ARTICLE AD
468x60 AD AFTER 4 POSTS
কলকাতা বইমেলার বয়স ৪৮ বছর। প্রতি বছর কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলায় বাংলাদেশের সরব উপস্থিতি থাকে। গত ২৯ বছরে এই প্রথম ভারতের প্রতিবেশী দেশটি অনুপস্থিত কলকাতা বইমেলায়।
সল্টলেকে ৪৮তম এই মেলায় সারা বিশ্বের মানুষের উপস্থিতি থাকলেও নেই শুধু বাংলাদেশে প্যাভিলিয়ন। দেখা মিলছে না বাংলাদেশের প্রকাশকদেরও। ২৯ বছরে এই প্রথম বাংলাদেশের বইপ্রমীদের ভিড় নেই।
এই বিষয়ে ভূমি বাংলা ব্যান্ডের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী সুরজিৎ চট্টোপাধ্যায় বলেন, বাংলাদেশ আমাদের প্রতিবেশী বন্ধু রাষ্ট্র। বাংলাদেশজুড়ে আমাদের বন্ধু-বান্ধব রয়েছে। তারা আমাদের ফোন করে এবং আমিও তাদের ফোন করে খোঁজ রাখি। সম্প্রতি বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া ঘটনার পর আমি ফোন করে খোঁজ নিয়েছি তারা ঠিক আছে কি না।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের আইয়ুব বাচ্চু, জেমসের ফ্যান আমাদের এখানে প্রচুর। একইভাবে তারা আমারও ফ্যান। আমি যখন ওই দেশে গিয়ে দেখি আমাকে অনুরোধ করছে গান করার জন্য, তখন ভালো লাগে। এই বই-পত্র, সাহিত্যের কোনো সীমা বা কাটাতার আমি দেখিনা। অবশ্যই বইমেলায় বাংলাদেশের থাকা উচিত।
ওপার থেকে মেলা দেখতে আসতেন সরকারি প্রতিনিধি, কবি-সাহিত্যিক, সংস্কৃতিপ্রেমী। কিন্তু চলতি বছর কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলাতে বাংলাদেশি সাহিত্যিকদের বইও সেভাবে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
জানা গেছে, বড় পাবলিশার্সের নিজস্ব পাবলিকেশনে বাংলাদেশি লেখকদের বইগুলো পাওয়া যাচ্ছে। তবে সেই সব বই নিতে গেলে আগে থেকে তাদেরকে জানাতে হচ্ছে।
কলকাতা বইমেলায় আসা বর্ধমানের বাসিন্দা মৌলি রায় বলেন, বাংলা সাহিত্যের ক্ষতি অনেকটাই। অনেক পাঠক যেমন কমে যাচ্ছে তেমন অনেকেই তার প্রিয় লেখকদের বই পড়তে পারছে না। যেটা ভীষণ বড় একটা গ্যাপ তৈরি হয়ে যাচ্ছে। দুটো মনের মধ্যে একটা গ্যাপ তৈরি হয়ে যাচ্ছে।
মৌলি আরও বলেন, বাংলাদেশে আমার অনেক বন্ধু-বান্ধব আছে। তারা ইচ্ছে প্রকাশ করেছে আসার জন্য। কিন্তু তারা আসতে পারছে না।
বাংলাদেশের প্যাভিলিয়ন না থাকায় কতটা ক্ষতি হচ্ছে। সেই বিষয়ে কলকাতার বাসিন্দা সুখময় মন্ডল বলেন, বাংলাদেশের স্টল নেই এটা একটা সাহিত্যের ক্ষতি। দুই বাংলার সাহিত্যের বহুদিনের একটা ঐক্যের সম্পর্ক ছিল। সাহিত্যের দিকে একটা ক্ষতির দিক। যারা বাংলাদেশের সাহিত্যিকদের বই পড়তে পছন্দ করেন অবশ্যই তাদের ক্ষেত্রে একটা মিস করার দিক আছে।
কলকাতা বইমেলায় বই কিনতে আসা দমদমের বাসিন্দা সুবিমল মুখার্জী জানিয়েছেন, আমাদের একটু অসুবিধা হচ্ছে। কারণ বাংলাদেশ প্যাভেলিয়ান থেকে দু-একটা বই সংগ্রহ করতাম এবার সেটা পাচ্ছি না।
সুবিমল মুখার্জী আরও বলেন, তবুও খুব একটা অভাব বোধ করছি না। কারণ এখন তো অর্ডার করলেই বাড়িতে বসেই সারা পৃথিবীর বই পাওয়া যায়। তবে একটু কথাবার্তা বলতে পারতাম। তারা বাংলা ভাষায় কথা বলতো। কারণ আমার মূল (অরিজিন) ওখানকার। এতে একটু আনন্দ পেতাম বা বইটা একটু উল্টে-পাল্টে দেখতে পেতাম। সেটার উপায় নেই কারণ অনলাইনে তো আর বই উল্টে-পাল্টে দেখা যায় না।
১৯৭৬ সাল থেকে এই বইমেলা শুরু হলেও ১৯৯৬ সাল থেকে এই বইমেলায় বিশেষ প্যামিলিয়ন হিসেবে থাকতো প্রতিবেশী বাংলাদেশ। কোভিড ও মাঠ সংক্রান্ত জটিলতার কারণে কয়েকবার বইমেলার আয়োজিত হয়নি। তবে প্রতিবছরই বাংলাদেশ তাদের বিশাল বইয়ের সম্ভার নিয়ে পৃথকভাবে প্যাভিলিয়ন করে বাংলাদেশ কবি-সাহিত্যিকদের বই নিয়ে আলোকিত করতো। কিন্তু এবারের চিত্রটা ভিন্ন।
ডিডি/এমএসএম