মঞ্চে উঠে আপ্লুত হামজা শুধু বললেন ‘বাংলাদেশ জিন্দাবাদ’

3 hours ago 2
ARTICLE AD
468x60 AD AFTER 4 POSTS

ইংলিশ ফুটবলার দেওয়ান হামজা চৌধুরী। তবে এবার তার পরিচয়টা হচ্ছে ভিন্ন। অভিষেক হতে যাচ্ছে দেশের হয়ে লাল সবুজের জার্সি গায়ে। বাংলাদেশের জার্সি গায়ে জড়ানোর আগে সোমবার (১৭ মার্চ) বেলা সাড়ে ৩টার দিকে তিনি তার নিজ গ্রাম হবিগঞ্জ জেলার বাহুবল উপজেলার স্নানঘাটে যান। 

গ্রামবাসীর পক্ষ থেকে সংবর্ধনা দেওয়া হয় হামজাকে। সংবর্ধনা মঞ্চে আপ্লুত এই ফুটবলার কয়েক সেকেন্ড কথা বলেন, যেখানে তার মুখে ‘বাংলাদেশ জিন্দাবাদ’ কথাটিই স্পষ্ট শোনা যায়।

মা-স্ত্রী ও সন্তানদের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টার থেকে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে সোমবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে সিলেটের ওসমানী বিমানবন্দরে পৌঁছান ইংলিশ ক্লাব লেস্টার সিটির মিডফিল্ডার হামজা চৌধুরী। 

বিমানবন্দরে তাকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের কর্মকর্তারা। এরপর সেখান থেকে সড়কপথে বাহুবল উপজেলার স্নানঘাট গ্রামে রওনা হন তিনি। বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে তিনি গ্রামে পৌঁছান। 

গ্রামবাসী হামজার বাড়িতেই তাকে সংবর্ধনা দেওয়ার মঞ্চ তৈরি করে। গ্রামে পৌঁছানোর পর সরাসরি তাকে নেওয়া হয় সেই মঞ্চে। তখন উৎসবের আমেজ বিরাজ করছিল সেখানে। মঞ্চে ফুল দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয় তাকে। এরপর কয়েক সেকেন্ডের বক্তব্য দেন হামজা। ভাঙা ভাঙা বাংলায় কথা বলা হামজাকে বলতে শোনা যায়, ‘বাংলাদেশ জিন্দাবাদ, বাংলাদেশ জিন্দাবাদ।’ এরপর তিনি ঘরে চলে যান।

সোমবার সকাল থেকেই শত শত মানুষ ও সংবাদকর্মী দেওয়ান হামজা চৌধুরীর গ্রামের বাড়িতে জড়ো হন। একনজর দেখতে সেখানে তারা অপেক্ষায় ছিলেন। হামজাকে বরণে পথে পথে তোরণ নির্মাণ করা হয়। বাড়ির প্রবেশ পথেও তোরণ করা হয়। সংবর্ধনার জন্য তৈরি করা হয় একটি মঞ্চ। অতিথিদের আপ্যায়নে ইফতারের আয়োজন ছিল।

দেড় বা দুই বছর বয়স থেকেই তার (হামজা চৌধুরী) দেশে আসা শুরু, কিন্তু এবারের আসাটা ভিন্ন। এবার তার সঙ্গে এসেছেন স্ত্রী, সন্তানরাও। তাদের জন্য বাংলাদেশে এটি প্রথম সফর। পুত্রবধূ প্রথমবার আসছেন শ্বশুর বাড়িতে। তাই বিদেশি বধূকে বরণে ব্যাপক আয়োজন করেছেন স্বজনরা। লাইটিং করা হয়েছে পুরো বাড়িতে।

হামজা চৌধুরীর চাচা দেওয়ান মাসুদ চৌধুরী বলেন, “২০১৪ সালে সর্বশেষ দেশে এসেছিল হামজা। ২০২২ সালে সে বিয়ে করে। এরপর আর তার দেশে আসা হয়নি। সে দেশে আসায় আমরা আনন্দিত। ভাতিজার সাথে এবার তার স্ত্রী এবং আমাদের নাতি-নাতনিদের দেখেছি। মূলত তাদের বরণ করতেই বাড়ি সাজানো হয়েছে। আমাদের মধ্যে অন্যরকম এক অনুভূতি কাজ করছে। শুধু আমাদের বাড়ি নয়, জেলাজুড়ে মানুষের মধ্যে তাকে ঘিরে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে।”

হামজা চৌধুরীর বাবা দেওয়ান গোলাম মোর্শেদ চৌধুরী বলেন, “অনেকেই সংবর্ধনার আয়োজন করতে চেয়েছিলেন কিন্তু আমি বারণ করেছি। একে তো রমজান মাস, আবার সে লম্বা বিমান সফর করে আসছে। সে অনেক ক্লান্ত। তাই কাউকে কষ্ট দিতে চাইনি। বলেছি, এটিই তো শেষ আসা নয়। যেহেতু দেশের হয়ে খেলবে, পরের বার এলে সংবর্ধনা দেওয়া যাবে। 

“এবার আমি নিজে বাড়িতে ছোট আয়োজন করেছিলাম। যেহেতু বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষজন এসেছে, তাই সবার সম্মানে এ আয়োজন। ছোট একটি মঞ্চ তৈরি করেছিলাম। এখানে সবার সাথে কুশলবিনিময় করল, তারপর সবাইকে নিয়ে ইফতার। ব্যস, এটুকুই। একটি রাত বাড়িতে থাকাই মূল উদ্দেশ্য। মঙ্গলবার ঢাকায় চলে যাবে সবাই।”

এর আগেও স্নানঘাট গ্রামে এসেছিলেন হামজা চৌধুরী। তবে এবার তার আসায় ভিন্ন মাত্রা যোগ হয়েছে। এবার তিনি এসেছেন নিজ দেশের হয়ে আন্তর্জাতিক ফুটবলে খেলতে। আগামী ২৫ মার্চ ভারতের শিলংয়ে স্বাগতিক ভারতের বিপক্ষে এশিয়ান কাপ বছাই পর্বে বাংলাদেশের হয়ে মাঠে নামবেন লেস্টার সিটির এই মিডফিল্ডার। এই ম্যাচ দিয়েই বাংলাদেশের জার্সিতে আন্তর্জাতিক ফুটবলে অভিষেক হবে হামজা চৌধুরীর।

Read Entire Article