স্কুল ব্যাংকিংয়ে আমানত কমছে

15 hours ago 1
ARTICLE AD
468x60 AD AFTER 4 POSTS

প্রায় দুই বছর ধরে দেশে উচ্চ মূল্যস্ফীতি। এর জাঁতাকলে পিষ্ট সাধারণ মানুষ। উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে দেশের পরিবারগুলোর আয় কমে গেছে। এতে সঞ্চয় ভেঙে খাচ্ছেন তারা। পাশাপাশি দেশে শিক্ষাব্যয়ও বাড়ছে। যার প্রভাব পড়েছে স্কুল শিক্ষার্থীদের সঞ্চয়ে।

২০২৪-২৫ অর্থবছরের শুরু থেকেই ধারাবাহিকভাবে কমছে শিক্ষার্থীদের সঞ্চয়। এক মাসের ব্যবধানে স্কুল ব্যাংকিংয়ে সঞ্চয় কমেছে প্রায় ৪৬ কোটি টাকা। আর গত পাঁচ মাসে সঞ্চয় কমেছে প্রায় ২৮৫ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, সদ্যবিদায়ী ২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে স্কুল ব্যাংকিংয়ে শিক্ষার্থীদের আমানতের পরিমাণ দাঁড়ায় ২ হাজার ৪১ কোটি টাকা, যা গত অক্টোবরে ছিল ২ হাজার ৮৭ কোটি টাকা। সে হিসাবে এক মাসের ব্যবধানে আমানত কমেছে ৪৬ কোটি টাকা। ২০২৩ সালের নভেম্বর মাস শেষে আমানতের স্থিতি ছিল ২ হাজার ১৯৯ কোটি টাকা। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে আমানতের স্থিতি কমেছে কমেছে প্রায় ১৫৮ কোটি টাকা।

প্রতিবেদন মতে, গত জুন মাসে আমানত ছিল ২ হাজার ৩২৫ কোটি টাকা। সে হিসাবে পাঁচ মাসে শিক্ষার্থীদের সঞ্চয় কমেছে ২৮৪ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে শিক্ষার্থীদের ব্যাংক আমানতের পরিমাণ ছিল ২ হাজার ২০০ কোটি টাকা, যা আগস্টে কমে দাঁড়ায় ২ হাজার ১৭২ কোটি, সেপ্টেম্বরে ২ হাজার ১৩৫ কোটি টাকা। অর্থাৎ চলতি অর্থবছরের শুরু থেকে কমছেই স্কুল শিক্ষার্থীদের সঞ্চয়।

গত নভেম্বর মাস শেষে ব্যাংকে শিক্ষার্থীদের হিসাব সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৩ লাখ ৪২ হাজার ২৫৯টি। আর তার আগের মাস অক্টোবরে হিসাব সংখ্যা ছিল ৪৩ লাখ ৬৪ হাজার ২৫৯টি। সে হিসাবে এক মাসে হিসাব সংখ্যা কমেছে প্রায় ২২ হাজার। এর মধ্যে সর্বশেষ ছেলেদের হিসাব সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২২ লাখ ৫ হাজার ৯৮৪টি আর মেয়েদের হিসাব সংখ্যা ২১ লাখ ৩৬ হাজার ২৭৫টি। নভেম্বরে ছেলেদের হিসাব সংখ্যা কমলেও মেয়েদের হিসাব সংখ্যা বেড়েছে।

খাত সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, স্কুল ব্যাংকিংয়ে শিক্ষার্থীদের আমানত কমে যাওয়ার অর্থ হলো নতুন করে যেসব হিসাব খোলা হয়েছে কিংবা আগের হিসাবে যে পরিমাণ টাকা জমা হয়েছে তার চেয়ে বেশি অঙ্কের টাকা উত্তোলন হচ্ছে। আর্থিক চাপের কারণে শিক্ষার্থীরাও তাদের সঞ্চয় ভেঙে ফেলছেন।

ব্যাংকাররা বলছেন, বছরের শুরুতে কিংবা শেষদিকে অনেকের টাকা উত্তোলনের চাপ থাকে। অনেকে বিভিন্ন পর্যটন এলাকায় বেড়াতে যান। আবার অনেকে তাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বকেয়া পরিশোধ করতে গিয়ে আমানত ভাঙতে বাধ্য হন। তবে বছরের পুরো সময়জুড়ে শিক্ষার্থীদের আমানত কমে যাওয়ার অর্থ হচ্ছে নিয়মিত খরচ মেটাতে হিমশিম খাচ্ছেন তারা। এ অবস্থার মধ্যেই আমানত উত্তোলন করতে হচ্ছে।

শিক্ষার্থীদের আর্থিক ব্যবস্থাপনার বিষয়ে শিক্ষিত করে তোলার উদ্যোগের অংশ হিসেবে ২০১০ সালে কেন্দ্রীয় ব্যাংক স্কুল ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু করে। এ কার্যক্রমের লক্ষ্য শিক্ষার্থীদের মধ্যে টাকা জমানোর অভ্যাস তৈরি এবং আর্থিক ব্যবস্থাপনায় তাদের আরও উপযোগী করে তোলা। এখন পর্যন্ত ৫৯টি ব্যাংক স্কুল ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু করেছে। যাদের বয়স ১১ থেকে ১৭ বছর এমন শিক্ষার্থীরা এ ধরনের অ্যাকাউন্ট খুলতে পারেন। এই অ্যাকাউন্টে সব ধরনের ফি ও চার্জের ক্ষেত্রে রেয়াত পাওয়া, বিনামূল্যে ইন্টারনেট ব্যাংকিং সুবিধা পাওয়া, ন্যূনতম স্থিতির বাধ্যবাধকতার ক্ষেত্রে ছাড় ও স্বল্প খরচে ডেবিট কার্ড পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। মাত্র ১০০ টাকা আমানত রেখেই এ ধরনের অ্যাকাউন্ট খুলতে পারেন তারা।

ইএআর/ইএ/এএসএম

Read Entire Article