ARTICLE AD
468x60 AD AFTER 4 POSTS
মালয়েশিয়ায় প্রায় ১৫ লাখ প্রবাসী বাংলাদেশি বসবাস করেন। তাদের মধ্যে অনেকেই ছুটিতে নাড়ির টানে দেশে ফিরতে চান। কিন্তু এই স্বপ্নের পথে প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে উড়োজাহাজের টিকিটের উচ্চমূল্য। কয়েক বছর ধরে ঢাকা-কুয়ালালামপুর রুটে উড়োজাহাজের ভাড়া ক্রমাগত বেড়েই চলেছে।
অনেক প্রবাসী দেশে ফিরতে চাইলেও টিকিটের চড়া মূল্যের কারণে তা সম্ভব হয়ে উঠছে না। তাদের অভিযোগ, কর্মী নিয়োগ থেকে শুরু করে প্রায় সব ক্ষেত্রেই সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য রয়েছে। তারা মনে করেন, সিন্ডিকেট প্রথা বন্ধ না হলে প্রবাসীদের জন্য কোনো ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে না।
উড়োজাহাজের টিকিট সিন্ডিকেট নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রবাসীরা। তারা জানান, ছাত্র-জনতার জুলাই বিপ্লবের সময় শেখ হাসিনা সরকার পতনের আন্দোলনে তারা দেশে রেমিট্যান্স পাঠানো বন্ধ করেছিলেন। টিকিট সিন্ডিকেট বন্ধ না হলে প্রয়োজনে আবারও রেমিট্যান্স শাটডাউনের আন্দোলনে যাবেন তারা।
কুয়ালালামপুরের বিভিন্ন ট্রাভেল এজেন্সি ঘুরে জানা গেছে, অনেকেই উড়োজাহাজের টিকিটের উচ্চমূল্য শুনে হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন। প্রবাসীদের শুধু উড়োজাহাজের ভাড়ার চিন্তাই করতে হয় না, বরং দেশে ফেরার জন্য অন্যান্য খরচও মাথায় রাখতে হয়। এর মধ্যে রয়েছে পারিবারিক খরচ ও বেড়ানোর ব্যয়। উড়োজাহাজের ভাড়া আকাশছোঁয়া হলে একজন প্রবাসীর জন্য দেশে ফেরা কঠিন হয়ে পড়ে। তাই অনেকেই বাধ্য হয়ে পরিবারকে জানিয়ে দিচ্ছেন, এবার আর বাড়ি ফেরা সম্ভব নয়।
বর্তমানে ঢাকা-কুয়ালালামপুর রুটে পাঁচটি এয়ারলাইন্স সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনা করছে। সেগুলো হলো- বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, ইউএস-বাংলা, মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্স, এয়ার এশিয়া ও বাতিক (মালিন্দো) এয়ার। সপ্তাহে অর্ধশতাধিক ফ্লাইট পরিচালনা করে এসব এয়ারলাইন্স। এছাড়া, থাই এয়ারওয়েজ, শ্রীলঙ্কান এয়ারলাইন্স, সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্স, হিমালয়া এয়ারলাইন্স, ইন্ডিগো এয়ারলাইন্স ও ক্যাথে প্যাসিফিক বিভিন্ন জায়গায় বিরতি দিয়ে এই রুটে যাত্রী পরিবহন করে।
সম্প্রতি এই রুটে টিকিটের চাহিদা ব্যাপকভাবে বেড়েছে। তবে অভিযোগ রয়েছে, টিকিটিং কোম্পানিগুলোর সিন্ডিকেটভিত্তিক গ্রুপ টিকিট ব্যবসা ও এয়ারলাইন্সগুলোর নানান অজুহাতে টিকিটের দাম বাড়ানো হয়েছে।
মাত্র তিন মাস আগেও এই রুটের উড়োজাহাজ ভাড়া সবার নাগালের মধ্যেই ছিল। গত বছরের জুন-জুলাইয়ে ট্র্যাভেল এজেন্সিগুলো ২০-২৫ হাজার টাকায় টিকিট বিক্রি করেছে। বর্তমানে রিটার্ন (আসা যাওয়া) টিকিট ২ হাজার থেকে ৩ হাজার রিঙ্গিত ও ওয়ানওয়ে টিকিট এক হাজার ৫০০ থেকে এক হাজার ৮০০ রিঙ্গিতে কিনতে হচ্ছে।
দাম বৃদ্ধির কারণ জানতে চাইলে এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ জানায়, টিকিটের দাম বাড়লে তাদের কিছু করার থাকে না।
কয়েকটি ট্রাভেল এজেন্সি জানিয়েছে, তাদের ব্যবসায়িক স্বার্থ এয়ারলাইন্সের সঙ্গে জড়িত এবং তারা নির্দিষ্ট টার্গেট নিয়ে কাজ করেন। সাধারণ গ্রাহকরা অনলাইনের চেয়ে এজেন্সির মাধ্যমেই টিকিট কেনেন বেশি। ফলে এয়ারলাইন্সগুলো বি-টু-বি এজেন্সিগুলোকে বিশেষ সুবিধা দিয়ে থাকে।
এ বিষয়ে এক এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, উড়োজাহাজ ভাড়া বৃদ্ধির মূল কারণ চাহিদা ও সরবরাহের ভারসাম্যহীনতা। চাহিদা বেশি থাকলে ও সরবরাহ কম থাকলে টিকিটের দাম বাড়ে। অন্যদিকে, যাত্রীদের চাপ বাড়ায় ভাড়াও বেড়েছে বলে স্বীকার করেছেন এয়ারলাইন্স কর্মকর্তারা। একই সঙ্গে তারা ডলার ও জেট ফুয়েলের মূল্যবৃদ্ধিকেও দায়ী করছেন।
কেএসআর/জিকেএস