ARTICLE AD
468x60 AD AFTER 4 POSTS
চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে কৃষকদের আলোচনা ছাড়া তিন ফসলি জমি কেটে খাল খনন করছে কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি)। উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের হাজিশ্বরাই ও জোরারগঞ্জ ইউনিয়নের গোপীনাথপুর এলাকায় ওই খাল খনন করা হচ্ছে। ব্যক্তি মালিকানা জায়গায় এভাবে কৃষি জমি কেটে খাল খননের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছে স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা। ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দেন মিরসরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহফুজা জেরিন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) স্মলহোল্ডার এগ্রিকালচারাল কম্পিটিটিভনেস প্রজেক্ট (এসএসিপি) এর আওতায় উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের হাজিশ্বরাই ও জোরারগঞ্জ ইউনিয়নের গোপীনাথপুর এলাকায় ১.৫ কিলোমিটার বারোমাসি খাল খননের কাজ শুরু করে। কৃষকদের অভিযোগ যে জায়গায় খাল খনন করা হচ্ছে সেগুলো ব্যক্তি মালিকানাধীন তিন ফসলি কৃষি জমি। কিন্তু কৃষকদের সঙ্গে কোনো আলোচনা ছাড়া এবং কোনো ধরনের ক্ষতিপূরণ ছাড়া এক সপ্তাহ ধরে ৩৩ ফুট প্রসস্থ ও ১০ ফুট গভীর করে স্কেভেটর দিয়ে মাটি কেটে খনন কাজ করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সরদার এন্টারপ্রাইজ। কৃষকরা গত কয়েকদিন ধরে খাল কাটার বিরোধিতার পাশাপাশি বিক্ষোভ করে আসছিলেন।
কৃষকদের অভিযোগ পেয়ে সরেজমিনে এলাকা পরিদর্শন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহফুজা জেরিন, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাইফুল ইসলাম, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ চন্দ্র রায়, বিএডিসি চট্টগ্রাম জোনের সহকারী প্রকৌশলী (নির্মাণ) তমাল দাশ, বিএডিসি মিরসরাই (ক্ষুদ্রসেচ) উপ-সহকারী প্রকৌশলী জাহিদ হাসান, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম-আহবায়ক জসিম উদ্দিন প্রমুখ।
গোপীনাথপুর গ্রামের কৃষক নিজাম উদ্দিন, শ্যামল দত্ত ও প্রিয়তোষ দাশ বলেন, বিএডিসি কৃষকদের কোন ক্ষতিপূরণ না দিয়ে দেড় কিলোমিটার খাল খননের কাজ শুরু করেছে। আগে আমাদের জমিতে ছোট একটি ড্রেন ছিল। খননের ফলে এখন তা বড় খালে রূপান্তর হয়েছে। আমাদের জমির ওপর খাল কাটায় প্রায় দশ শতক জমি নষ্ট হয়ে গেছে। খাল কাটার পর পাড়ে রাখা মাটি একটি চক্র রাতের আঁধারে প্রতিরাতে নিয়ে বিক্রি করে দিচ্ছে। ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহফুজা জেরিন কৃষকদের আশ্বাস দিয়ে গেছেন। ক্ষতিপূরণ না ফেলে আমরা বৃহত্তর পরিসরে আন্দোলনে যাবো।
বিএডিসি চট্টগ্রাম জোনের সহকারী প্রকৌশলী (নির্মাণ) তমাল দাশ বলেন, উপজেলার জোরারগঞ্জ ইউনিয়নের গোপিনাথপুর গ্রামে বারোমাসী ছড়া খাল ১.৫ কিলোমিটার খননের জন্য সরদার এন্টারপ্রাইজ কার্যাদেশ পায়। ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের পাওয়া কাজটি আগামী ৩০ জুনের মধ্যে শেষ করার কথা রয়েছে। কৃষকদের আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রকল্পটি নেওয়া হয়েছিল। ৩৩ ফুট প্রসস্থ ও ১০ ফুট গভীর করে প্রায় ৬০০ মিটার খাল ইতোমধ্যে খনন করা হয়েছে। খাল খনন শুরু হওয়ার পর জমির মালিকরা ক্ষতিপূরণের দাবিতে খাল খননের বিরোধিতা করছেন। কৃষকদের ক্ষতিপূরণের দাবির বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।
মিরসরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহফুজা জেরিন বলেন, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) কর্তৃক উপজেলার গোপিনাথপুর ও হাজিশ্বরাই গ্রামে কৃষি জমির ওপর দিয়ে ক্ষতিপূরণ ছাড়া খাল খননের বিষয়ে অভিযোগ করেছিল। তাদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিএডিসি প্রকৌশলীদের নিয়ে আমি সরেজমিন পরিদর্শন করেছি। কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য তাদের আবেদনসহ আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট সুপারিশ করবো।
এম মাঈন উদ্দিন/আরএইচ/এএসএম