নিরাপদে রোজা রাখতে ডায়াবেটিস রোগীর করণীয়

8 hours ago 4
ARTICLE AD
468x60 AD AFTER 4 POSTS

ডায়াবেটিস রোগীরা রোজা করবে কিনা এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় ভোগেন অনেকেই। কিংবা রোজা রাখলেও কি কি নিয়ম মানবেন এই বিষয়ে অনেকেই পুরোপুরি নির্দেশনা জানেন না। রোজা রেখে ডায়াবেটিস রোগীর করণীয় কী, এ বিষয়ে রাইজিংবিডির সঙ্গে কথা বলেছেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত ডা. মাসুদা পারভীন মিনু।

তিনি বলেন, ‘‘ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য রোজা রাখা গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত, যা সঠিক পরিকল্পনা ও সতর্কতার সঙ্গে নিতে হবে। রোজার সময় দীর্ঘক্ষণ না খেয়ে থাকলে রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা অতিরিক্ত কমে (হাইপোগ্লাইসেমিয়া) বা বেড়ে (হাইপারগ্লাইসেমিয়া) যেতে পারে। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে রোজা পালন করা উচিত।’’

মাসুদা পারভীন মিনুর পরামর্শ—
চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি: রোজা রাখার উপযুক্ত কিনা তা নির্ধারণ করতে এন্ডোক্রাইনোলজিস্ট বা ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
ওষুধ ও ইনসুলিনের সময়সূচি ঠিক করা: রোজার সময় ওষুধ ও ইনসুলিনের ডোজ পরিবর্তন করা লাগতে পারে।
খাদ্যাভ্যাস পরিকল্পনা: সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখতে স্বাস্থ্যকর ইফতার ও সেহরির পরিকল্পনা করা দরকার।
ইনসুলিন গ্রহণ ও ওষুধ ব্যবস্থাপনা: যারা ইনসুলিন নেন, তাদের ইনসুলিনের ডোজ ও সময় চিকিৎসকের নির্দেশনা অনুযায়ী সামঞ্জস্য করতে হবে।

সেহরির আগে: দীর্ঘমেয়াদি (Long-acting) ইনসুলিন নেওয়া যেতে পারে।
ইফতারের আগে বা পরে: স্বল্পমেয়াদি (Short-acting) ইনসুলিন প্রয়োজন হতে পারে।

যারা ওষুধ সেবন করেন, তারা মেটফরমিন ও সালফোনিলুরিয়া জাতীয় ওষুধের ডোজ পরিবর্তন করতে পারেন চিকিৎসকের নির্দেশনা অনুযায়ী।

খাবার ও জীবনধারা: সেহরি ও ইফতারে কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্সযুক্ত খাবার খাওয়া উচিত। যেমন শস্যজাতীয় খাবার, ডাল, শাকসবজি, কম মিষ্টিযুক্ত ফল।

পর্যাপ্ত পানি পান করুন: সেহরি ও ইফতারের মাঝে ৮-১০ গ্লাস পানি পান করা ভালো।

আরও যা মানতে হবে:  অতিরিক্ত মিষ্টি ও ভাজাপোড়া খাবার এড়িয়ে চলুন। সুস্থ্যতার জন্য হালকা ব্যায়াম করুন, তবে অতিরিক্ত কসরত এড়িয়ে চলুন।

রক্তের সুগার পর্যবেক্ষণ:

রোজার সময় দিনে কয়েকবার গ্লুকোজ পরীক্ষা করুন।
শর্করা লেভেল ৪.৫ mmol/L হলে প্রতি ঘণ্টায় পরীক্ষা করতে হবে।যদি রক্তে শর্করা ৩.৯ mmol/L (৭০ mg/dL) এর নিচে নেমে যায়, বা ১৬.৭ mmol/L (৩০০ mg/dL) এর বেশি হয়, তবে রোজা ভেঙে ফেলা জরুরি।

উল্লেখ্য, সঠিক প্রস্তুতি ও নিয়ম মেনে চললে ডায়াবেটিস রোগীরাও সুস্থভাবে রোজা রাখতে পারেন। তবে যাদের অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস, কিডনি সমস্যা বা জটিলতা রয়েছে, তাদের জন্য রোজা ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। তাই অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।

Read Entire Article