সাত বছর ধরে হাতে লিখে পত্রিকা বের করছেন একজন দিনমজুর 

14 hours ago 1
ARTICLE AD
468x60 AD AFTER 4 POSTS

পত্রিকার নাম ‘আন্ধারমানিক’। পত্রিকার স্লোগান ‘আমরাই লিখি আমাদের খবর’। ৭ বছর ধরে হাতে লিখেই পত্রিকাটি বের করছেন  হাসান পারভেজ নামে একজন দিনমজুর। পত্রিকাটির ঘোষণায় জানানো হয়েছে, ‘এটি উপকূলীয় কমিউনিটি পত্রিকা’।

পত্রিকার রিপোর্টার রয়েছেন ১৬ জন। তাদের মধ্যে কেউ ইলেট্রিশিয়ান, কেউ গৃহিনী আবার কেউ মৎস্যজীবী। তারা সবাই জীবিকার পাশাপাশি কাজের ফাঁকে ফাঁকে লিখেন নিজের এবং হতদরিদ্র মানুষের অসহায়ত্বের গল্প। দীর্ঘ ৭ বছর ধরে এ পত্রিকায় লিখে আসছেন তারা। আর ৭ বছর ধরে ২ মাস অন্তর অন্তর ব্যক্তিগত খরচে এ পত্রিকাটি প্রকাশ করছেন দিন মজুর সম্পাদক হাসান পারভেজ। 

হাতে লেখা পত্রিকা ‘আন্ধারমানিক’

পত্রিকাটির সম্পাদক জানালেন, এরমধ্যে এ পত্রিকাটির জনপ্রিয়তা বেড়েছে বহুগুণে। তবে সরকারি সহায়তা পেলে তিনি সাপ্তাহিক হিসেবে পত্রিকাটি বের করতে চান।

হাসান পারভেজ পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের পশ্চিম সোনাতলা গ্রামের বাসিন্দা। ইটভাটায় শ্রমিকের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন তিনি। প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চল হওয়ায় তাদের গ্রামে গিয়ে পৌঁছায় না কোন জাতীয় বা আঞ্চলিক পত্রিকা। তাই খেটে খাওয়া সাধারন মানুষের সুখ-দুঃখের গল্প তুলে ধরতে হাতে লিখে বের করেন ‘আন্ধারমানিক’। 

পত্রিকা তৈরিতে ব্যস্ত হাসান পারভেজ

২০১৯ সালের ১ মে এ পত্রিকার যাত্রা শুরু হয়। পত্রিকাটি দীর্ঘ ৭ বছর ধরে প্রকাশিত হওয়ায় পাঠক বেড়েছে অনেক। তারা পত্রিকাটি সাপ্তাহিক হিসেবে বের করার অনুরোধ জানিয়েছেন। 

পশ্চিম সোনাতলা গ্রামের ষাটোর্ধ্ব আব্দুর রব মিয়া বলেন, “বয়সের ভারে এখন আর কোন কাজকর্ম করতে পারিনা। তাই বাড়িতে থাকা পড়ে। মোবাইল ইন্টারনেট সম্পর্কেও তেমন ধারণা নেই। তাই মাঝে মাঝে হাসান পত্রিকা দিয়ে যায়,  সে পত্রিকা পড়ি। বেশ ভালোই লাগে। তবে তাকে প্রতি সপ্তাহে পত্রিকা দিতে বলেছি, সম্ভবত আর্থিক সমস্যার কারণে সে দিতে পারছে না।” 

পাঠকের হাতে ‘আন্ধারমানিক’ পত্রিকা

একই এলাকার সত্তরোর্ধ্ব জসিম হোসেন বলেন, “এলাকার কোন কৃষক কোন সবজিতে অধিক লাভবান হয়েছে, কোন ব্যক্তি হাঁস বা মুরগি পালনে সাবলম্বী হয়েছে,  আবার কোন ব্যক্তি অসহায় অবস্থায় আছে সে সব নিউজই হাসান পারভেজের পত্রিকায় ছাপা হয়। এসব ইতিবাচক পত্রিকা পড়তে বেশ ভালই লাগে। তবে দুই মাস অন্তর অন্তর পত্রিকাটি ছাপা হচ্ছে। আমরা অনুরোধ জানাচ্ছি পত্রিকাটি যেন প্রতি সপ্তাহে অন্তত একবার হলেও ছাপা হয়।”

‘আন্ধারমানিক এর নারী রিপোর্টার

হাসান পারভেজ বলেন, “আর্থিক সংকটের কারণে প্রতি দুইমাস অন্তর অন্তর এ পত্রিকাটি বের করছি। তবে একটি প্রিন্টার এবং কম্পিউটারসহ সরকারি সহায়তা পেলে সাপ্তাহিক হিসেবে পত্রিকাটি বের করার ইচ্ছা রয়েছে আমার।”

‘আন্ধারমানিক এর একজন রিপোর্টার

কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম বলেন, “হাসান পারভেজের পত্রিকার প্রচার সংখ্যা বাড়াতে সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। পাশাপাশি তার দাবিগুলো উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে।”

Read Entire Article