আওয়ামী লীগ মিছিল বের করে আমাদের দোষে: টুকু

1 day ago 1
ARTICLE AD
468x60 AD AFTER 4 POSTS

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেছেন, আওয়ামী লীগ হঠাৎ করে দুই-একটা মিছিল বের করে—এটা আমাদের (রাজনীতিবিদ) দোষে। কেননা, তাদের ভরণ পোষণ আমাদের (রাজনীতিবিদরা) লোকজনই করতেছে। সেজন্য তারা মিছিল করার সাহসটা পায়।

শনিবার (২২ মার্চ) রাজধানীর আসাদগেটে ফ্যামিলি ওয়ার্ল্ডের মিলনায়তনে ঢাকায় সিরাজগঞ্জ সাংবাদিক সমিতির বার্ষিক সাধারণ সভা ও ইফতার মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন।

‘আওয়ামী লীগের যখন পতন হয় তখন তারা হওয়া হয়ে যায়’, মন্তব্য করে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, দেখেন, ৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট পর্যন্ত গাছের পাতা পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ছিল। যেই সকাল বেলা খবর হলো শেখ মুজিবুর রহমান সাহেব নিহত হয়েছেন, আওয়ামী লীগ কোথায় হাওয়া হয়ে গেল, কেউ খুঁজে পেলো না। আবার যদি এরও পেছনে যাই আমি, ৭০-এর নির্বাচনে জনগণের হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসা দিয়ে তাদেরকে নির্বাচিত করলো। তারপরে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য আলোচনা-সমালোচনা অনেক কিছু করেছে। ৭ মার্চের ভাষণ যদি শোনেন, গায়ের লোম দাঁড়িয়ে যাবে। কিন্তু ওই ভাষণে সমঝোতার কথা ছিল।

তিনি বলেন, ‘ভাষণের শেষে গিয়ে বললেন— এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। জয় বাংলা জয় পাকিস্তান’। তো এইটা তো স্বাধীনতার ঘোষণা হলো না। তখন বলছিলেন— আসুন বসুন, আলোচনা করুন, পার্লামেন্টে আসুন, এটা কি স্বাধীনতার ঘোষণা? তারপরে ২৫ মার্চ নিরস্ত্র বাঙালির ওপরে পাকিস্তানিরা যখন হামলা করলো, তখনো আওয়ামী লীগ নাই। নাইতো নাই।’

‘এই সাত কোটি মানুষ কী করবে? কোথায় যাবে? কার কাছে যাবে? কার কাছে আশ্রয় নেবে? এমপি-নেতা সব ভেগে গিয়েছিল। কেউ ছিল না। এই হলো আওয়ামী লীগ। তাদের ভেগে যাওয়ার অভ্যাস সেই ৭১ সাল থেকে।’

বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘আওয়ামী লীগ জন্মগতভাবে ফ্যাসিস্ট। এ কথা এজন্য বললাম যে, মওলানা ভাসানী এই দলটা তৈরি করেছিলেন। কিন্তু তিনি দলে থাকতে পারেননি। উনি যেদিন ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি করলেন, সেদিনও এই আওয়ামী লীগ ওনাকে হেনস্থা করেছিল। তার মানে ওরা ছাড়া আর কেউ মানুষ না। এটাই হচ্ছে আওয়ামী লীগ। এমন চিন্তা ভাবনায় কি হয়? যখনই এদের (আওয়ামী লীগের) পতন হয়, তখন এরা হাওয়া হয়ে যায়।’

সম্প্রতি রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘গতকালকে (শুক্রবার) সারা ঢাকা শহরে একটা রিউমার ছড়িয়েছিল। তার মানে দেশে স্টাবিলিটি নাই। এ সরকার ভালো করেছে। এই যে রোজাটা গেলো, অ্যাটলিস্ট মার্কেট দাম নিয়ে কেউ কথা বলতে পারে নাই। আলু- পেঁয়াজের দাম তো কমই আছে। পেঁয়াজের দামে প্রতি রোজাতেই আগুন লেগেছে, এবার লাগে নাই। কিন্তু এই অর্জনটা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি (অবনতি) দিয়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের মনে রাখতে হবে, ডক্টর ইউনূস সাহেব আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন একজন সম্মানিত ব্যক্তি। তাকে অসম্মান করাটা ঠিক হবে না। তাকে সুযোগ করে দেওয়া হোক যে, অতি দ্রুত নির্বাচন দিয়ে উনি চলে যান। এখন কেউ যদি বলে, হাসিনার বিচার যতদিন পর্যন্ত না হবে, নির্বাচন ততদিন হবে না! এখন হাসিনার বিচার কি আমরা চাই না? সে কি আমাদের নির্যাতন করেনি?’

ইকবাল হাসান বলেন, ‘হাসিনার বিচার অবশ্যই হতে হবে, যে সরকারি আসুক না কেন। এখন তার বিচার যদি নির্বাচনের সঙ্গে ট্যাগ করা হয়... তার বিচার হতে সাত বছর লাগবে। তাহলে কি আমরা এই সাত বছর বসে বসে তামাক খাবো? বললেই তো হবে না। অপ্রাপ্তবয়স্কদের মতো কথা বললে তো হবে না। সব মিলিয়ে আমাদের জুলাই আন্দোলনের যে বিজয়, এটা যেন উহুদের যুদ্ধের মতো না হয়। এটা খেয়াল রাখতে হবে।’

টুকু তার এলাকা সিরাজগঞ্জের উন্নয়ন নিয়ে বলেন, ‘আমি সিরাজগঞ্জবাসীর উন্নয়নে দলীয়করণ বিবেচনা করিনি। দল দেখে মুখ দেখে কারও উপকার করিনি। আওয়ামী লীগের বিন্দুমাত্র মায়া মমতা নেই। আমাদের উন্নয়নকে অস্বীকার করে। আওয়ামী লীগের চরিত্র সবাই জানে।’

ইফতার মাহফিলে আরও উপস্থিত ছিলেন, ঢাকাস্থ সিরাজগঞ্জ সাংবাদিক সমিতির নবগঠিত কমিটির সভাপতি কাওসার আজম, সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম মল্লিক, সংগঠনের সাবেক সভাপতি সেলিম খান, সদস্য সিনিয়র সাংবাদিক শহীদুল ইসলাম ও রায়হান মোর্শেদসহ ঢাকায় কর্মরত সিরাজগঞ্জ জেলার প্রায় দেড়শ সাংবাদিক।

কেএইচ/এমকেআর

Read Entire Article