ARTICLE AD
468x60 AD AFTER 4 POSTS
সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যার ২০ বছর পূর্ণ হলো আজ ২৭ জানুয়ারি। দফায় দফায় তদন্তের বেড়াজালে আটকে থাকা ভয়ানক এ হত্যাকাণ্ডের বিচার এখনও আলোর মুখ দেখেনি। নানান জটিলতায় বিচার কার্যক্রম দীর্ঘসূত্রিতায় পড়ে। তবে এ হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্তই হয়নি বলে শুরু থেকে দাবি করে আসছে কিবরিয়া পরিবার। একটি অসমাপ্ত তদন্তের মাধ্যমে বিচার করার চেষ্টা করেছিল আওয়ামী লীগ সরকার। এতে প্রকৃত অপরাধীদের বাঁচানোর চেষ্টা করা হয়েছে বলে অভিযোগ তাদের। এ অবস্থায় বিচার নিয়ে হতাশা থাকলেও এখন সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বিচারটি আলোর মুখ দেখতে পারে বলে মনে করছেন নিহতদের পরিবার ও স্থানীয়রা।
নিহত আব্দুর রহিমের স্ত্রী আছিয়া খাতুন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ২০ বছর ধরে শুধু বিচার চেয়েই যাচ্ছি। আওয়ামী লীগ সরকার বিচারের নামে কালক্ষেপণ করেছে। তারা এ হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার করতে চায়নি। এখন আশা করছি আমার স্বামী হত্যার সুষ্ঠু একটি বিচার হবে।
নিহত সিদ্দিক আলীর ছেলে মো. মুখলেছুর রহমান বলেন, আমরা শুধু বিচার চাই। কিন্তু এত বছরেও পাইনি। এখন আমরা দ্রুত এ হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বিচার দাবি করছি।
নিহত শাহ এএমএস কিবরিয়ার ছেলে ড. রেজা কিবরিয়া বলেন, আমার বাবাকে গ্রেনেড হামলা চালিয়ে হত্যা করা হয়। তার শরীরে প্রায় ৪০০ স্প্লিন্টার বিদ্ধ হয়। একটি ভাঙ্গা অ্যাম্বুলেন্সে তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়। কিন্তু তিনি পথেই মারা যান। আমরা দীর্ঘ ২০ বছর বিচারের জন্য অপেক্ষা করছি। আওয়ামী লীগ আমলে একটি সুষ্ঠু তদন্ত হয়নি। কারণ আওয়ামী লীগের অনেকেই এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিল। এটি আমরা জানতে পেরেছি। আওয়ামী লীগের ৩ জন গুরুত্বপূর্ণ এমপি আবু জাহির, মজিদ খান এবং ডা. মুশফিক চৌধুরী জড়িত ছিল। টাকা দিয়েছিল সালমান এফ রহমান। বিভিন্ন কারণে আমার বাবার সঙ্গে তাদের শত্রুতা ছিল। তিনি তার ব্যাংকের দুর্নীতি, শেয়ার মার্কেটের কেলেঙ্কারির জন্য আব্বার উপর ক্ষেপে ছিলেন। সেকারণেই তিনি পুরো ফান্ডিং করেছেন। তারা সবাই শেখ হাসিনার খুব কাছের লোক। তাই সুষ্ঠু তদন্ত হয়নি। একটি অসমাপ্ত তদন্তের মাধ্যমে সুষ্ঠু বিচার হতে পারে না। আমরা এখন আশা করছি এর বিচার হবে। তবে এ সরকারের সময় না। ভবিষ্যতে সুষ্ঠু বিচার হবে। আমরা সবাই সেই বিচারের অপেক্ষায় রইলাম।
২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বৈদ্যের বাজারে স্থানীয় আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় যোগ দেন সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া। সভা শেষে ফেরার সময় দুর্বৃত্তদের গ্রেনেড হামলায় তিনি ও তার ভাতিজা শাহ মঞ্জুর হুদাসহ মোট ৫ জন নিহত হন। এতে আহত হন ৪৩ জন। এ ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে পৃথক দু’টি মামলা দায়ের করা হয়। কয়েক দফা তদন্ত শেষে ২০১৫ সালে বিএনপি নেতাদের জড়িয়ে ৩৫ জনের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। এরপর লোমহর্ষক এ হত্যাকাণ্ডের বিচার শুরু হয় প্রায় ৮ বছর আগে। কিন্তু শুরু থেকেই এ চার্জশিট সঠিক নয় বলে দাবি করছেন শাহ এএমএস কিবরিয়ার পরিবারের সদস্যরা।
সৈয়দ এখলাছুর রহমান খোকন/এফএ/জেআইএম