ফতুল্লায় ময়লা-দুর্গন্ধযুক্ত পানিতে দুর্ভোগ

3 days ago 2
ARTICLE AD
468x60 AD AFTER 4 POSTS

বছরজুড়ে পানিতে তলিয়ে থাকে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার রাস্তাঘাট। বৃষ্টি হলেতো কোনো কথাই নেই। ময়লা ও দুর্গন্ধযুক্ত পানিতে তলিয়ে যায় পুরো এলাকা। বাসা-বাড়িতে গিয়েও ওঠে এ পানি। টানা বৃষ্টিতে এবারও ফতুল্লার এলাকার রাস্তাঘাট, বাসা-বাড়ি, ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান তলিয়ে গেছে। সবমিলিয়ে এলাকার কয়েক হাজার বাসিন্দাদের বসবাস করাটা দুষ্কর বিষয় হিসেবে পরিণত হয়েছে।

এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কয়েকদিনের বৃষ্টিতে ফতুল্লা লালপুর, পৌষা পুকুর পাড়, আল-আমিন বাগ, সস্তাপুর, লালখা, দাপা, কুতুবপুর ও নন্দলালপুর কোথাও হাঁটু পর্যন্ত আবার কোথাও বুক পর্যন্ত ময়লা ও দুর্গন্ধযুক্ত পানি জমে উঠেছে। বৃষ্টি না থাকলে পানি কমতে শুরু করে। আবার অনেক সময় পানি সহজে নামে না। সেই সঙ্গে কিছু রাস্তায় বছরজুড়ে ময়লা ও দুর্গন্ধযুক্ত পানি জমে থাকে। যা এলাকাবাসীর জন্য ব্যাপক দুর্ভোগের সৃষ্টি করেছে।

সেই সঙ্গে এ এলাকায় যারা বসবাস করেন তাদের পায়ে হেঁটে যাতায়াতের কোনো উপায় নেই। ফলে তাদের যানবাহনে পরিণত হয়েছে নৌকা আর ভ্যানগাড়ি। সেই সঙ্গে এসব এলাকায় যারা ভাড়া থাকেন তারা আরও আগে থেকেই ভাড়া ছেড়ে দিয়ে অন্য জায়গায় চলে যান।

আর যারা স্থায়ীভাবে এ এলাকার বাসিন্দা তাদের ময়লা ও দুর্গন্ধযুক্ত পানি নিয়ে বসবাস করতে হচ্ছে। না পারছেন এলাকা ছেড়ে চলে যেতে না পারছেন এলাকায় থাকতে। এ অবস্থায় তারা কোনো স্থায়ী সমাধানে যেতে পারছেন না। সেই সঙ্গে এ অবস্থায় তারা জনপ্রতিনিধির সহযোগিতাও পাচ্ছেন না। শুধুমাত্র একের পর এক আশ্বাসের বাণী শুনেই যাচ্ছেন। কিন্তু সমাধান আর হচ্ছে না।

ফতুল্লায় ময়লা-দুর্গন্ধযুক্ত পানিতে দুর্ভোগ

মুদি ব্যবসায়ী খলিল বলেন, দীর্ঘদিন ধরে পানির এ সমস্যা চলছে। জনপ্রতিনিধি যারা আছে তারা শুধু আশ্বাসই দেয়। কেউ পানিতে নেমে যাবে এন করবো তেন করবো রাস্তা করবো ড্রেন করবো এগুলো শুধু শুনেই যাচ্ছি। কিন্তু দিন শেষে সমস্যার সমাধান আর হয় না। এখন যে অবস্থা বাড়িওয়ালাদের বিপদ। ভাড়াটিয়ারা ভাড়া না দিয়ে পালিয়েছেন। একেক জনের দুই-তিনমাসের ভাড়া আটকে রয়েছে। ভাড়াই চাইবে এ সুযোগ নাই।

তিনি আরও বলেন, জনপ্রতিনিধিরা শুধু আশ্বাস দিয়ে যায়। এখন পর্যন্ত কোনো ফলাফল পাইনি। একদিনের বৃষ্টিতেই তলিয়ে গেছে। গতবার এমপি সাহেব এসে বক্তব্যে বলছে কাজ হবে। কিন্তু আমরা কোনো ফলাফল পাইনি। জনপ্রতিনিধিরা জানে কী করবেন। প্রয়োজন হলে বাড়ি ভেঙে রাস্তা করুক। এতে আমাদের কোনো আপত্তি থাকবে না। কেউ যদি বাড়ির সামনে জায়গা দেয় তাহলে তার জন্যই ভালো। তবুও একটু সুখে থাকতে চাই।

আরমান নামে আরেকজন বলেন, আমাদের কোমর সমান পানি উঠেছে। কী করবো কোনো কাজ কাম নাই। আমাদের দোকানপাট বন্ধ। আমাদের চলাফেরা কষ্ট। গতবার এমপি সাহেব এসে নিজে দেখে গেছে কোনো ফলাফল পাইলাম না।

একই ভাবে রুনু আক্তার এক নারী বলেন, ভোর সকালে উঠে কাজে যেতে হয়। কিন্তু পানির কারণে যেতেই পারি না। কোমরের উপড়ে উঠে যায় পানি। ভ্যানগাড়ি দিয়ে যেতে হয়। এ ভাড়ার টাকা কোথায় পাই। এ এলাকার কোনো এমপি নাই।

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ জাফর সাদিক চৌধুরী বলেন, আমি গত কয়েকদিন নাগাদ এখানে যোগদান করেছি। এসময় ফতুল্লাবাসীর কাছ থেকে নানা অভিযোগ পেয়েছি। তবে বর্তমানে এখানকার বড় সমস্যা হচ্ছে জলাবদ্ধতা। এ সমস্যা সমাধানে আমি কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব, প্যানেল চেয়ারম্যান সহ এলাকাবাসীর সঙ্গে আলোচনা করছি। মূলত অধিকাংশ জনপ্রতিনিধি পলাতক থাকায় এ সমস্যা সমাধানে আমাদের কিছুটা সমস্যায় পড়তে হয়েছে।

মোবাশ্বির শ্রাবণ/আরএইচ/জিকেএস

Read Entire Article