ARTICLE AD
468x60 AD AFTER 4 POSTS
ফুটপাত দখল করে ব্যবসা করলে ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ।
শনিবার (১৫ মার্চ) মিরপুর ৬০ফিট রাস্তার চলমান উন্নয়ন কাজ পরিদর্শনে গিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রশাসক বলেছেন, ডিএনসিসি এলাকার দুটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার একটি মিরপুর ৬০ফিট রাস্তা এবং আরেকটি মিরপুর ডিওএইচএস থেকে উত্তরা দিয়াবাড়ি রাস্তা। অব্যবস্থাপনার কারণে দীর্ঘদিন এই রাস্তার অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। বেশিরভাগ বড় বড় রাস্তায় চললে মনে হতো আমরা কোনো যুদ্ধবিধ্বস্ত রাস্তায় চলছি। একমাস আগেও এই দুটি রাস্তা যারা ব্যবহার করেছেন তারা অনেক কষ্ট করেছেন। এই দুই রাস্তায় চলাচল করে অনেকে অসুস্থ হয়েছেন, ব্যথা পেয়েছেন, অনেকের গাড়ি ভেঙেছে। আমি দায়িত্ব নেওয়ার পরে পুরো টিমকে নিয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছি রাস্তা দুটি এই মাসে রোজার মধ্যেই সংস্কার করে জনগণের জন্য উন্মুক্ত করে দিব। ইতোমধ্যে মিরপুর ডিওএইচএস থেকে উত্তরা দিয়াবাড়ি রাস্তাটির কাজ সম্পন্ন করে জনগণের জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছি। ঈদের আগেই ৬০ ফিটের রাস্তার কাজ শেষ করে জনগণের চলাচলের উপযোগী করে দেওয়া হবে।
ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ আরও বলেন, কাজ করতে যেয়ে আমরা কিছু সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি। ৬০ফিট রাস্তার ৮টি পয়েন্টে রাস্তার পাশে বাড়ির মালিক আমাদের ফুটপাত করতে দিচ্ছেন না। আমাদের কর্মীদের কনস্ট্রাকশন করতে দিচ্ছেন না। কোর্টের রায়ের ভয় দেখাচ্ছেন। কোনো ধরনের সহযোগিতা করছেন না। অবৈধভাবে দোকান দিয়ে রেখেছেন, ময়লা ফেলে রেখেছেন।
বাধা প্রদানকারীদের হুঁশিয়ারি দিয়ে ডিএনসিসি প্রশাসক বলেন, আমরা জনগণকে চলাচলের সুবিধা দিতে চাই। কিন্তু কেউ যদি সরকারি কাজে বেআইনিভাবে বাধা দেয়, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সরকারি কাজে, সিটি কর্পোরেশনের কাজে যারা বাধা দিচ্ছে আমরা তাদের বাড়ির প্রকৃতি যাচাই করছি। তারা অবৈধভাবে আবাসিক ভবন বাণিজ্যিক হিসেবে ব্যবহার করছে। গত বিশ বছর ধরে বাণিজ্যিক হারে ট্যাক্স দিয়েছে কিনা সেটা ধরব। তাদের প্ল্যান তলব করব, রিভিউ করে দেখব অনুমতি নেওয়া আছে কি না। প্ল্যানের বাইরে অবৈধ বিল্ডিং আমরা ভেঙে দিব। আমরা কোনো ধরনের ছাড় দিব না।
ডিএনসিসি জনগণের জন্য কাজ করছে, দখলদারদের জন্য নয়। এমন মন্তব্য করে ডিএনসিসি প্রশাসক বলেন, সরকারি রাস্তা দখল করে জনগণকে দুর্ভোগে ফেলা চলবে না। আগামী ২৩ তারিখে আমি সরেজমিনে ৬০ ফিটের ৮টি পয়েন্টে থাকব। আমি নিজে থেকে অমীমাংসিত বিষয়গুলো সমাধান করব।
অনেক গ্যারেজ মালিক ফুটপাত ও রাস্তা ব্যবহার করে মোটারসাইকেল ও গাড়ি ওয়াশ করছেন উল্লেখ করে প্রশাসক বলেন, আমরা অনেক জায়গায় দেখেছি ফুটপাত দখল। অনেক দোকানদার দোকানের সীমানার বাইরে গিয়ে ফুটপাত ব্যবহার করে ব্যবসা করছেন। তাদের সতর্ক করে দিচ্ছি, আপনারা ফুটপাত দখলমুক্ত করে দিন। ঈদের পরে আমরা অভিযান পরিচালনা করব, যেসব দোকানদার ফুটপাত দখল করে ব্যবসা করবেন তাদের ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করে দিব, দোকান সীলগালা করে দিব।
সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পহেলা বৈশাখের আগে ডিএনসিসি এলাকায় যতগুলো রাস্তা কাটা ও কাজ চলছে সেগুলো সম্পন্ন করা হবে। প্রয়োজনের তুলনায় আমাদের লোকবল অনেক কম। রাতের আঁধারেও আমাদের কর্মীরা কাজ করছেন, কারণ আমরা বসে থাকার জন্য আসিনি। বরং পরিবর্তন আনার জন্য এসেছি।
৬০ ফিট রাস্তার চলমান কাজ পরিদর্শন শেষে ডিএনসিসি প্রশাসক কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে শেওড়াপাড়া আনন্দবাজার বগার মার খাল পরিদর্শন করেন। এরপর তিনি রুপনগর দুয়ারীপাড়া খাল উদ্ধার এবং পরিচ্ছন্নতা ও খালের পাশে ওয়াকওয়ে নির্মাণের লক্ষ্যে পরিদর্শন করেন এবং উত্তর পল্লবী বাড়ি ও ফ্ল্যাট মালিক সমিতির সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় অংশ নেন।
পরিদর্শনে অন্যান্যের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সাঈদ মো. কামরুজ্জামান, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগে. জেনা. মো. মঈন উদ্দিন, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগে. জেনা. ইমরুল কায়েস চৌধুরী, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমোডর এ বি এম সামসুল আলম এবং অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
এমএমএ/এএমএ