ফেব্রুয়ারিতেও সেন্টমার্টিনে যাওয়ার অনুমতি চান পর্যটন ব্যবসায়ীরা

3 hours ago 1
ARTICLE AD
468x60 AD AFTER 4 POSTS

আগামী ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত পর্যটকদের সেন্টমার্টিন দ্বীপে যাতায়াত ও রাত্রি যাপনের জন্য উন্মুক্ত করার দাবি জানিয়েছেন সেন্টমার্টিন সংশ্লিষ্ট সব খাতের ব্যবসায়ীরা।

বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) রাজধানীর পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) মিলনায়তনে ‘সেন্টমার্টিন দ্বীপ পরিবেশ ও পর্যটন রক্ষা-উন্নয়ন জোট’ এর ব্যানারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করেন তারা।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত নভেম্বরে সেন্টমার্টিনে পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। কিন্তু ওই সময় ট্রাভেল পাস নিয়ে জটিলতাসহ নানা কারণে সেন্টমার্টিনে পর্যটক যেতে পারেননি। ডিসেম্বর থেকে পর্যটকরা যেতে পারলেও অনেক ট্রাভেল পাস নিয়ে নানা প্রতিবন্ধকতার মধ্যে পড়ছে। আগামী মার্চে রমজান মাস শুরু হবে। এর আগে ফেব্রুয়ারি ভ্রমণের মোক্ষম সময়। এই সময় পর্যটক যাওয়া বন্ধ থাকলে বড় ক্ষতির মুখে পড়বে দ্বীপবাসী। তাই ব্যবসায়ী, স্থানীয় জনগণ, শ্রমিক কর্মচারী ও দিনমজুরদের স্বার্থে ফেব্রুয়ারি মাস সেন্টমার্টিন দ্বীপে যাতায়াত ও রাত্রি যাপনের জন্য উন্মুক্ত করার দাবি জানান তারা।

ব্যবসায়ীরা বলেন, পর্যটক দুই তিন মাস এলেও সারা বছরের রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করতে হয়। শুধু ডিসেম্বর ও জানুয়ারি এ দুই মাসের আয় দিয়ে বছরের ব্যয় মেটানো সম্ভব নয়। এমনিতেই দ্বীপ সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী উদ্যোক্তারা বিনিয়োগ করে লোকসানের মধ্যে আছেন। ফেব্রুয়ারিতে পর্যটক পেলে লোকসান কিছুটা কম হবে। তাই সরকার সংশ্লিষ্টদের কাছে ফেব্রুয়ারি মাস সেন্টমার্টিন দ্বীপে পর্যটকদের যাতায়াত ও রাত্রিযাপনের অনুমতি চান তারা।

সংবাদ সম্মেলনে সেন্টমার্টিন দ্বীপ পরিবেশ ও পর্যটন রক্ষণ উন্নয়ন জোটের চেয়ারম্যান শিবলুল আজম কোরেশী বলেন, ছাত্র-ছাত্রী, স্থানীয় জনগণ, দিনমজুর, কুলি, শ্রমিক, মৎস্যজীবী, চাকরিজীবী, তরুণ উদ্যোক্তা, পর্যটন ব্যবসায়ী, ট্রান্সপোর্ট ব্যবসায়ী, হোটেল, রিসোর্ট মালিকসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষের প্রবল আপত্তি সত্ত্বেও সরকার সেন্টমার্টিন ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা এবং রাত্রিযাপন ও পর্যটক যাতায়াত সীমিত করার আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যার ফলে এরই মধ্যে হাজার হাজার মানুষ বেকার হয়ে পড়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা তাদের জীবন-জীবিকা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ছেন। এখানে আর্থিক সংকট ও অভাব দেখা দিয়েছে। ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের পড়ালেখা ও ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত। পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত অসংখ্য চাকরিজীবী বেকার হয়ে পড়েছে। উদ্যোক্তারা পথে বসে গেছে। হোটেল রিসোর্ট মালিকদের বিনিয়োগ হুমকির মুখে পড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে জনজীবনের ব্যাপক ক্ষতি ও মানবিক সংকটের কথা বিবেচনায় আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করার দাবি জানান তিনি।

সভায় সেন্টমার্টিনস দ্বীপ পরিবেশ ও পর্যটন রক্ষা-উন্নয়ন জোটের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র সেন্টমার্টিন দ্বীপে প্রতিবছর ১ অক্টোবর থেকে ৩১ই মার্চ পর্যন্ত পর্যটন যাতায়াত করতো। কিন্তু এ বছর পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের থেকে পর্যটন সীমিতকরণের আদেশ জারি করে। আদেশে বলা হয়, নভেম্বর মাসে পর্যটকরা সেন্টমার্টিন যেতে পারবেন কিন্তু রাত্রিযাপন করতে পারবেন না। ডিসেম্বর ও জানুয়ারি এ দুই মাস দুই হাজার পর্যটক যেতে পারবে ও রাত্রিযাপন করতে পারবে এবং ফেব্রুয়ারি মাসে পর্যটকরা সেন্টমার্টিন যেতে পারবেন না। কিন্তু যথাযথ সময়ে জাহাজ চলাচলের অনুমতি না পাওয়ায় গত নভেম্বরে কোনো পর্যটক সেন্টমার্টিন যেতে পারেননি। ১ ডিসেম্বর থেকে জাহাজ চলাচলের অনুমতি হলেও ট্রাভেল পাস সংগ্রহের আতঙ্কে পর্যাপ্ত সংখ্যক পর্যটক সেন্টমার্টিন যেতে পারেননি। যার কারণে শতভাগ পর্যটনের ওপর নির্ভরশীল সেন্টমার্টিনবাসী এবং পর্যটন ব্যবসায়ীরা সর্বস্বান্ত হওয়ার পথে। দুই মাসের আয় দিয়ে সেন্টমার্টিনবাসীর ১২ মাস চলা সম্ভব নয়। মানবিক বিবেচনায় পর্যটকদের জনা ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সেন্টমার্টিন দ্বীপ উন্মুক্ত করে দেওয়ার জন্য জোর দাবি জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে সেন্টমার্টিন ক্রুজ জাহাজ মালিকদের নেতা আটলান্টিক জাহাজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নজরুল ইসলাম, তিলোত্তমা ইকো রিসোর্টের মালিক ও স্থানীয় পরিবেশবাদী জাভেদ রহমান, কেয়ারি সিন্দাবাদ জাহাজের প্রতিনিধি সারোয়ার হোসেন প্রমুখ। এছাড়া ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ (টোয়াব), ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব কক্সবাজার, ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব কুয়াকাটা, সেন্টমার্টিন হোটেল মালিক সমিতি, ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব সেন্টমার্টিন, ই-ট্যুরিজম অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ (ই-ট্যাব), সেন্টমার্টিন দোকান মালিক সমিতি, বোট মালিক সমবায় সমিতি, মৎস্যজীবী মালিক সমিতি, বাংলাদেশ স্লিপার এসি বাস মালিক সমিতি, সেন্টমার্টিন পর্যটকবাহী জাহাজ মালিকদের সংগঠন সি-ক্রুজ অপারেটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ভুয়াব) নেতা ও সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

ইএআর/এমএএইচ/

Read Entire Article