ARTICLE AD
468x60 AD AFTER 4 POSTS
বাঙালি যখন মুক্তিযুদ্ধে জড়িয়েছে, কতিপয় বিদেশি নাগরিকও এ জাতির পক্ষে সোচ্চার হয়েছিলেন। বাঙালির ওপর তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকদের বর্বরতা তারাও মেনে নিতে পারেননি। বাঙালির সে রকম দুই বন্ধু ইংরেজ তরুণ পল ও মার্কিন তরুণী এলেন। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে এই দম্পতির অবদান নিয়ে ৫৪তম স্বাধীনতা দিবসে ‘হিউম্যানিটি ইস ওয়ান’ শীর্ষক একটি প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধের সময় স্কুলশিক্ষক পল কনেট ‘অ্যাকশন বাংলাদেশ’ নামে একটি সংস্থা গড়ে তোলেন। পূর্ব পাকিস্তানের ওপর বর্বর হামলায় ক্ষুব্ধ হয়ে পশ্চিম পাকিস্তানের সরকারকে অনুদান বন্ধ করার দাবিতে লন্ডনের রাস্তায় নামেন পল। পাকিস্তান হাইকমিশনের সামনে গিয়ে পাকিস্তানি পতাকা হাতে পল কনেট ‘জয় বাংলা’ শ্লোগান দিতে থাকেন, টিভিতে সেসব রেকর্ড করা হচ্ছিল। এ সময় বাংলাদেশের পতাকা হাতে তার সঙ্গে ছিলেন ম্যারিয়েটা প্রোকোপ। দুজন শ্বেতাঙ্গ ব্যক্তি বাংলাদেশের জনগণের ওপর সামরিক আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করছিল দেখে এক সাংবাদিক জানতে চান, দুজন ব্যক্তির প্রতিবাদ কীভাবে বাংলাদেশকে সামরিক জান্তার শাসন থেকে মুক্ত করবে? পল তখন ট্রাফালগার স্কয়ারে ২৫ হাজার লোক জড়ো করে একটি বিক্ষোভের আয়োজন করেন। সেদিন ছিল ১ আগস্ট ১৯৭১।
পল ও এলেন কনেট। ছবি: আনসার আহমদ উল্লাহর তোলা ছবিটি ডেইলি স্টার থেকে নেওয়া
পল ও এলেন বিয়ে করেছিলেন ১৯৭০ সালে। মুক্তিযুদ্ধের সময় পিস নিউজের সম্পাদক রজার মুডিকে নিয়ে এলেন কনেট গড়ে তুলেছিলেন ‘অপারেশন ওমেগা’। আহত মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসার জন্য অপারেশন ওমেগার সদস্যরা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কার একটি পুরনো অ্যাম্বুলেন্স কিনে বাংলাদেশে নিয়ে আসেন। বাংলাদেশে ঢোকার সময়ই এলেনকে গ্রেপ্তার ও কারারুদ্ধ করা হয়। মুক্তিযুদ্ধে চূড়ান্ত বিজয়ের কদিন আগে মিত্রবাহিনী তাকে ছেড়ে দেয়। তবে কারারুদ্ধ অবস্থায় এলেন টের পান, তিনি অন্তঃসত্ত্বা। সন্তান জন্ম দেওয়ার জন্য পরে তিনি যুক্তরাজ্যে ফিরে গিয়েছিলেন।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে দুই বিদেশির অবদানের এসব ছবি দেখা যাবে ‘হিউম্যানিটি ইস ওয়ান’ প্রদর্শনীতে। ছবিগুলো নিঃসন্দেহে অনুপ্রেরণার। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের বাছাই-বিন্যাসে স্মৃতিময় এ প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে গুলশান সোসাইটি। গুলশান সোসাইটি লেকপার্কে এ প্রদর্শনী চলবে ২৬ মার্চ থেকে ২৮ মার্চ। এ তিন দিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত প্রদর্শনী ঘুরে আসা যাবে।
আরএমডি/এএসএম