জাটকা শিকারের মচ্ছব, ঘুমিয়ে মৎস্য বিভাগ

2 days ago 1
ARTICLE AD
468x60 AD AFTER 4 POSTS

ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে অবাধে চলছে জাটকা শিকারের মচ্ছব। জেলেদের শিকার করা এসব জাটকা মৎস্য ঘাট ও বাজারে প্রকাশ্যে বিক্রি করা হচ্ছে। এ বিষয়ে অনেকটা নিষ্ক্রিয় মৎস্য বিভাগ। এতে নদীতে ইলিশ সংকটের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভোলা সদর উপজেলার ধনিয়ার তুলাতুলি, শিবপুরের ভোলার খাল, ইলিশার জংশনের মেঘনা এবং ভেদুরিয়ার ও ভেলুমিয়ার তেঁতুলিয়া নদীতে দলবেঁধে ইলিশ শিকারে নেমেছেন জেলেরা। বেশিরভাগ জেলেই অবৈধ কারেন্ট ও বেহুন্দি জাল দিয়ে মাছ শিকার করছেন। এসব অবৈধ জালে ঝাঁকে ঝাঁকে উঠে আসছে জাটকা।

ধনিয়া ইউনিয়নের তুলাতুলি এলাকার জেলে শাজাহান মাঝি জানান, পাঁচজন মাঝিসহ তিনি মেঘনা নদীতে যান। ৩২টি জাটকা পেয়েছেন। পরে সেগুলো ঘাটে নিয়ে দুই হাজার টাকায় বিক্রি করেছেন।

জাটকা শিকারে মচ্ছব, ঘুমিয়ে মৎস্য বিভাগ

আরও পড়ুন:

সবুজ মাঝি জানান, তিনিসহ দুজন মেঘনা নদীতে গিয়ে ৪০টি জাটকা পেয়েছেন। এগুলো বিক্রি করেছেন আড়াই হাজার টাকায়।

ভেদুরিয়া এলাকার তেঁতুলিয়া নদীর জেলে ইউসুফ মাঝি ও মিরাজ মাঝি বলেন, ‘পৃথকভাবে বেশ কয়েক হালি জাটকা ধরেছি। ২০টি জাটকা পেলে দু-একটি ৫০০-৭০০ গ্রামের ইলিশ পাওয়া যায়। ঘাটে গিয়ে বিক্রি করে জাটকার দাম তেমন পাওয়া যায় না। তারপরও কী করমু? সংসার চালাতে হয় ও এনজিওর কিস্তির টাকাও দিতে হয়। তাই নদীতে গিয়ে যা পাই তাই ধরে নিয়ে আসি।’

জাটকা শিকারে মচ্ছব, ঘুমিয়ে মৎস্য বিভাগ

ভোলার খাল এলাকার জেলে মালেক মাঝি ও আকতার মাঝি। তারা বলেন, ‘আমরা জানি জাটকা ধরা নিষেধ কিন্তু কী করমু? নদীতে তো তেমন বড় সাইজের ইলিশ ধরা পড়ে না। তাই জাটকা ধরে কোনোরকম সংসার চালাই ও দেনা-পাওনা পরিশোধ করি।’

তবে কিছু সচেতন জেলেও রয়েছেন যারা জাটকা শিকার করছেন না। ধনিয়া তুলাতুলি এলাকার জেলে মনির হোসেন মাঝি ও ইব্রাহিম মাঝি বলেন, ‘বর্তমানে ভোলার সব উপজেলায় আমাদের কিছু ভাইয়েরা অবৈধ জাল দিয়ে জাটকা শিকার করছেন। এতে ভবিষ্যতে নদীতে বড় মাছ পাওয়া নিয়ে আমরা শঙ্কায় রয়েছি। নদীতে অবৈধ জাল ব্যবহার বন্ধ করতে হবে।’

জাটকা শিকারে মচ্ছব, ঘুমিয়ে মৎস্য বিভাগ

আরও পড়ুন:

নদী থেকে শিকার করা এসব জাটকা শিবপুরের ভোলার খাল, ইলিশা জংশন, তুলাতুলি, নাছির মাঝি, রাজাপুর, ভেদুরিয়া, ভেলুমিয়াসহ জেলার সাত উপজেলার বিভিন্ন মৎস্য ঘাটে প্রকাশ্যে নিলামের মাধ্যমে বিক্রি হচ্ছে।

তুলাতুলি মৎস্য ঘাটের আড়তদার কামাল বেপারী ও মো. আলাউদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, ‘নদীতে জেলেদের জালে বড় সাইজের ইলিশ ধরা পড়ে না। তাই জেলেরা জাটকা শিকার করে ঘাটে নিয়ে আসেন। আমরা জাটকা ঘাটে নিলামে বিক্রি করতে চাই না। তবে এখন জাটকা ছাড়া তেমন বড় ইলিশ ধরা পড়ছে না। তাই নিষেধাজ্ঞা জেনেও আড়ত টিকিয়ে রাখতে জাটকা বিক্রি করতে হচ্ছে।’

জাটকা শিকারে মচ্ছব, ঘুমিয়ে মৎস্য বিভাগ

আরও পড়ুন:

তবে মৎস্য বিভাগ নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে বলে দাবি করেন ভোলা জেলার মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দেব।

তিনি বলেন, এ বছর মা ইলিশ বেশি পরিমাণ ডিম ছাড়ার কারণে নদীতে জাটকার পরিমাণ বেশি রয়েছে। তাই জেলেদের জালে জাটকা ধরা পড়ার পরিমাণও বেশি। তবে অবৈধ জাল ব্যবহার ও জাটকা শিকার বন্ধে অভিযান চলছে।

এসআর/এমএস

Read Entire Article