প্রবাসীরা দেশে ফিরলে যে নিয়মে রমজান পূর্ণ করবেন

19 hours ago 7
ARTICLE AD
468x60 AD AFTER 4 POSTS

পুরো রমজান মাস রোজা রাখা মুসলমানদের ওপর ফরজ। কেউ যদি সফরে থাকে বা অসুস্থ তাকে, তাহলে সে চাইলে তখন রোজা না রেখে পরবর্তীতে কাজা করতে পারে। এ ছাড়া সুস্থ, প্রাপ্তবয়স্ক সবার ওপর রমজানের রোজা ফরজ।

আল্লাহ তাআলা বলেন, রমজান মাস, যাতে কোরআন নাজিল করা হয়েছে মানুষের জন্য হিদায়াতস্বরূপ এবং হিদায়াতের সুস্পষ্ট নিদর্শনাবলী ও সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারীরূপে। সুতরাং তোমাদের মধ্যে যে মাসটিতে উপস্থিত হবে, সে যেন তাতে রোজা রাখে। আর যে অসুস্থ হবে অথবা সফরে থাকবে সে অন্যান্য দিবসে সংখ্যা পূরণ করে নেবে। আল্লাহ তোমাদের জন্য যা সহজ তা চান, যা কষ্টদায়ক তা চান না যেন তোমরা মেয়াদ পূর্ণ করতে পার, আর তোমাদেরকে সৎপথে পরিচালিত করার কারণে তোমরা আল্লাহর মাহাত্ম্য ঘোষণা কর, আর যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পার। (সুরা বাকারা: ১৮৫)

হিজরি অন্যান্য মাসের মতোই রমজান মাস শুরু হয় নতুন চাঁদ দেখা যাওয়ার মাধ্যমে। কোনো অঞ্চলে যখন রমজানের নতুন চাঁদ দেখা যায়, তখন ওই অঞ্চলে অবস্থানকারী মুসলমানদের জন্য রোজা রাখা ফরজ হয়ে যায়। রমজান শেষ হওয়ার পর যখন শাওয়ালের নতুন চাঁদ দেখা যায়, তখন রমজান সমাপ্ত হয়, শাওয়াল মাস শুরু হয় এবং ইদ উদযাপন করতে হয়। নবিজি (সা.) চাঁদ দেখে রমজানের রোজা রাখা শুরু করতে এবং চাঁদ দেখে রমজানের রোজা রাখা শেষ করতে অর্থাৎ ইদ উদযাপন করতে বলেছেন।

আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, আপনারা চাঁদ দেখে রোজা রাখুন এবং চাঁদ দেখে রোজা শেষ করুন। যদি আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হয় এবং চাঁদ দেখা না যায় তবে ৩০ দিন পূর্ণ করুন। (সহিহ মুসলিম: ২৩৭৯)

আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) রমজানের আলোচনা করতে গিয়ে বলেছেন, আপনারা চাঁদ না দেখা পর্যন্ত রোজা শুরু করবেন না এবং চাঁদ না দেখা পর্যন্ত রোজা শেষ করবেন না। যদি আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হয়, তবে মাস ৩০ দিন পূর্ণ করুন। (সহিহ বুখারি: ১৯০৬, সহিহ মুসলিম: ১০৮০)

কেউ যদি এক দেশে চাঁদ দেখে রমজানের রোজা রাখা শুরু করেন, পরে অন্য কোনো দেশে চলে যান, তাহলে তিনি ওই দেশে চাঁদের হিসাব অনুযায়ী রমজান শেষ করবেন এবং ওই দেশের জনসাধারণের সঙ্গে ইদ পালন করবেন। অর্থাৎ কেউ যদি সৌদি আরবে রমজানের রোজা রাখা শুরু করেন এবং ঈদের আগে বাংলাদেশে ফেরেন, তাহলে তিনি ইদ পালন করবেন বাংলাদেশে শাওয়ালের চাঁদ দেখে, বাংলাদেশের মানুষের সাথে। আর কেউ যদি বাংলাদেশে রমজানের রোজা রাখা শুরু করে ঈদের আগে সৌদি আরবে চলে যান, তাহলে তিনি ইদ পালন করবেন সৌদি আরবে শাওয়ালের চাঁদ দেখে, সৌদি আরবের মানুষের সাথে।

এ রকম ক্ষেত্রে যদি কারো রোজা ৩০টির বেশি হয়ে যায়, তাহলে তিনি ওই বেশি রোজাগুলোও রাখবেন এবং ইদের সময় তিনি যে অঞ্চলে অবস্থান করবেন ওই অঞ্চলের মানুষের সাথে ইদ উদযাপন করবেন। যেমন সৌদি আরবে রমজান শুরু করে কেউ যদি বাংলাদেশে ফেরেন এবং বাংলাদেশে রমজান ত্রিশ দিন পূর্ণ হওয়ার পর শাওয়ালের চাঁদ ওঠে, তাহলে তার রোজা হয়তো ৩১টি রোজা হয়ে যাবে। তিনি ৩১টি রোজাই রাখবেন এবং বাংলাদেশের মানুষের সাথে ইদ উদযাপন করবেন।

আর যদি কারো রোজা ২৯টির কম হয়, ২৭/২৮টি রোজা রাখার পরই তিনি যে দেশে অবস্থান করছেন সেখানে ইদের চাঁদ উঠে যায়, তাহলে তিনি ওই দেশের মানুষের সাথে ইদ উদযাপন করবেন এবং পরবর্তীতে যে কোনো সময় দুটি রোজা রেখে ৩০টি রোজা পূর্ণ করবেন। আর যদি তার ২৯ রোজা পূর্ণ হওয়ার পর ওই দেশে ইদের চাঁদ দেখা যায়, তাহলে ২৯টি রোজা পূর্ণ করলেই চলবে। পরে আর কোনো রোজা রাখতে হবে না।

ওএফএফ/এএসএম

Read Entire Article