মাগুরায় শিশুটির পরিবারকে বিএনপি নেতাদের সহযোগিতার আশ্বাস 

4 hours ago 2
ARTICLE AD
468x60 AD AFTER 4 POSTS

মাগুরার শ্রীপুরে সেই শিশুটির পরিবারের খোঁজ নিতে তার বাড়িতে আসেন জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। 

শুক্রবার (১৪ মার্চ) দুপুরে শ্রীপুর উপজেলার সব্দালপুর ইউনিয়নের কাজির পাড়া গ্রামের বাড়িতে শিশুটির পরিবারের খোঁজ নিতে তার বাড়িতে যান জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস। 

তিনি শিশুটির পরিবারের সদস্যদের সান্ত্বনা ও সহযোগিতার আশ্বাস দেন। একই সঙ্গে দাবি করছেন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি। এছাড়া সেই শিশুর মৃত্যুর পর তার বাড়িতে ভিড় করছেন আত্মীয়স্বজন, স্থানীয় বাসিন্দা ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা।

শুক্রবার দুপুরে শ্রীপুর উপজেলায় শিশুটির বাড়িতে গিয়ে লোকজনের ভিড় দেখা যায়। মাগুরা শহরে ও এলাকায় দুই দফা জানাজা শেষে গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে স্থানীয় কবরস্থানে শিশুটিকে সমাহিত করা হয়।

আজ দুপুরে শিশুটির পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে আসেন জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি আফরোজা আব্বাস। তিনি শিশুটির মা ও পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন। তাদের সান্ত্বনা দেন। পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। 

আফরোজা আব্বাস বলেন, “এমন ঘটনা সারা দেশকে নাড়া দিয়েছে। শুরু থেকেই আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এই পরিবারের দায়িত্ব নিয়েছেন। আমরা শিশুটির ন্যায়বিচারের পক্ষে মাঠে নেমেছি। আমরা চাই, এই ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক সাজা হোক। যাতে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা না ঘটে। একই সঙ্গে আমরা পরিবারটিকে সহযোগিতা করছি। আমাদের দল শিশুটির পরিবারের পাশে আছে।”

এর কিছুক্ষণ পরে সেখানে পৌঁছান মাগুরা জেলা বিএনপির সদস্যসচিব মনোয়ার হোসেন খান। তিনিও শিশুটির মায়ের সঙ্গে কথা বলেন। এসময় শিশুটির মা জানান, কয়েক মাস আগে আকস্মিকভাবে তার স্বামী মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তার স্বামীর অসুস্থতার কারণেই পরিবারে বিপর্যয় নেমে এসেছে। ওই নারী নেতাদের কাছে স্বামীর সুচিকিৎসার জন্য সহযোগিতা চান। এসময় মনোয়ার হোসেন খান শিশুটির বাবার চিকিৎসায় সহযোগিতার করার আশ্বাস দেন।

মনোয়ার হোসেন খান বলেন, “যে ঘটনা ঘটেছে, তার ন্যায়বিচার তো আমরা চাই। পাশাপাশি পরিবারটি যাতে ঘুরে দাঁড়াতে পারে, সে ব্যাপারে ব্যক্তিগত সহযোগিতা ছাড়াও আমরা দলগতভাবে তাদের সহযোগিতা করব। খুব শিগগিরই শিশুটির বাবার চিকিৎসা করাতে ঢাকায় নেওয়া হবে।”

শিশুটির বাড়িতে গতকাল থেকেই ভিড় করছেন আত্মীয়স্বজন ও স্থানীয় বাসিন্দারা। শিশুটির এক চাচা বলেন, ‘‘শিশুটির বাবা অসুস্থ হয়ে পড়ার কারণে পরিবারটি অসহায় হয়ে পড়েছে। আমরা আগে থেকে জানতে পারিনি ওরা এত খারাপ অবস্থায় আছে। এখন আমরা সবাই চাই, বাকি তিন ছেলেমেয়ে নিয়ে যাতে ওরা ভালো থাকে। এ কারণে শিশুটির বাবার সুস্থ করা দরকার।’’

পুলিশ ও শিশুটির পরিবার সূত্রে জানা যায়, কয়েক দিন আগে বড় বোনের শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিল শিশুটি। ৮ মার্চ অচেতন অবস্থায় শিশুটিকে মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে আসেন তার বোনের শাশুড়ি। এরপর উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। 

শিশুটির শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। সংকটাপন্ন অবস্থায় শিশুটিকে গত শনিবার সন্ধ্যায় সিএমএইচে স্থানান্তর করা হয়। সেখানেই গতকাল বৃহস্পতিবার শিশুটি মারা যায়।

এ ঘটনায় শিশুটিকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেন তার মা। মামলায় শিশুটির ভগ্নিপতি, বোনের শ্বশুর, শাশুড়ি ও ভাশুরকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। মাগুরার এ ঘটনায় দেশজুড়ে নিন্দা ও সমালোচনা চলছে। ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে চলছে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ।

মাগুরার সেই শিশুর দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে জেলার শ্রীপুর উপজেলার সব্দালপুর ইউনিয়নের কাজির পাড়া গ্রামের বাড়িতে। পরে পাশ্ববর্তী সোনাকুন্ডি গ্রামের গোরস্তানে দাফন করা হয়।

Read Entire Article