শাজাহান খানের রিমান্ড শুনানিতে শেখ মুজিব হত্যা মামলার প্রসঙ্গ

5 hours ago 1
ARTICLE AD
468x60 AD AFTER 4 POSTS

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় রাজধানীর বাড্ডায় রফিকুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি নিহতের মামলায় সাবেক নৌমন্ত্রী শাজাহান খানের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

সোমবার (১৭ মার্চ) সকালে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এম. এ. আজহারুল ইসলামের আদালত শুনানি শেষে এ রিমান্ডের আদেশ দেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা অ্যান্টি টেররিজম ইউনিটের পুলিশ পরিদর্শক শফিউল আলম তার ৫ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। এদিন শুনানিকালে শাজাহান খানকে আদালতে হাজির করা হয়।

রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন। 

শুনানিতে তিনি বলেন, “শাজাহান খান ফ্যাসিস্টের অন্যতম সহযোগী। অবৈধ মন্ত্রী সভার নৌ-পরিবহন মন্ত্রী ছিলেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে দুই হাজার জনকে গুলি করে হত্যার অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের সাথে জড়িত। কত মায়ের বুক সে খালি করেছে। আন্দোলন দমনে ফ্যাসিস্টরিজম রক্ষার্থে কাজ করেছে। ৩০ হাজার জনকে আহত করেছে। কারো হাত নেই, কারো পা নেই। কেউ চিরতরে পঙ্গু হয়ে গেছে। তিনি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য। সর্বোচ্চ ফ্যাসিস্ট কোরামের সদস্য। তার পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থণা করছি।”

শাজাহান খানের পক্ষে মিজানুর রহমান (বাদশা) রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন।

তিনি বলেন, “ঘটনার তারিখ ১৯ জুলাই। মামলা ২৩ সেপ্টেম্বর। বাদী লুৎফুর রহমান। মামলায় আসামি করা হয়েছে ৩৭ জনকে। যাদের মধ্যে ২৩ জন মাদারীপুরের। বাদীর বাড়ির আশেপাশে। শত্রুতা উদ্ধার করতে বাদী এ মামলা করেছেন। তিনিও আওয়ামী লীগ করতেন। শাজাহান খান ৮ বারের সংসদ সদস্য, দুই বারের মন্ত্রী। ঐতিহ্যগতভাবে রাজনৈতিক ফ্যামিলির লোক। ৭৬ বছর বয়স। রোজা আছেন। রিমান্ডে নিলে হয়রানীর শিকার হবেন। আগে তাকে একাধিকবার রিমান্ডে নেওয়া হয়। সেখানে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন।”

তিনি আরও বলেন, “ভিকটিমের মামা পরিচয় দিয়ে লুৎফুর রহমান মামলা করেন। তবে ভিকটিমের স্ত্রী-মা বাদীকে চিনেন না, দেখেননি। আমরাও বিচার চাই। তবে নির্দোষ ব্যক্তি ভোগান্তিতে পড়ুক চাই না।” 

লুৎফুর রহমানের শ্বশুর সিরাজুল ইসলাম। তিনি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। তার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়। নিজেকে সেফ করতে শাজাহান খানের কাছে আসেন। 

তিনি বলেন, “আইনের বাইরে কিছু বলা যাবে না। তাকে বলেন, শেল্টার দেন, মাফ পাবো। ৬ মার্ডার মামলার আসামি। আর বাদী ভিকটিমের মামা কি না পিবিআই তদন্ত করুক। এরকম পারসন (শাজাহান খান) ঘটনার সাথে জড়িত থাকতে পারেন না।”

জবাবে প্রসিকিউটর ওমর ফারুকী বলেন, “ক্রিমিনাল মামলায় মামা-ভাগ্নে, নিগ্রো যে কেউ থানায় গিয়ে বলবে ঘটনা দেখেছেন। ৩ টা লাইন বললেই হয়ে যাবে।  এরপর বিষয়টা তদন্ত কর্মকর্তা দেখবেন। আর গুলিতে নিহত হয়েছেন কি না মুখ্য বিষয় না। কে মামলা করেছে, তদন্তে বের হয়ে আসবে। শেখ মুজিবুর রহমান নিহতের ঘটনায় তার বাসার কেয়ারটেকার মুহিত চার লাইনের জিডি করেছিলেন। পরিবর্তিত পরিস্থিতির কারণে তখন মামলা হয়নি। জিডি হয়। ২১ বছর পর তা মামলায় রূপান্তরিত হয়। সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের বাবা সিরাজুল ইসলাম এ মামলায় পাঁচ শতাধিক সাক্ষী আদালতে উপস্থাপন করেন। চার্জশিট দেওয়া হয় কয়েক হাজার শব্দের। সেই মামলায় যারা হত্যার ষড়যন্ত্র করেছে তাদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। আর যারা হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটিয়েছে তাদেরও মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। এ মামলায়ও একই অবস্থা হবে। গণভবনে বসে যারা যড়যন্ত্র করেছে, রাস্তায় গিয়ে ছাত্রজনতার ওপর গুলি করেছে; তাদের একই সাজা হবে। টোটাল বিষয় তদন্ত কর্মকর্তা দেখবেন। অ্যাভিডেন্স না পেলে তারা অব্যাহতি পেয়ে যাবেন। আর সম্পৃক্ততা পেলে দোষী সাব্যস্ত হবেন।”

আর দুই মাস পর মামলার বিষয়ে বলেন, “ক্রিমিনাল মামলায় কোনো টাইম লিমিটেশন নাই।”

এরপর আদালতের অনুমতি নিয়ে কথা বলেন শাজাহান খান।

পরে আদালত তার ৪ দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।

Read Entire Article