ARTICLE AD
468x60 AD AFTER 4 POSTS
চলতি বছর সরিষার ফলন ভালো হওয়ায় বরিশালে ব্যস্ত সময় পার করছেন মৌচাষিরা। সংরক্ষণ করছেন বিপুল পরিমাণের মধু। ক্ষেতের পাশেই মৌচাষের কারণে সরিষার বাম্পার ফলন হয়েছে বলে জানান চাষিরা। গত বছরের চেয়ে বেশি মধু পাওয়ার কথা জানান তারা।
বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলা ঘুরে প্রায় সব ফসলের মাঠেই দেখা গেছে এমন চিত্র। এসব মাঠ থেকে মধু চাষিরা খাঁচা পদ্ধতিতে মৌমাছির মাধ্যমে মধু সংগ্রহে ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন। এতে অর্থনৈতিক ভাবে লাভবান হচ্ছেন সরিষা চাষি ও মৌচাষি দু’জনেই।
কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, সরিষা ক্ষেতের পাশে মধু চাষের কারণে পরাগায়ন ঘটছে ফসলের। এতে সরিষারও ফলন ২৫ শতাংশ বেড়ে যায়। সরিষা ক্ষেত থেকে মধু সংগ্রহ লাভজনক ব্যবসা হিসেবে দেখা দিয়েছে। মধু বিক্রি করে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছেন তারা।
জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার রাকুদিয়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, সরিষা আবাদ হওয়ায় গত দুই বছর ধরে বড় পরিসরে বাণিজ্যিকভাবে মধু চাষ করছেন এক খামারি। টাঙ্গাইল জেলা থেকে খবর পেয়ে সরিষা ক্ষেতের পাশে করেছেন মধু সংগ্রহের খামার।
টাঙ্গাইল থেকে আসা মধু চাষি মো. মুন্না খান জাগো নিউজকে বলেন, ‘১০৫টি বাক্সে ৮ শতাধিক চাক বসিয়েছি। এখান থেকে এরই মধ্যে ১ মাসে ১৫ মণ মধু আহরণ করেছি। বাকি সময়ে আরও ৫ মণ মধুর আশা করছি। প্রতি কেজি মধু ৫০০-৬০০ টাকা কেজি। স্থানীয় ও আশপাশের এলাকার লোকজন সরাসরি ক্ষেত থেকে মধু কিনে নিচ্ছেন। স্থানীয়দের চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় পাঠাচ্ছি।’
আরেক চাষি আয়নাল হক বলেন, ‘বরিশালে ব্যাপক পরিমাণে সরিষা উৎপাদন হয়েছে। এমন খবর পেয়ে টাঙ্গাইল থেকে বরিশালে এসে গত দুই বছর ধরে মধু চাষ করছি। মৌমাছির প্রতিটি বাক্স থেকে ৫-৬ কেজি মধু সংগ্রহ করছি। এ বছর গত বছরের চেয়ে বেশি মধু পাওয়া যাবে।’
মধু কিনতে আসা নাসির উদ্দিন বলেন, ‘এভাবে কখনো মধু আহরণ দেখিনি। সরাসরি মৌচাক থেকে মধু সংগ্রহ করে মেশিনের মাধ্যমে তা প্রস্তুত করে দিচ্ছেন। এখানে ভেজালের কোনো সুযোগ নেই। তাই নিজের চোখে দেখে মধু কিনে নিয়ে যাচ্ছি।’
আরেক ক্রেতা পারভেজ বলেন, ‘সরাসরি ক্ষেত থেকে সংগ্রহ করা মধু নিচ্ছি। এখানে কোনো ভেজাল করার মতো কিছু নেই। সব কিছু চোখের সামনেই দেখছি। তাই নির্দ্বিধায় কিনে নিচ্ছি। এ ছাড়া দামও অন্য জায়গার তুলনায় কম।’
রাকুদিয়া গ্রামের কৃষক এনায়েত করিম বলেন, ‘শুধু এই গ্রাম নয়, উপজেলার সব গ্রামেই শত একর জমিতে হলুদের সমারোহ। মাঠজুড়ে বিনা সরিষা-১১ আবাদ হয়েছে। কোনো মাঠে হলুদ ফুলে ভরে গেছে আবার কোনোটায় সরিষার দানা চলে এসেছে। ক্ষেতের পাশেই মধু চাষের কারণে আগের চেয়ে ২০ শতাংশ ফলন বেশি হচ্ছে। সরিষা আবাদে খুশি কৃষকেরা।’
বরিশাল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. মুরাদুল হাসান জাগো নিউজকে বলেন, ‘মৌমাছি বসন্তের সময় ফুলের রস সংগ্রহ করতে গিয়ে পরাগায়ন ঘটায়। এতে আবাদ যেমন বেড়েছে; তেমনই অর্থনৈতিকভাবে দু’জনই লাভবান হচ্ছেন। ফলে এ বছর জেলায় সরিষা চাষ বেড়েছে। বেড়েছে মৌচাষির সংখ্যাও।’
এসইউ/জিকেএস