সুনামগঞ্জে খেলার মাঠে মেলার আয়োজন, স্থানীয়দের ক্ষোভ

2 days ago 3
ARTICLE AD
468x60 AD AFTER 4 POSTS

সুনামগঞ্জ শহরের ষোলঘর ক্রীড়া সংস্থার স্টেডিয়াম মাঠে মাসব্যাপী বাণিজ্যমেলার আয়োজন চলছে। এতে স্থানীয় শিশু-কিশোরদের খেলাধুলা ও বিনোদনের ব্যাঘত ঘটছে।

স্থানীয় খেলোয়াড়দের অভিযোগ, জেলা ক্রীড়া সংস্থা ও প্রশাসনের সহযোগিতায় ষোলঘর স্টেডিয়াম মাঠে এখন পর্যন্ত বেশ কয়েকবার মেলা হয়েছে। মেলার পর যথাসময়ের মধ্যে মাঠ খেলার জন্য প্রস্তুত করা হয়নি। খেলার উপযোগী হতে কয়েক মাস সময় লেগে গেছে।

চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারি থেকে এক মাসব্যাপী এ মেলা শুরুর কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত উদ্বোধন হয়নি। এতে প্রায় এক মাস ধরে মেলার নামে খেলার মাঠ দখলে রয়েছে।

গত ২০ ডিসেম্বর রাতের আঁধারে ‘ষোলঘর খেলার মাঠে’ মাসব্যাপী বাণিজ্যমেলার জন্য খুঁটি গাড়া হয়। এর প্রতিবাদে পরের দিন স্থানীয়রা মানববন্ধন করে। তারা মেলা অন্য স্থানে করার দাবি জানান। ২২ ডিসেম্বর মাঠ খেলাধুলার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া ও মেলার অনুমতি না দিতে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক বরাবরে স্মারকলিপির দেওয়া হয়। কিন্তু পরের দিন সুনামগঞ্জ শিল্প-পণ্য বাণিজ্যমেলার আনুষ্ঠানিকভাবে ভিত্তিপ্রস্তরের উদ্বোধন করা হয়।

ষোলঘর মাঠের খেলোয়াড় মনোয়ার রফি আফিন্দী বলেন, সুস্থ বিনোদন চর্চার জন্য, শরীর চর্চার জন্য লোকজন এ মাঠে আসে। এ মাঠকে ঘিরে প্রতিটি বছর শীতকাল এলে যে অপতৎপরতা চলে সেটা দুঃখজনক। মেলার পর দেখা যাবে মাঠ খেলার জন্য প্রস্তুত করতে কয়েক মাস লেগে যাচ্ছে। এরপরও মাঠের মধ্যে পেরেক, ভাঙ্গা কাঁচের টুকরো, বালি, পাথর, রড ইত্যাদি পড়ে থাকে। এতে খেলোয়াড়রা আহত হয়।

ষোলঘর এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ মুশারফ হোসেন বলেন, ষোলঘর খেলার মাঠের পাশে চারটি মসজিদ আছে। মসজিদের পাশে ৩ থেকে ৪টা মাদ্রাসা রয়েছে। এটি আবাসিক এলাকা। এটি এখানে একমাত্র খেলার মাঠ। যেখানে বাচ্চারা খেলাধুলা করে। এ মাঠে খেলা বন্ধ করে মেলা অনুষ্ঠান তিনি মানতে পারেন না।

মোহাম্মদ আব্দুস সাত্তার, মো. মামুন বলেন, ‘‘আমরা এ বছর ষোলঘর, মোহাম্মদপুর, নবীনগর, বিলপাড়সহ সবাই মিলে আন্দোলন শুরু করেছি— ‘খেলার মাঠে মেলা নয়’। কিন্তু এত মানুষের দাবি তোয়াক্কা না করে বর্তমান জেলা প্রশাসক ও প্রশাসনে যারা আছেন, তারা মেলার অনুমোদন দিয়েছেন। যার কারণে আমরা ক্ষুব্ধ। আমরা আশা করব এখনো যে অবস্থায় আছে, সেই অবস্থা থেকে ফিরে এসে মেলা বন্ধ করুন। খেলার মাঠে খেলাই হোক। আমাদের আবাসিক এলাকার যে পরিবেশ, সেটি ঠিক রাখুন।’’  

তিনি আরো বলেন, ‘‘শহরের পশ্চিম দিকে অনেক খালি জায়গা পরে আছে, সেখানে মেলা করা যেতে পারে। কারো কোনো সমস্যা হবে না।’’ 

সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া বলেন, ‘‘দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য বাঁচিয়ে রাখা লাগবে। দেশের অর্থনীতি শক্তিশালী করা লাগবে। মানুষের আয়ের একটা পথ করে দেওয়ার জন্য এই মেলা করা হয়েছে।’’ তিনি জানান, শব্দদূষণ ঘটলে মেলা বন্ধ করে দেওয়া হবে।  

সিলেট বিভাগীয় কমিশনার খান মো. রেজা-উন-নবী বলেন, যদি কোনো খেলার মাঠে বা কিশোর-যুবকদের বিনোদনের স্থানে মেলার অনুমতি দেওয়া হয়, তাহলে মেলা শেষে মাঠের পূর্ব অবস্থায় ফিরিয়ে দিতে হবে। এটার তাদের দায়িত্ব এবং সেটাই করতে হবে।
 

Read Entire Article