ARTICLE AD
468x60 AD AFTER 4 POSTS
মাদারীপুরে কামাল মাতুব্বর (৫৫) নামে এক মানবপাচারকারী চক্রের সদস্যকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছেন ভুক্তভোগীরা। বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) দুপুরে ঘটনাটি ঘটে। ওই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
মাদারীপুর সদর থানার ওসি আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, “আসামি কামাল মাতুব্বরের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। মামলায় হাজিরা দিতে তিনি বৃহস্পতিবার আদালতে যান। পরে লোকজন তাকে ধরে এনে পুলিশে দেয়। তিনি সব মামলায় জামিনে আছেন। আদালতের রি-কল দেখে তাকে পরিবারের জিম্মায় বৃহস্পতিবার রাতেই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তাৎক্ষণিক পরিস্থিতির কারণে তিনি আমাদের জিম্মায় ছিলেন।”
মারধরের শিকার কামাল মাতুব্বর ডাসার উপজেলার পূর্ব কমলাপুর গ্রামের মৃত কাদের মাতুব্বরের ছেলে। তার বিরুদ্ধে মানবপাচার ও প্রতিরোধ দমন আইনে একাধিক মামলায় রয়েছে।
ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, কামাল মাতুব্বরকে কিছু লোক ঘিরে ধরে মারধর করছেন। পরে তারা তাকে মাদারীপুর সদর থানায় সোপর্দ করেন।
অভিযোগ রয়েছে, মাদারীপুরের শতাধিক যুবককে উন্নত জীবন ও ভাগ্য বদলের স্বপ্ন দেখান কামাল মাতুব্বর। তাদের লিবিয়া দিয়ে অবৈধপথে ইউরোপের দেশ ইতালি পৌঁছে দেওয়ার কথা বলেন। লিবিয়ায় নেওয়ার পর তাদের আটকে রেখে দফায় দফায় নির্যাতন করেন। পরিবারের কাছ থেকে হাতিয়ে নেন লাখ লাখ টাকা।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, রাজীব মাতুব্বর, নিজাম, তাইফুল, তাহের, মুজাম হাওলাদর, শাহাবুদ্দিন ও তারেক মাতুব্বরকে ইতালি নেওয়ার স্বপ্ন দেখান কামাল মাতুব্বর। তিনি তাদের পরিবারের কাছ থেকে প্রথমে ১৩-১৪ লাখ টাকা নেন। এরপরে এই যুবকদের তিনি লিবিয়ায় নিয়ে যান। কথা ছিল, সেখান থেকে তাদের ইতালি নিয়ে যাওয়া হবে। তবে, লিবিয়ায় পৌঁছানোর পর এই যুবকদের মাফিয়াদের হাতে তাদের তুলে দেন মানবপাচারকারী কামাল মাতুব্বর। লিবিয়ার মাফিয়ারা বন্দিশালায় আটকে রেখে যুবকদের ওপর চালানো হয় নির্যাতন। মুক্তিপণের টাকা আদায় করতে পরিবারকে নির্যাতনের ভিডিও দেখিয়ে ২০-৪০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় মাফিয়া ও মানবপাচারকারী চক্রের সদস্যরা।
ভুক্তভোগীরা খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, বৃহস্পতিবার কামাল মাতুব্বর মাদারীপুর আদালতে হাজিরা দিতে আসবেন। কামাল মাতুব্বর হাজিরা দিতে গেলে ভুক্তভোগীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে তাকে ঘিরে ধরেন। একপর্যায়ে তাকে গণপিটুনি দিয়ে আটক করে মাদারীপুর সদর থানায় সোপর্দ করেন।
ভুক্তভোগী রাজীব মাতুব্বর বলেন, “কামাল মাতুব্বর লিবিয়া পাঠিয়ে আমাকে একটা অন্ধকার ঘরে এক মাস আটকে রেখে নির্যাতন করে। আমার পরিবার থেকে ২০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। মুক্তিপণের টাকা দিয়ে কোনোমতে বেঁচে ফিরে এসেছি। আমি মানবপাচারকারী কামাল মাতুব্বরের শাস্তি চাই।”