বিতর্কিত প্রবন্ধ প্রত্যাহার, ‘ছাত্র সংবাদ’ এর দুঃখ প্রকাশ

19 hours ago 2
ARTICLE AD
468x60 AD AFTER 4 POSTS

মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কিত একটি প্রবন্ধ নিয়ে তুমুল বিতর্কের পর সেটি প্রত্যাহার করে নিয়েছে ইসলামী ছাত্রশিবিরের মাসিক প্রকাশনা ‘ছাত্র সংবাদ’। কীভাবে এই ধরনের প্রবন্ধ ছাপানো হলো, সেই ব্যাখ্যায় তারা বলেছে, ‘সম্পাদকমণ্ডলীর অসতর্কতাবশত’ প্রবন্ধটিতে অনাকাঙ্ক্ষিত কয়েকটি লাইন থেকে গেছে। 

এই কারণে বুধবার রাত ৮টার দিকে ছাত্র সংবাদের ফেসবুক পেজে এর কর্তৃপক্ষ দুঃখ প্রকাশ করে পোস্ট দিয়েছে।

এমন লেখা প্রকাশের জন্য ছাত্রশিবিকে জাতির সামনে ক্ষমা চাওয়ার কথা বলেছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। একই সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড এই প্রকাশনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার এবং তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করার দাবি তুলেছে।

ছাত্র সংবাদ তাদের ফেসবুক পোস্টে লিখেছে, “ঐতিহ্যগতভাবে ‘ছাত্র সংবাদ’মহান মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বিভিন্ন লেখকের লেখা প্রকাশ করে থাকে। পত্রিকাটি মহান স্বাধীনতা দিবস ও বিজয় দিবস নিয়ে বিশেষ সংখ্যাও প্রকাশ করে যাচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে। এরই ধারাহিকতায় গত ডিসেম্বর’২৪ সংখ্যায় মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বেশ কয়েকটি লেখা প্রকাশ করে। তবে ওই সংখ্যায় সম্পাদকমণ্ডলীর অসতর্কতাবশত ‘যুগে যুগে স্বৈরাচার ও তাদের করুণ পরিণতি’ শীর্ষক একটি প্রবন্ধে মহান মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বিতর্কিত ও অনাকাঙ্ক্ষিত কয়েকটি লাইন প্রকাশ হয়ে যায়।”

“মহান মুক্তিযুদ্ধকে বিতর্কিত করে, এমন একটি অনাকাঙ্ক্ষিত প্রবন্ধ প্রকাশে ‘ছাত্র সংবাদ’ আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছে এবং বিতর্কিত এই প্রবন্ধটি অনলাইন থেকে প্রত্যাহার করে নিচ্ছে। সেই সাথে ২০২৪ এর ডিসেম্বর সংখ্যার সকল প্রিন্ট কপিও প্রত্যাহার করে নিচ্ছে।”

শিবিরকে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান ছাত্রদলের
জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের দৃষ্টিতে ছাত্র সংবাদের প্রবন্ধটি মুক্তিযুদ্ধবিরোধী তথ্য প্রচার এবং বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অবমাননার শামিল। এই ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ করে সংগঠনটির শীর্ষ নেতারা বলেছেন, এই জন্য জাতির কাছে ছাত্রশিবিরকে ক্ষমা চাইতে হবে। 

ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছিরের সই করা এক যৌথ বিবৃতিতে তারা এই আহ্বান জানান। 

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, স্বাধীনতার দীর্ঘ পাঁচ দশক পেরিয়ে এসেও নিজেদের দলীয় প্রকাশনায় মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করাকে ভুল ও অদূরদর্শিতা হিসেবে প্রচার করা এবং ‘পাপকাজ মনে করে’ ক্ষমা প্রার্থনা করা একটি গর্হিত এবং ন্যক্কারজনক ঘটনা।

“প্রকৃতপক্ষে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ কোনো ধর্মযুদ্ধ ছিল না। এটি ছিল অত্যাচারী, জালিম, দখলদার পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নির্বিচারে গণহত্যার বিরুদ্ধে মজলুম বাংলাদেশিদের প্রতিরোধের যুদ্ধ। ধর্ম, বর্ণ, গোত্র নির্বিশেষে আপামর জনসাধারণের অংশগ্রহণের কারণে মুক্তিযুদ্ধ ছিল একটি সত্যিকারের জনযুদ্ধ,” বলা হয়েছে বিবৃতিতে।

সংগঠনটি বলছে, এ ধরনের বক্তব্য একাত্তরের পরাজিত শক্তি ও তাদের দোসরদের ধৃষ্টতা এবং নিজেদের পরাজয়ের গ্লানি চাপা দেওয়ার অপকৌশল ছাড়া আর কিছুই নয়।

ছাত্রদল নেতারা অবিলম্বে শিবিরকে এই ঘটনায় তাদের দলীয় অবস্থান স্পষ্ট করার আহ্বান রাখেন। অবশ্য তার কিছু সময়ের মধ্যে ছাত্রশিবির ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে দুঃখ প্রকাশ করে এবং মুদ্রণ সংস্করণ বাজার থেকে প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয়। 

রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় বিচারের দাবি
মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি কানিজ ফাতেমা ও সাধারণ সম্পাদক আল মামুন এক যৌথ বিবৃতিতে মুক্তিযুদ্ধকে কটাক্ষ করার অভিযোগ তুলে ছাত্র সংবাদের প্রবন্ধ প্রকাশের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও রাষ্ট্রদ্রোহের আওতায় নিয়ে বিচারের দাবি করেছেন।

বিবৃতিতে তারা বলেন, ছাত্রশিবিরকে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অপশক্তি আখ্যা দিয়ে ছাত্র সংবাদের মাসিক প্রকাশনায় মহান মুক্তিযুদ্ধ ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদেরকে কটাক্ষ করে বাংলাদেশের অস্তিত্বকে অস্বীকার ও সংবিধান লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িতদেরকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় বিচার করতে হবে। না হলে আইনগত ব্যবস্থা নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারগুলো রাজপথে কর্মসূচি দেবে।

Read Entire Article