ARTICLE AD
468x60 AD AFTER 4 POSTS
বিপিএলে দর্শক হচ্ছে, খেলাও জমছে বেশ। কিন্তু দুই-একটা ফ্র্যাঞ্চাইজির ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিক শোধ নিয়ে টালবাহানায় যেন সব সাফল্য ঢাকা পড়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে দুর্বার রাজশাহী নিয়মিতই ঘোরাচ্ছে ক্রিকেটারদের। চেক হাতে দিলেও সেটা বাউন্স করছে। ফলে টাকা হাতে পাননি ক্রিকেটাররা।
পারিশ্রমিক নিয়ে এই জটিলতার নিরসনে ফ্র্যাঞ্চাইজিদের সঙ্গে বসার সিদ্ধান্ত নেয় বিসিবি। সেই বৈঠক থেকে ইতিবাচক কিছু সিদ্ধান্ত এসেছে। বিসিবির পরিচালক নাজমুল আবেদীন ফাহিম গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপে জানিয়েছেন, ফ্র্যাঞ্চাইজিদের কিছুটা সময় দেওয়া হয়েছে, তবে তারা ঠিকভাবে পাওনা পরিশোধ করছে কিনা, সেটা নজরদারিতে রাখা হবে।
ফাহিম বলেন, ‘শুরু থেকেই ফ্র্যাঞ্চাইজিদের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক স্থাপনের একটা চেষ্টা ছিল। তাদের আমরা পার্টনার হিসেবেই দেখেছি। তারা যেন নিজেদের বাইরের কেউ মনে না করে। তাদের থেকেও তেমন দায়িত্বশীল আচরণ আশা করেছিলাম। যেন একটা ভালো বিপিএল হয়। এজন্যই বিপিএলের শুরু থেকে কয়েকবার তাদেরকে মধ্যাহ্নভোজে আমন্ত্রণ জানিয়েছি। বিপিএল প্রায় শেষের দিকে। তাই আজকের বৈঠকও প্রয়োজন ছিল। এর বাইরে কিছু বিষয় আছে যেগুলো নিয়ে কিছু কথাবার্তা প্রয়োজন ছিল।’
বিসিবি পরিচালক যোগ করেন, ‘আমরা কিছু কর্মকাণ্ড দেখেছি যা বিপিএলের সঙ্গে যায় না। তাদের সেগুলো মনে করিয়ে দেওয়া। কিছু পারিশ্রমিক সমস্যা আছে, সেগুলো নিয়ে আলাপ করেছি। তারা কীভাবে পরিকল্পনা করছে, সেটা আলোচনা হয়েছে। আমরা একটা জায়গায় আসতে পেরেছি। আর সাত দিন আছে। আমি নিশ্চিত নই এই সাত দিনে সমাধান কতটা হবে। কিছুটা তো হবেই। সময় বলবে আমরা কতটা সমাধানের পথ তৈরি করতে পেরেছি। সেটা দেখার জন্য একটু অপেক্ষা করতে হবে।’
দুর্বার রাজশাহীর ক্রিকেটাররা এখন পর্যন্ত টাকা হাতে পাননি। তাদের চেক বাউন্স করেছে। এমন ঘটনায় হতাশা প্রকাশ করে ফাহিম বলেন, ‘খুবই দুর্ভাগ্যজনক। এটা (চেক বাউন্স) আমার মাথায়ও আসেনি কিন্তু। দুই-একটা ফ্র্যাঞ্চাইজি পারিশ্রমিক নিয়ে তাদের প্রতিশ্রুতি রাখেনি বা রাখতে পারেনি। তবে এর বাইরে বাকিরা কিন্তু প্রায় পুরো প্রতিশ্রুতিই রেখেছে। দুই-একটা কিছুটা ব্যর্থ ফ্র্যাঞ্চাইজির কারণে ভালো ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর কথা উঠে আসেনি। আজকে আমরা তাদের ধন্যবাদ দিয়েছি।’
‘এখনও যারা পারিশ্রমিক পরিশোধ করেনি, তাদের নিয়ে আলাপ হয়েছে। তারা কিছু কিছু প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। আমরা যথেষ্ট ভালোভাবে তাদের বার্তা দিতে পেরেছি যে পারিশ্রমিকের প্রক্রিয়াগুলো কেমন হবে। আমাদের প্রত্যাশা কী, কতদিনের মধ্যে কী চাই, সেই সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা তাদের দিয়েছি। তারা কথা দিয়েছে, সেভাবেই তারা এগিয়ে যাবে। তবে আগে আমরা আলাপ-আলোচনার পর অপেক্ষা করতাম। একটা সময় পর দেখতাম কাজ হয়ে গেছে। তবে এখন আমরা নিয়মিত ভিত্তিতে চেক করব তারা যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, সেগুলো পূরণ করতে পেরেছে কিনা-যোগ করেন ফাহিম।’
‘যারা একটু বা বেশ খানিকটা পিছিয়ে আছে তাদের সঙ্গে বেশি আলাপ হয়েছে। তারা কীভাবে এই ক্রান্তিটা পার করবে, সেটা নিয়েই কথা হয়েছে। তারা কিছু কিছু প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, আমরা সেগুলো শুনেছি। তাদেরকে আমরা কিছুটা সময় দিয়েছি প্রতিশ্রুতিগুলো পূরণ করার জন্য। তবে যেটা বললাম, এখন থেকে প্রায় প্রতি মুহূর্তেই তাদের ফলো করব প্রতিশ্রুতিগুলো কতটা রাখছে। তাদের যতটুকু সম্ভব চাপে রাখব। ক্রিকেটাররা পারিশ্রমিক নিয়ে যেন সন্তুষ্ট থাকে, এই বিষয়টা যেন তারা নিশ্চিত করে।’
যে ফ্র্যাঞ্চাইজিরা এমন করেছে, তাদের ওপর আস্থা রাখা যায়? বিপিএল গভর্নিং কমিটির সদস্য সচিব নাজমুল আবেদীন ফাহিম ইঙ্গিত দিলেন, প্রয়োজনে আইনি ব্যবস্থা নেবেন তারা।
ফাহিম বলেন, ‘আস্থা কিছুটা কম বলেই, এখন আমরা প্রতি মুহূর্তে তাদের নজরদারিতে রাখছি। প্রতিশ্রুতি যদি মোটামুটি রাখতেন তারা, তাহলে এত বেশি উদ্বিগ্ন হতে হতো না। তবে এখন থেকে নিয়মিত নজরে রাখব আমরা। প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কাজ করছে কিনা, সেটি দেখব আমরা। কাগজপত্র করাই আছে। সব লিগ্যাল পেপার করা আছে। সেখান থেকেই নির্দেশনা পাব আমাদের কী করতে হবে।’
ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোকে ভরসা দিতে বিসিবি লভ্যাংশ ভাগাভাগি করতেও রাজি জানালেন ফাহিম। তিনি বলেন, ‘বিসিবির কিন্তু ইচ্ছা ছিল, আমরা যদি টিকেটের থেকে ভালো একটা পরিমাণ অর্থ পাই। যদি আমরা সমান-সমান বা কিছুটা লাভ করতে পেরেছি, আমাদের চেষ্টা থাকবে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোকে এর অংশ করা। পরিমাণ যেমনই হোক, আমরা এটা শুরু করতে চাই। একটা বার্তা দিতে চাই যে, আমরা তাদের সঙ্গে আছি। এটা যদি সম্ভব হয়, অবশ্যই (লভ্যাংশ ভাগাভাগি) হবে।’
এমএমআর/এএসএম