কাল থেকেই কানাডা ও মেক্সিকোর পণ্যে ২৫ শতাংশ শুল্ক বসবে: ট্রাম্প

2 hours ago 2
ARTICLE AD
468x60 AD AFTER 4 POSTS

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন, শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) থেকে কানাডা ও মেক্সিকো থেকে আমদানিকৃত পণ্যে ২৫ শতাংশ শুল্ক বসানো হবে। তবে তিনি জানিয়েছেন, তেল আমদানির ক্ষেত্রে এই শুল্ক কার্যকর হবে কি না, সে বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।

ওভাল অফিসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প বলেন, আমাদের সীমান্ত দিয়ে বিপুল পরিমাণ অবৈধ অভিবাসী ও ফেন্টানিল প্রবেশ করছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ক্ষতিকর। পাশাপাশি আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতিও রয়েছে। এসব সমস্যা সমাধানের জন্যই আমি এই শুল্ক বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

ট্রাম্প আরও জানান, তিনি চীনের ওপরও নতুন শুল্ক বসানোর পরিকল্পনা করছেন, যা আগে ১০ শতাংশ হারের কথা বলা হলেও আরও বাড়তে পারে। তিনি অভিযোগ করেন, চীন যুক্তরাষ্ট্রে ফেন্টানিল সরবরাহ করছে, যার ফলে হাজার হাজার মার্কিন নাগরিক মারা যাচ্ছে।

ট্রাম্পের এই শুল্ক নীতির কারণে চীনের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধ আবার শুরু হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এর আগে, ২০১৮ সাল থেকে চীনের আমদানি উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গিয়েছিল, যার একটি বড় কারণ ছিল ট্রাম্প প্রশাসনের ধারাবাহিক শুল্ক বৃদ্ধির নীতি।

চীনের ভাইস প্রিমিয়ার ডিং শুয়েশিয়াং সুইজারল্যান্ডের ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামে (ডব্লিউইএফ) বলেন, চীন ‘উভয়পক্ষের জন্য লাভজনক’ সমাধান খুঁজছে ও আমদানি বাড়াতে চায়। তবে তিনি সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রের নাম উল্লেখ করেননি।

ট্রাম্পের ঘোষণার পর কানাডা ও মেক্সিকোও পাল্টা প্রতিক্রিয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে। দেশ দুটি জানিয়েছে, তারা নিজেদের স্বার্থ রক্ষায় যথাযথ পদক্ষেপ নেবে ও যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্ত-সংক্রান্ত উদ্বেগ দূর করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের আমদানি করা অপরিশোধিত তেলের ৪০ শতাংশ কানাডা ও মেক্সিকো থেকে আসে। যদি এই তেলের ওপর শুল্ক বসানো হয়, তবে এর প্রভাব সরাসরি সাধারণ জনগণের জীবনযাত্রার খরচে পড়বে।

শুল্ক হলো আমদানি করা পণ্যের ওপর কর, যা সাধারণত সেই পণ্যকে আরও ব্যয়বহুল করে তোলে। এর ফলে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত পণ্যগুলোর বিক্রি বাড়তে পারে, যা দেশের অভ্যন্তরীণ শিল্পকে সহায়তা করে।

কিন্তু অনেক বিশ্লেষকের মতে, তেল ও জ্বালানির ওপর শুল্ক বসানো হলে তা উল্টো প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। কারণ, জ্বালানির দাম বেড়ে গেলে তা পণ্যের উৎপাদন ও পরিবহন খরচ বাড়িয়ে দেবে, যার ফলে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দামও বৃদ্ধি পাবে।

এছাড়া, জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি হলে শিল্পখাতেও নেতিবাচক প্রভাব পড়বে, যা অর্থনীতিতে মন্দার ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক নীতির ফলে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকোর মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক আরও জটিল হতে পারে। পাশাপাশি চীনের সঙ্গে নতুন করে বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, তেলসহ গুরুত্বপূর্ণ আমদানিকৃত পণ্যের ওপর শুল্ক বসানো হলে মার্কিন অর্থনীতি ও সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি পেতে পারে। এখন দেখার বিষয়, কানাডা ও মেক্সিকো কী ধরনের পাল্টা পদক্ষেপ নেয় এবং চীন কিভাবে প্রতিক্রিয়া জানায়।

সূত্র: বিবিসি

এসএএইচ

Read Entire Article