-নদী ও খাল দখল-দূষণমুক্ত করাসহ ১১ দফা দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)।
আন্তর্জাতিক নদীকৃত্য দিবসে শুক্রবার (১৪ মার্চ) বুড়িগঙ্গা নদী সরজমিনে পরিদর্শন করে এ দাবি জানায় সংগঠনটি। এর আগে সদরঘাটে মানববন্ধন করেন পরিবেশবাদী সংগঠনের নেতারা।
মানববন্ধনে সভাপতির বক্তব্যে বাপার নির্বাহী সদস্য ড. হালিম দাদ খান বলেন, বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা নদীর পলিমাটি দিয়ে গঠিত একটি বদ্বীপ ভূমি। একাদশ শতাব্দীতে বাংলাদেশে নদীর সংখ্যা ছিল প্রায় দেড় হাজার। নদীগুলো ছিল প্রশস্ত, গভীর ও পানিতে টইটুম্বুর, বর্ষাকালে প্রমত্তা। সারাবছর নাব্য থাকে তেমন নদীর সংখ্যা আজ সর্বসাকুল্যে ২৩০টি। দখল উচ্ছেদের পর প্রত্যেকটি নদী, খাল, হাওর, ও বিলের সীমানা পানি বিজ্ঞানের আলোকে নির্ধারণ করা প্রয়োজন। আমরা আর কোনো নদীকে মরতে দিতে পারি না।
বাপার সাধারণ সম্পাদক মো. আলমগীর কবির বলেন, সারাদেশের নদ-নদীগুলো নানা অজুহাতে দখল ও দূষণ করা হচ্ছে। এ দূষণের তালিকায় সরকারের আমলা, নেতা, নৌ-কর্মকর্তারাও জড়িত। নদী রক্ষার আইন থাকা সত্ত্বেও তা যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে নদী রক্ষা করা হচ্ছে না। নদীকে জীবন্ত সত্তা বলে আদালত স্বীকৃতি দেওয়ার পরেও নদীকে ক্রমাগত হত্যা করা হচ্ছে। হাইকোর্টের নির্দেশের আলোকে দেশের অভ্যন্তরে সব নদী-বিল-হাওর এবং জলাশয়ের অভিভাবক হিসেবে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনকে দায়িত্ব দিতে হবে। আমরা আজকের এ দিনে দেশের সব নদ-নদী ও খাল দখল ও দূষণমুক্ত করার জোর দাবি জানাচ্ছি।
নদীকৃত্য দিবসে বাপার দাবি
১. জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনকে পুনর্গঠন করে হাইকোর্টের নির্দেশের আলোকে দেশের অভ্যন্তরে সব নদী-বিল-হাওর এবং জলাশয়ের অভিভাবক হিসেবে দায়িত্ব দিতে হবে।
২. সব দখলদারদের তালিকা হালনাগাদ করে প্রকাশ করা এবং দখল করা নদীগুলোকে দখলমুক্ত করার জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া।
৩. দখল উচ্ছেদের পর প্রত্যেকটি নদী, খাল, হাওর, ও বিলের সীমানা পানি বিজ্ঞানের আলোকে নির্ধারণ করা।
৪. তিস্তা নদীকে জীবন্ত ও আইনি সত্তা হিসেবে সুপ্রিম কোর্টের ঘোষিত রায়ের বিধান মেনে চলায় সবাইকে বাধ্য করা।
৫. নদী এবং অন্যান্য ভূ-পৃষ্ঠস্থ জলাশয়ে অপরিশোধিত পয়োনিষ্কাশন সম্পূর্ণ বন্ধে জোরালো পদক্ষেপ নেওয়া।
৬. নদী ও জলাশয় আইন মানতে বাধ্য করা।
৭. নদী, খাল ও জলাশয় দূষণকারীদের ওপর উপযুক্ত জরিমানা আরোপ করার বিধান চালু করা। একই সঙ্গে দূষণকারী প্রতিষ্ঠান/ ব্যক্তিকে কোনো ধরনের রাষ্ট্রীয় পুরস্কার নেওয়া বিরত থাকা।
৮. নদী হতে অবৈধ ও অপরিকল্পিত বালি উত্তোলন বন্ধ করা এবং বালি উত্তোলনের একটি নিয়ন্ত্রিত প্রক্রিয়া চালু করা।
৯. নদীর ক্ষেত্রে ‘কর্ডন পদ্ধতি’ পরিত্যাগ করে উন্মুক্ত পদ্ধতি অবলম্বনসহ অবিলম্বে সব প্রকল্প ও উদ্যোগ সমন্বিত করার উদ্যোগ নেওয়া।
১০. দেশের সব নদ-নদী ও খাল দখল-দূষণ মুক্ত করা।
১১. আত্মঘাতী তিস্তা মহাপরিকল্পনা বন্ধ করা।
আন্তর্জাতিক নদীকৃত্য দিবস-২০২৫ উদযাপন উপলক্ষে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), বুড়িগঙ্গা বাঁচাও আন্দোলন, বাদাবন সংঘ, বারসিক, ক্যাপস, সিডাব্লিএফ, সিডিপি, ক্লিন রিভার বাংলাদেশ, দ্বীপ উন্নয়ন সংস্থা, গ্রিন সেভার্স, হাওরবাসী, নাগরিক উদ্যোগ, নদী যাত্রিক, নোঙর ট্রাস্ট, নদীপক্ষ, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট), রিভারাইন পিপল, অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এএলআরডি), নবাব বাগিচা সামাজিক উন্নয়ন কল্যাণ পরিষদ, পরিবেশ উদ্যোগ ও গ্রিন ভয়েসের যৌথ উদ্যোগে বুড়িগঙ্গা নদী সরেজমিনে পরিদর্শন অনুষ্ঠিত হয়।
আরএএস/এমএএইচ/এএসএম