নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে কাজ করছে কুইক রেসপন্স টিম

2 hours ago 1
ARTICLE AD
468x60 AD AFTER 4 POSTS

“সমাজ থেকে যেকোনো মূল্যে নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ করা হবে” বলেছেন, সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ।  
 
বুধবার (২২ জানুয়ারি) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিকার ও প্রতিরোধে কুইক রেসপন্স টিমের কার্যক্রম বিষয়ক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।

মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মমতাজ আহমেদ এনডিসি এর সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কেয়া খান। 

কর্মশালায় কুইক রেসপন্স টিম এর কার্যপরিধির করণীয় বিষয় নিয়ে আলোকপাত করেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব ড. প্রকাশ কান্তি চৌধুরী। 

কর্মশালায় ডাক্তার, নার্স, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী প্রতিনিধি, শিক্ষক প্রতিনিধি, পেশাজীবী প্রতিনিধি, এনজিও প্রতিনিধি, হেল্পলাইন সার্ভিস প্রোভাইডার, উন্নয়ন সহযোগী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, শিক্ষার্থী প্রতিনিধি ও মিডিয়া প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।    

তিনি বলেন, “জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতার শিকার সারভাইভারদের সহায়তায় কুইক রেসপন্স টিমের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই টিম গঠনের ফলে যেকোনো সহিংসতার ঘটনার পরপরই দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে সারভাইভারদের উদ্ধার করা, দ্রুত সময়ে প্রয়োজনীয় কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে সারভাইভারদের নিরাপত্তা প্রদান এবং সহিংসতা কমানো সম্ভব হবে।” 

তিনি বলেন, “যেকোনো প্রতিহিংসা বা ভবিষ্যৎ হুমকি থেকে সারভাইবার, পরিবার এবং সংশ্লিষ্টদের রক্ষা করা, নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ এবং প্রয়োজনে প্রশিক্ষণসহ অর্থনৈতিকভাবে পুনর্বাসন কার্যক্রম পরিচালিত হবে। এই টিমের কার্যক্রম শুধুমাত্র সারভাইভারদের জীবন বাঁচাতে নয় বরং তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনা ও পূনর্বাসনের ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা পালন করবে।”

উপদেষ্টা বলেন, “বাংলাদেশে নারী ও শিশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে কঠোর আইনের বিধান থাকলেও এ ধরণের অপরাধ প্রত্যাশিত মাত্রায় হ্রাস পাচ্ছে না। নারী ও শিশুর প্রতি পরিবার, কর্মক্ষেত্র, পাবলিক স্পেস, অনলাইনসহ নানাভাবে বিভিন্ন ধরণের সহিংসতা ও অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে। প্রচলিত সামাজিক রীতিনীতি, প্রথা, বৈষম্যমূলক সামাজিক আচরণের কারণে সমাজে যুগ যুগ ধরে নারী ও শিশু নানা ধরণের নির্যাতন ও সহিংসতার শিকার। সময়ের সাথে সাথে সহিংসতার ধরণের ক্ষেত্রও মাত্রা পরিবর্তিত হচ্ছে। প্রকৃত অর্থে নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লংঘন।”

তিনি বলেন, “মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অন্যতম লক্ষ্য হলো জেন্ডার সমতাভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা, নারী ও শিশুর সুরক্ষা এবং নারীর ক্ষমতায়নে কার্যক্রম পরিচালনা করা। নির্যাতন/সহিংসতার শিকার হলে অথবা সহিংসতার শিকার হওয়ার আশংকা থাকলে ধর্ম, বর্ণ, জাতি, জেন্ডার, ভৌগলিক অবস্থান, শারীরিক প্রতিবন্ধকতা, বৈবাহিক অবস্থা ইত্যাদি নির্বিশেষে সকল নারী ও শিশু সমান গুরুত্বের সাথে রাষ্ট্রীয়ভাবে আইনি সহায়তা, সুরক্ষা ও প্রয়োজনীয় সেবা পাওয়ার অধিকারী। বাংলাদেশ সরকার নারী ও শিশুর প্রতি সকল প্রকার সহিংসতা বন্ধে বদ্ধপরিকর। এ লক্ষ্যে একটি টেকসই প্রতিষ্ঠানিক কাঠামো প্রণয়ন করে সে অনুযায়ী কর্মপদ্ধতি নির্ধারণ ও তা বাস্তবায়নে ‘কুইক রেসপন্স টিম’ গঠনপূর্বক নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতার বিষয়ে প্রত্যেকটি ঘটনায় পৃথকভাবে কার্যকর ও দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহণ করার উদ্যোগ নিয়েছে।”

নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ ও প্রতিকারে এ মন্ত্রণালয় মাল্টিসেক্টরাল এপ্রোচে ১৪টি মন্ত্রণালয়ের সাথে সমন্বিতভাবে কাজ করছে বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, “বর্তমানে এ মন্ত্রণালয়ের আওতায় ১৪টি ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার, ৬৭টি ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেল, নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে টোল ফ্রি জাতীয় হেল্পলাইন সেন্টার (১০৯), ন্যাশনাল ট্রমা কাউন্সেলিং সেন্টার, ৮টি রিজিওনাল ট্রমা কাউন্সেলিং সেন্টার, ন্যাশনাল ফরেনসিক ডিএনএ প্রোফাইলিং ল্যাবরেটরি ৮টি বিভাগীয় ডিএনএ স্ক্রিনিং ল্যাবরেটরি, রিয়াল টাইম মনিটরিং ডাটাবেইজের মাধ্যমে দেশের নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ ও প্রতিকারে কাজ করছে।”

Read Entire Article