বিচারক নিয়োগের অধ্যাদেশ সংশোধন চেয়ে আইনি নোটিশ

6 hours ago 1
ARTICLE AD
468x60 AD AFTER 4 POSTS

বিচারক নিয়োগে জারি করা ‘সুপ্রিম কোর্টে বিচারক নিয়োগ অধ্যাদেশ, ২০২৫’ এর চারটি ধারা সংশোধনের পদক্ষেপ চেয়ে সরকারের সংশ্লিষ্টদের প্রতি লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন এক আইনজীবী।

বুধবার (২২ জানুয়ারি) আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. আজমল হোসেন খোকন এ নোটিশ পাঠিয়েছেন। তিনদিনের মধ্যে এ বিষয়ে পদক্ষেপ না নিলে এই আইনজীবী আদালতের দ্বারস্থ হবেন বলে জানিয়েছেন।

নোটিশ পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করে বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) আইনজীবী আজমল হোসেন বলেন, কাউন্সিল প্রতিষ্ঠা, কাউন্সিলের সচিব, কাউন্সিলের ক্ষমা ও কাজ এবং হাইকোর্ট বিভাগের বিচারক নিয়োগের সুপারিশ সংক্রান্ত ধারা সংশোধন চেয়েছি।

সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে সাত সদস্যের কাউন্সিল যাচাই-বাছাই করে বিচারক নিয়োগের সুপারিশ রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠাবেন। তবে রাষ্ট্রপতি চাইলে কারণ উল্লেখ করে কাউন্সিলের সেই সুপারিশ থেকে কারও নাম ফেরত পাঠাতে পারবেন। এসব বিষয় উল্লেখ করে ২১ জানুয়ারি এ বিষয়ে অধ্যাদেশ জারি করেছে সরকার।

এর আগে গত বছরের ২৮ নভেম্বর এ অধ্যাদেশের একটা খসড়া সুপ্রিম কোর্টের পক্ষ থেকে আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়।

‘সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ অধ্যাদেশ, ২০২৫’ অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, সুপ্রিম কোর্টে নিয়োগের জন্য উপযুক্ত ব্যক্তি বাছাই ও প্রধান বিচারপতি কর্তৃক রাষ্ট্রপতিকে পরামর্শ প্রদানের উদ্দেশ্যে অধ্যাদেশ প্রণয়ন করা হয়েছে।

অধ্যাদেশের ধারা ৩-এ বলা হয়েছে, সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগের জন্য রাষ্ট্রপতিকে পরামর্শ প্রদান প্রক্রিয়ায় প্রধান বিচারপতিকে সহায়তা করতে এই অধ্যাদেশ অনুসারে উপযুক্ত বাছাই করে করে সুপারিশের জন্য একটি স্থায়ী কাউন্সিল থাকবে, যার নাম হবে ‘সুপ্রিম জুডিসিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্ট কাউন্সিল।

প্রধান বিচারপতি হবেন সাত সদস্যের এই কাউন্সিলের চেয়ারপারসন। কাউন্সিলের সদস্যরা হলেন- আপিল বিভাগে কর্মে প্রবীণতম বিচারক, হাইকোর্ট বিভাগে কর্মে প্রবীণতম বিচারক, বিচার-কর্ম বিভাগ (অধস্তন আদালত) থেকে নিযুক্ত হাইকোর্ট বিভাগের কর্মে প্রবীণতম বিচারক, চেয়ারপারসনের মনোনীত আপিল বিভাগের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারক, অ্যাটর্নি জেনারেল (পদাধিকারবলে বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান) এবং চেয়ারপারসনের মনোনীত একজন আইনের অধ্যাপক বা আইন বিশেষজ্ঞ ।

সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল এই কাউন্সিলের সচিবের দায়িত্ব পালন করবেন বলে ধারা ৪-এ বলা হয়ছে।

ধারা ৬-এ কাউন্সিলের ক্ষমতা ও কার্যাবলি নিয়ে বলা হয়েছে। সেখানে বলা হয়, কাউন্সিল এই অধ্যাদেশ অনুসারে প্রয়োজনীয় সংখ্যক উপযুক্ত ব্যক্তিকে বাছাই করে সুপ্রিম কোর্টের বিচারক পদে নিয়োগের সুপারিশ প্রণয়ন করবে।

সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৯৫ ও ৯৮ এর অধীন সুপ্রিম কোর্টের বিচারক ও অতিরিক্ত বিচারক পদে নিয়োগের জন্য কাউন্সিল সংবিধানে বর্ণিত যোগ্যতার সম্পূরক হিসেবে কয়েকটি বিবেচনা করবেন। সেগুলো হলো- প্রার্থীর বয়স ৪৫ এর নিচে হবে না; প্রার্থীর শিক্ষাগত যোগ্যতা, পেশাগত দক্ষতা, অভিজ্ঞতা, প্রকাশনা ও প্রশিক্ষণ; আইনের কোনো নির্দিষ্ট শাখায় প্রার্থীর বিশেষ জ্ঞান ও দক্ষতা; প্রার্থীর সামগ্রিক জ্ঞান, প্রজ্ঞা, সততা, সুনাম, আইনের প্রতি শ্রদ্ধা ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক বিষয়; কোনো ফৌজদারি মামলায় প্রার্থীর দণ্ড সম্পর্কিত তথ্য এবং কাউন্সিলের নির্ধারণ করা অন্যান্য বিষয়।

ধারা ৮-এ বলা হয়েছে, সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৯৫ এর আওতায় আপিল বিভাগের বিচারক পদে নিয়োগের উদ্দেশ্যে এই অধ্যাদেশের অন্যান্য বিধানাবলি সাপেক্ষে কাউন্সিল আপিল বিভাগে নিয়োগযোগ্য বিচারকের শূন্যপদের সংখ্যার আলোকে হাইকোর্ট বিভাগে কর্মরত জ্যেষ্ঠ বিচারকদের যোগ্যতা নিরূপণের উদ্দেশ্যে ধারা ৬ এর উপধারা (২) ও উপধারা (৩) এর দফা (গ) এবং সংশ্লিষ্ট বিধানাবলিতে উল্লিখিত বিষয়াদি বিবেচনা করবে। এরপর একটি তালিকা সুপারিশ আকারে প্রণয়ন করবে।

আইনজীবী আজমল হোসেন বলেন, কাউন্সিলে হাইকোর্ট বিভাগ থেকে দুই ভাগে দুজন বিচারক থাকবেন। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সমিতির কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই। আর রেজিস্ট্রার জেনারেলকে করা হয়েছে সদস্যসচিব। সেখানে স্বার্থের সংঘাত রয়েছে। এছাড়া বয়স নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৫, এতে অনেক যোগ্য লোক বঞ্চিত হবেন।

এফএইচ/ইএ/জিকেএস

Read Entire Article