ARTICLE AD
468x60 AD AFTER 4 POSTS
প্রকাশিত: ২০:৫০, ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ আপডেট: ২০:৫২, ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
ধানমন্ডি ৩২ নম্বরসহ সারা দেশে গত দুই দিনে ভাঙচুরের ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। এসব ঘটনাকে "অনাকাঙ্ক্ষিত ও অনভিপ্রেত’ দায়সারা বিবৃতি দিয়ে নয়, যেকোনো পরিস্থিতি আইনসিদ্ধভাবে মোকাবিলায় সরকারকে দৃশ্যমান ও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ারও আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।
শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানিয়েছে টিআইবি।
ধ্বংসাত্মক তৎপরতার পথ পরিহার করে আইনের শাসনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানিয়ে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই যে দলীয়করণ ও পরিবারতন্ত্রের সীমাহীন লালসা-তাড়িত কর্তৃত্ববাদী শাসনামলে বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সবচেয়ে বেশি অপূরণীয় ক্ষতি করেছে গণহত্যার দায়ে অভিযুক্ত স্বৈরাচার শেখ হাসিনা ও তার দোসররা। বহুমাত্রিক অধিকার হরণের শিকার আপামর দেশবাসীর ক্ষোভের মাত্রা বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে পলাতক শেখ হাসিনা ও তার দেশি-বিদেশি সহযোগীদের নির্লজ্জ ও ষড়যন্ত্রমূলক প্রচারণার পরিপ্রেক্ষিতে। তাই বলে আইনসিদ্ধ প্রতিক্রিয়ার পথ অনুসরণ না করে দেশব্যাপী যে প্রতিশোধপ্রবণ ভাঙচুর ও সহিংসতা চলেছে, তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। এটি জুলাই অভ্যুত্থান–পরবর্তী একটি স্থিতিশীল বাংলাদেশ সম্পর্কে দেশ-বিদেশে ইতিবাচক কোনো বার্তা দেবে না।”
তিনি বলেন, “আগে থেকে সহিংস কর্মসূচির ঘোষণা থাকার পরও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা ও তার সঙ্গে সহায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালনরত সেনাবাহিনী তথা সরকার কার্যকর নিয়ন্ত্রণ বা প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে আশঙ্কাজনকভাবে নির্লিপ্ততার পরিচয় দিয়েছে। পরবর্তী সময়ে ঘটনাটি অনাকাঙ্ক্ষিত ও অনভিপ্রেত এমন বিবৃতি দিয়ে দায় এড়ানোর চেষ্টাও লক্ষণীয়। কর্তৃত্ববাদের দীর্ঘ ১৬ বছরের পুঞ্জীভূত বিশাল জঞ্জাল অপসারণ করে শান্তিশৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সদিচ্ছা হয়তো বিতর্কের ঊর্ধ্বে। তবে তার প্রয়োগে সুচিন্তিত ঝুঁকি নিরসন কৌশলের ওপর ভিত্তি করে যেকোনো উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকার ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো কতটা সক্রিয়, সাম্প্রতিক ঘটনাবলির কারণে এই প্রশ্ন যৌক্তিকভাবে উত্থাপিত হতে পারে। তাই শুধু দায়সারা বিবৃতি দিয়ে নয়, যেকোনো পরিস্থিতি আইনসিদ্ধভাবে মোকাবিলায় সরকারকে দৃশ্যমান ও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।”
উদ্ভূত পরিস্থিতি বাস্তবে পতিত আওয়ামী কর্তৃত্ববাদের পুনরুত্থানকামী মহলকেই অধিকতর সুযোগ করে দেওয়ার শঙ্কা তৈরি করছে বলে মনে করেন টিআইবির এই নির্বাহী পরিচালক।
তিনি বলেন, “এমনটি অব্যাহত থাকলে নজিরবিহীন আত্মত্যাগের বিনিময়ে সূচিত ‘নতুন বাংলাদেশের’ অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জনের পথ রুদ্ধ হয়ে পড়বে। একই সঙ্গে গণতান্ত্রিক উত্তরণ, সুশাসন এবং বিশেষ করে সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় স্থিতিশীলতার সম্ভাবনাকে ঝুঁকিপূর্ণভাবে খাদের কিনারায় ঠেলে দেওয়া হবে। মনে রাখা দরকার, শেখ হাসিনাসহ কর্তৃত্ববাদের সব দোসরকে সুনির্দিষ্ট অপরাধের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা নতুন বাংলাদেশের স্বপ্নপূরণের সর্বোচ্চ প্রাধান্যপ্রাপ্ত করণীয়। তবে এজন্য প্রতিশোধপ্রবণ ও আত্মঘাতী মব জাস্টিস নয়, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক আইনের পথ অনুসরণ করা বাধ্যতামূলক।”
ভিন্নমত পোষণকারীদের মামলা দিয়ে হয়রানির সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে এসে সবার গণতান্ত্রিক অধিকার সুরক্ষায় রাষ্ট্র ও সরকারকে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এসবি