হামজা জ্বরে কাঁপছে দেশের ফুটবল

5 hours ago 6
ARTICLE AD
468x60 AD AFTER 4 POSTS

নির্ধারিত সময়ের বেশ আগেই পাঁচ তারকা হোটেলের হল ভর্তি হয়ে যায়। সম্ভবত বাংলাদেশের সবকটি গণামধ্যমের একাধিক প্রতিনিধি ছিলেন হাজির। বাংলাদেশ ফুটবল দলের কোনো খেলার আগে নিয়মিতই সংবাদ সম্মেলন হয়েছে; কিন্তু এমন আনুষ্ঠানিকতা, এমন সরগরম অবস্থা স্মরণকালে দেশের ফুটবলে ঘটেনি।

হবেই না বা কেন? এফএ কাপ জয়ী ফুটবলার, দীর্ঘ সময় ধরে ইংলিশ লিগ মাতানো ফুটবলার হামজা চৌধুরীর আগমন বলে কথা। হবিগঞ্জের স্নানঘাট হয়ে ঢাকায় পা পড়েছে হামজার। সোমবার রাতে পৌঁছানোর পর মঙ্গলবার দুপুরে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন, উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাতের পর সন্ধ্যায় দলীয় অনুশীলন। ফুটবলের বাইরে এমন ব্যস্ততা হয়তো হামজার জীবনে খুব একটা আসেওনি।

হামজা লাল-সবুজের জার্সিতে খেলবেন। এমন ঘোষণার পর থেকে বদলে যেতে থাকে ফুটবলের চেহারা। কিট স্পন্সর থেকে শুরু করে ফুটবল দল পেয়ে গেছে পাঁচ বছরের পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠান। সবকিছুর মূলেই হামজা। তাকে নিয়ে বাড়তি আকর্ষণ, বাড়তি চাওয়া থাকবে সেটা অনুমেয়। আজ তাই দেখা গেল।

সব নিয়ে রোমাঞ্চ কাজ করছে হামজার মধ্যেও। লেস্টার কিংবা শেফিল্ড ইউনাইটেডের হয়ে খেললেও হামজার ভাবনায় ছিল দেশের হয়ে খেলা।

“হ্যাঁ, আমি সবসময়ই বাংলাদেশের হয়ে খেলার কথা ভেবেছি। এ নিয়ে আমি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেছি। তবে (ইংল্যান্ডের হয়ে খেলার সুযোগ পেলেও বাংলাদেশের হয়ে খেলতাম কিনা) এই সিদ্ধান্ত আমার নিতে হয়নি। আমার যখন সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় এলো, তখন পরিবারের সঙ্গে কথা বললাম, তারা আমার জন্য সবচেয়ে বড় ব্যাপার। তারাই বাংলাদেশের হয়ে খেলার জন্য আমাকে এখানে টেনে নিয়ে এলো (হাসি)।”

সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় দলের কোচ অধিনায়ক থেকে শুরু করে ছিলেন পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠানের কর্তাও। কিন্তু শুরু না হতেই হামজাকে প্রশ্ন করা শুরু করে দেন কয়েকজন। যেন তর সইছে না। নানা প্রশ্নের ফাঁকে হামজা জানিয়েছেন নিজের ভাবনাও। মাঠে নামার আগেই এমন তুলকালাম অবস্থা হামজা চাপ অনুভব করছেন কী না?

“না, আমি তা মনে করি না। আমি মনে করি, দিনশেষে আমরা একটা ফুটবল ম্যাচই খেলছি। সেখানে যেকোনও কিছুই হতে পারে। কোচ বলেছেন, ইতোমধ্যে তিনি প্রস্তুতি নিয়েছেন, আমি এখানে এসেছি, আমি যা পারি, তা দলে যুক্ত করার জন্য। আমি কোনও চাপ অনুভব করছি না, আমি অনেক ভালোবাসা অনুভব করছি। আমার দিক থেকে, আমি চেষ্টা করবো যতটা সম্ভব দলের উন্নতিতে সহায়তা করার” -বলছিলেন হামজা।

কীভাবে বাংলাদেশ দলের সঙ্গে যুক্ত হলেন সেই ব্যাখ্যাও দিয়েছেন হামজা, “অনেকগুলো বিষয় ছিল, যে কারণে আমি এই অপশন বেছে নিয়েছি। যখন নতুন সভাপতি তাবিথ আউয়াল আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন, পরিকল্পনা জানালেন, আমি কোচের সঙ্গে কথা বললাম। দেখলাম এখানে একটি ভালো পদ্ধতি আছে। দেখলাম খুব ভালো একটি অর্গানাইজেশন নিয়ে একটা দল সফল হতে চায়। আমি জানতাম, আমার জন্যও পরিবার নিয়ে এখানে এসে খেলা আরামদায়ক। তাই আমি জাতীয় দলের সঙ্গে এই অভিযানে যোগ দিয়েছি। কোচ ও সভাপতি আমাকে অনেক আত্মবিশ্বাস জুগিয়েছেন।”

ঢাকায় সংবাদ সম্মেলনের আগে হবিগঞ্জে নিজ বাড়িতেও গণমাধ্যম কর্মীদের মুখোমুখি হয়েছিলেন হামজা। ভক্ত থেকে শুরু করে সংবাদ কর্মীরাও মেতেছিলেন হামজাকে নিয়ে। যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ভুঁইয়াতো বলেই দিলেন, “হামজার মতো ফুটবলার দলে থাকা মানে প্রতিপক্ষের জন্য চাপের।”

অবশ্য ইপিএলে খেলা ফুটবলারের জন্য এসব কোনো কিছুই নয়। শেষ করতে হবে জামাল ভূঁইয়ার একটা কথায়। সুনীল ছেত্রীর সঙ্গে তুলোনায় প্রশ্নের উত্তরে সুনীলের ভুয়সী প্রশংসা করে জামাল বলেন, “হামজা ইংলিশ লিগের প্লেয়ার।’’

Read Entire Article