বাবার মরদেহ বাড়িতে রেখে পরীক্ষা দেওয়া সেই আভা পেলেন জিপিএ ৩.৫০

16 hours ago 4
ARTICLE AD
468x60 AD AFTER 4 POSTS

সন্ত্রাসীদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে ক্ষতবিক্ষত বাবার মরদেহ বাড়িতে রেখেই এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন সুমাইয়া তানহা আভা। যদিও পরীক্ষা দেওয়ার মানসিকতাই ছিল না তার। অনেকটা বাধ্য হয়েই পরীক্ষাগুলো দিয়েছিলে। সেই আভা জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন। তার এ পাসের খবরে সবচেয়ে বেশি খুশি হতেন তার বাবা। অথচ তিনিই দেখে যেতে পারলেন না মেয়ের পরীক্ষার ফলাফল।

আইসিটি পরীক্ষার আগের সন্ধ্যায় হত্যার শিকার হন আভার বাবা আল-আমিন। সারারাত বাবার মরদেহ সামনে নিয়ে বোবার মতো অপলক চেয়েছিলেন। পরে সবার পীড়াপীড়িতে নিজের অনিচ্ছা সত্ত্বেও সকালে পরীক্ষার হলে যান আভা। পরীক্ষা শেষে বাড়িতে এসে বাবাকে চিরবিদায় জানান।

সুমাইয়া তানহা আভা খুলনার সরকারি পাইওনিয়ার গার্লস কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন।

আভা বলেন, ‘গত ৮ জুলাই সন্ধ্যায় সন্ত্রাসীরা আমার বাবাকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর একটি গ্যারেজের মধ্যে তাকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। সারারাত আমি বাবার মরদেহের সামনে কেঁদেছিলাম। পরদিন আমার আইসিটি পরীক্ষা ছিল। ভেবেছিলাম পরীক্ষা দেবো না। কারণ পরীক্ষা দেওয়ার মতো মানসিক অবস্থা আমার ছিল না। কিন্তু মা, আত্মীয়-স্বজন ও সহপাঠীদের পীড়াপীড়িতে আমি পরীক্ষা দিতে যাই। মূলত, বাবা চাইতো আমি ভালোভাবে লেখাপড়া করি। বাবার কথা মনে করে পরীক্ষা দেই। পরীক্ষার হলে লিখতে পারছিলাম না। সহপাঠীরা আমাকে সাহস জোগায়। পরীক্ষা দিয়ে আসার পর বাবার মরদেহ দাফন করা হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘পরীক্ষার ফলাফলে আমি খুশি। তবে বাবা বেঁচে থাকলে তিনিই সবচেয়ে বেশি খুশি হতেন। এখন বাবার কথা অনেক মনে পড়ছে। তার স্বপ্ন ছিল আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করে যেন চাকরি করি।’

‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অথবা খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য চেষ্টা করবো। বুধবার ভর্তি পরীক্ষার কোচিংয়ে ক্লাস শুরু করবো। বাবার ইচ্ছা পূরণে আমার যত কষ্টই হোক, লেখাপড়া চালিয়ে যাবো’, যোগ করেন সুমাইয়া তানহা আভা।

আলমগীর হান্নান/এসআর/এমএস

Read Entire Article