ARTICLE AD
468x60 AD AFTER 4 POSTS
গত চার দশকে অনেকটা বড় হয়েছে দেশের কুরিয়ার সেবা খাত। বর্তমানে প্রায় দুই লাখ মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যুক্ত এই খাতে। সম্ভাবনা রয়েছে আরও ৫০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির। বর্তমানে এই কুরিয়ার সেবার বাজার প্রায় সাত হাজার কোটি টাকার বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
কিন্তু ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট), ক্ষতিপূরণ ফি, অবকাঠামোগত দুর্বলতাসহ নানা প্রতিবন্ধকতার কারণে কাঙ্ক্ষিত সাফল্যের মুখ দেখছে না এই খাত। এজন্য সরকারের সহযোগিতা চেয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
আগে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের মাধ্যমে দেশের অভ্যন্তরে টাকা-পয়সা ও পার্সেল পাঠানো যেতো। এক সময় তা বন্ধ হয়ে যায়। বিকল্প উদ্যোগ হিসেবে বেসরকারি কুরিয়ার সেবা চালু হয়।
১৯৮৩ সালে বেসরকারি কুরিয়ারের যাত্রা শুরু
কুরিয়ার সার্ভিসেস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (সিএসএবি) সভাপতি এবং সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসের স্বত্বাধিকারী হাফিজুর রহমান পুলক জাগো নিউজকে জানান, বাংলাদেশ বিমানের পার্সেল সার্ভিস বন্ধ হওয়ার পর ১৯৮৩ সালের ১ নভেম্বর চারটি কুরিয়ার কোম্পানি আত্মপ্রকাশ করে। সুন্দরবন কুরিয়ার, কন্টিনেন্টাল কুরিয়ার, ড্রিমল্যান্ড কুরিয়ার ও ডলফিন কুরিয়ার। তবে সুন্দরবন কুরিয়ার প্রথম ‘কুরিয়ার’ শব্দটি ব্যবহার করে যাত্রা শুরু করে। অন্য কোম্পানিগুলো তখন ‘এয়ার এক্সপ্রেস’ নামে যাত্রা শুরু করেছিল।
নব্বই দশকের গোড়ার দিকে দেশে কুরিয়ার সার্ভিসের ব্যাপক প্রসার ঘটে এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ‘ট্রেড অর্ডিন্যান্স লাইসেন্স’র আওতায় কুরিয়ার প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের ব্যবসায়িক কার্যক্রম শুরু করে।
- আরও পড়ুন
- পণ্য পৌঁছাতে উদ্যোক্তাদের কাছে জনপ্রিয় হচ্ছে কুরিয়ার সার্ভিস
- চার বছরে লোকসান পৌনে ২ কোটি টাকা, লাভ করছে কুরিয়ার
- আমের বুকিং ও পরিবহনে ব্যস্ত কুরিয়ার সার্ভিসগুলো
দেশের ভেতরে কুরিয়ার সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিস (প্রা.) লিমিটেড, কন্টিনেন্টাল কুরিয়ার সার্ভিসেস, এস এ পরিবহন পার্সেল অ্যান্ড কুরিয়ার সার্ভিস, করতোয়া কুরিয়ার সার্ভিস, জননী কুরিয়ার, সদাগর এক্সপ্রেস লিমিটেড, এজেআর পার্সেল অ্যান্ড কুরিয়ার সার্ভিস, ওয়ার্ল্ড রানার এক্সপ্রেস, এক্সপ্রেস ওয়ান, পদ্মা কুরিয়ার, মধুমতি এক্সপ্রেস, ড্রিমল্যান্ড কুরিয়ার সার্ভিসেস, প্রভাতী কুরিয়ার, রেইনবো কুরিয়ার ইত্যাদি। এর পাশাপাশি অনবোর্ড কুরিয়ার এবং আন্তর্জাতিক কুরিয়ার সার্ভিস প্রতিষ্ঠানও কাজ করছে দেশে।
এই কুরিয়ার সেবা প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য ২০১৩ সালে মেইলিং অপারেটর ও কুরিয়ার সার্ভিস লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠিত হয়। মেইলিং অপারেটর ও কুরিয়ার সার্ভিস লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষের ২০২২-২৩ অর্থবছরের বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে ২২৩টি কুরিয়ার সার্ভিস কোম্পানি আছে। এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ কুরিয়ার সার্ভিস ১০৪টি, আন্তর্জাতিক কুরিয়ার সার্ভিস ৮৯টি এবং অনবোর্ড কুরিয়ার সার্ভিস ৩০টি।
নিবন্ধিত কুরিয়ার প্রতিষ্ঠানগুলো নিবন্ধন ফি ও নবায়ন ফি লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষকে দিতে হয়। এছাড়া প্রতিটি বুকিং থেকে সরকার নির্ধারিত নির্দিষ্ট পরিমাণ ফি দিতে হয়। এটাকে ক্ষতিপূরণ ফি বলা হয়। যেমন: বুকিং করা ডকুমেন্টপ্রতি ২০ পয়সা, পার্সেল দ্রব্য/কার্টনপ্রতি ১ টাকা, লজিস্টিকস দ্রব্য/কার্টনপ্রতি ২ টাকা, এক্সপ্রেস সার্ভিস দ্রব্য/কার্টনপ্রতি ৩ টাকা, মূল্য ঘোষিত বা ভিডি দ্রব্য/কার্টনপ্রতি ৫ টাকা, অন-বোর্ড মেইলিং অপারেটর ও কুরিয়ার ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে আগমন ও বহির্গমন ডকুমেন্ট ব্যতীত দ্রব্য কেজিপ্রতি (বিল অব এন্ট্রির ভিত্তিতে) ২ টাকা, আন্তর্জাতিক মেইলিং অপারেটর ও কুরিয়ার ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে আগমন ও বহির্গমন ডকুমেন্ট ব্যতীত দ্রব্য হাউজ এয়ারওয়ে বিলপ্রতি ৬ টাকা দিতে হচ্ছে।
এ বিষয়ে মেইলিং অপারেটর ও কুরিয়ার সার্ভিস লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষের পরিদর্শক সালাহ উদ্দিন মোহাম্মদ মূসা জাগো নিউজকে বলেন, ক্ষতিপূরণ ফি বা কমপেনসেটরি ফি কুরিয়ার কোম্পানিগুলো সরকারকে দেয়। এটা আগে ডাক বিভাগের কোডে জমা হতো। সম্প্রতি এটার কোড পরিবর্তন হয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন সাপেক্ষে সরকারি কোডে জমা দিতে হয়।
ক্ষতিপূরণ ফি ও উচ্চ ভ্যাট নিয়ে আপত্তি
নিবন্ধন ও নবায়ন ফি এবং ভ্যাট দেওয়ার পরও ক্ষতিপূরণ ফি এবং উচ্চ ভ্যাট দেওয়া নিয়ে আপত্তি জানিয়েছেন কুরিয়ার সেবা প্রতিষ্ঠানগুলোর মালিকরা। এসব প্রতিবন্ধকতার কারণে তাদের ব্যবসা করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে।
এক্সপ্রেস ওয়ান লিমিটেডের স্বত্বাধিকারী এস এ এম শওকত হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, ‘সরকারের ডাক বিভাগ আমাদের ওপর একটা পেনাল্টি দিয়ে রেখেছে কারণ পোস্ট অফিসের ব্যবসা খারাপ। এখন সরকারি ব্যাংক কি বেসরকারি ব্যাংক থেকে পেনাল্টি নেয় বা সরকারি বিমানকে কি বেসরকারি বিমান ভর্তুকি দেয়? দেয় না। তাহলে আমাদের ওপর কেন এই পেনাল্টি? এটা অন্যায্য যা প্রতি মাসে আমাদের পরিশোধ করতে হয়। নয়তো আমাদের লাইসেন্সে সমস্যা হবে। এছাড়া আগে কুরিয়ারে ৫ শতাংশ ভ্যাট ছিল যা এখন ১৫ শতাংশ। এটি আগের হারে বহাল রাখলে আমাদের জন্য সুবিধা হয়। আমরাও তো ট্যাক্স দিতে চাই।’
- আরও পড়ুন
- ৩ দেশে বন্ধ ডাক-পণ্য পরিবহন, ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থী-ব্যবসায়ীরা
- কুরিয়ার সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে লেনদেন হবে ব্যাংকে
- রাইড শেয়ারিং ও কুরিয়ারে খরচ বাড়ছে ২০ শতাংশ
প্রভাতী ট্রান্সপোর্টেশন সিস্টেমের স্বত্বাধিকারী মো. আব্দুর রাজ্জাক রাজু বলেন, ‘আসলে ভালো-মন্দ মিলিয়েই আমাদের ব্যবসা করতে হয়। আগে কুরিয়ারে ৫ শতাংশ ভ্যাট ছিল, যা এখন ১৫ শতাংশ। আবার ডাক বিভাগকে আমাদের পেনাল্টি দিতে হয়। আগে আমাদের মার্কেটে শেয়ারের ব্যবসা ছিল সেটাও এখন বন্ধ।’
প্রথম সমস্যা ট্রাফিক জ্যাম
এস এ এম শওকত হোসেন বলেন, ‘আমাদের ব্যবসার প্রথম সমস্যা হচ্ছে প্রচণ্ড ট্রাফিক জ্যাম, যার ফলে ব্যবসা মন্দা যাচ্ছে। কারণ, ট্রাফিক জ্যামের কারণে যে পণ্য আন্তজেলায় ১২ ঘণ্টায় পৌঁছানোর কথা সেখানে ১৫ ঘণ্টা বা তারও বেশি সময় লেগে যাচ্ছে।’
‘আমাদের ব্যবসা তো অন্য ব্যবসার ওপর নির্ভরশীল। কারণ, আমরা অন্যের পণ্য ডেলিভারি করি। ফলে অন্যের ব্যবসা যদি খারাপ হয় তাহলে আমাদের ব্যবসা স্বাভাবিকভাবেই খারাপ হয়ে যায়। আমরা আমাদের কর্মীদের ঈদের বেতন বোনাস দিতে হিমশিম খাচ্ছি। তবে আমরা লোন করে হলেও বেতন-বোনাস দিয়ে দেব।’
কুরিয়ার সার্ভিসেস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের এই সদস্য আরও বলেন, ‘সরকার জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি করার পরিকল্পনা করছে যার নেতিবাচক প্রভাব পড়বে আমাদের ব্যবসায়। কারণ আমরা তো হুট করে ডেলিভারি চার্জ বাড়িয়ে দিতে পারব না। ফলে আমাদের খরচ বেড়ে যাবে।’
‘কুরিয়ার সেবায় এখন প্রায় দুই লাখ মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যুক্ত এবং আরও ৫০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। গত কয়েক বছরে দেশের রাস্তাঘাটসহ অবকাঠামোগত উন্নয়ন হয়েছে। তবে সড়ক-মহাসড়কে যদি পণ্য পরিবহনকারী ট্রাকের জন্য আলাদা লেন থাকে তাহলে সুবিধা হয়। আমাদের ব্যবসা ট্র্যাডিশনাল কুরিয়ার। ফলে আমরা ই-কমার্সের কুরিয়ারগুলো করি না। যারা ই-কমার্সের পণ্য ডেলিভারি দেয় তাদের ব্যবসা ভালো’, যোগ করেন এক্সপ্রেস ওয়ান লিমিটেডের স্বত্বাধিকারী।
শওকত হোসেন বলেন, ‘সরকার যদি আমাদের বিভিন্ন রাস্তার পাশে মৌজার দামে কিছু জমি দেয় তাহলে আমরা বিভিন্ন জায়গায় হাব করতে পারি। এতে সব গাড়ি আমাদের ঢাকার ভেতরে আনতে হবে না। পাশাপাশি কুরিয়ারে ভ্যাট ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশে নিয়ে আসা, ডাক বিভাগের পেনাল্টি না নেওয়া, সড়ক মহাসড়ক ৬ লেনে উন্নীত করে পণ্য পরিবহনের জন্য আলাদা লেন করে দিলে আমরা আরও দ্রুত সেবা দিতে পারব।’
সংশ্লিষ্টরা জানান, করোনা মহামারির সময় অনলাইনে কেনাকাটার চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় কুরিয়ার ব্যবসা ভালো করেছে। এসময় ৫০টির মতো নতুন কুরিয়ার সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান তৈরি হয়েছে।
সিএসএবির সহ-সভাপতি মো. আব্দুর রাজ্জাক রাজু জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমাদের ব্যবসার পরিস্থিতি ভালোই আছে, খারাপ নয়। যদিও আমি অনলাইন ডেলিভারি করি না। তবে এখন অনলাইনে আগের চেয়ে ভালো সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। ঈদের সময় সাধারণ পণ্য ডেলিভারিও বৃদ্ধি পায়। সবাই প্রিয়জনের কাছে নানান সামগ্রী পাঠায়।’
‘আসলে কুরিয়ার ব্যবসার ভ্যালুয়েশন একেক জনের একেক রকম। তাই এটা বলা একটু কঠিন ব্যাপার। কারণ কেউ কারও তথ্য শেয়ার করে না। তবে আগের চেয়ে এখন ভ্যালুয়েশন অনেক বেড়ে গেছে। কম বেশি কুরিয়ার সেবার বাজার প্রায় সাত হাজার কোটি টাকা’, তিনি বলেন।
২০০৪-২০০৫ সালের দিকে কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে অবৈধ অর্থ পাঠানো, লেনদেন এবং এসব অর্থ বিভিন্ন অনৈতিক কাজে ব্যবহার করার অভিযোগ ওঠে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মানি লন্ডারিং বিভাগও এই সময় কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে অর্থ পাঠানো ও লেনদেনের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে। পরে ২০১৩ সালে কুরিয়ার সার্ভিস বিধিমালায় স্পষ্টভাবে বলা হয় যে কুরিয়ারের মাধ্যমে টাকা পাঠানো যাবে না।
কুরিয়ারে টাকা পাঠানোর সুযোগ দাবি
আব্দুর রাজ্জাক রাজু বলেন, ‘আমাদের কুরিয়ারে আগে টাকা পাঠানোর ব্যবস্থা ছিল কিন্তু সেটা এখন পুরোপুরি বন্ধ। আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে কথা বলছি যাতে এটা কোনোভাবে চালু করা যায় কি না। আর কুরিয়ার নিয়ে বিভিন্ন সময় নানা অভিযোগের ব্যাপারে বলব যে, কাস্টমার তার প্যাকেটে কি রেখেছে সেটা দেখার তো আমাদের সুযোগ নাই। তবে এখন তো নিরাপত্তা ব্যবস্থা উন্নত হয়েছে, আর্চ মেশিন আছে চেকিং করার জন্য। তবু অনেক সময় অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে।’
- আরও পড়ুন
- জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি: কুরিয়ার খরচ বেড়েছে ১০-৫০ টাকা
- চাহিদা বেড়েছে কুরিয়ার সেবাপ্রতিষ্ঠানের, যুক্ত উচ্চশিক্ষিতরাও
- কুরিয়ার সার্ভিসে টাকা পাঠালে জেল-জরিমানা
‘তবে বিভিন্ন নিয়ম, নীতিমালা, লাইসেন্স সিস্টেম করার কারণে আগের চেয়ে এখন এমন ঘটনা অনেক কমেছে। আমাদের সেক্টর তো জবাবদিহিতামূলক। কোনো পণ্য যদি আমরা সময়মতো না পৌঁছাই তাহলে আমাদের জবাবদিহি করতে হয়। কুরিয়ার সার্ভিস বিধিমালা ২০১৩ সালে হয়েছিল কিন্তু আইন এখনো হয়নি। এটা নিয়ে সরকার পরিবর্তনের আগে আমরা কয়েকবার বসেছিলাম।’ বলছিলেন আব্দুর রাজ্জাক।
সিএসএবির তথ্যমতে, দেশে ৫০০’র মতো কুরিয়ার সার্ভিস কোম্পানি আছে। এর মধ্যে সিএসএবির সদস্য ১৩৯ জন। কুরিয়ার সার্ভিসের ব্যবসা করতে হলে মেইলিং অপারেটর ও কুরিয়ার সার্ভিস প্রতিষ্ঠান লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষ থেকে লাইসেন্স বা নিবন্ধন নিতে হয়। পাশাপাশি সিএসএবির সদস্যপদ নিতে হয়। সিএসএবির সদস্য হলেও অনেকে আবার লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষ থেকে লাইসেন্স নেয়নি।
অবস্থা খারাপ থেকে খারাপ হওয়ার উপক্রম
কোনো একটি খাতের জন্য সাধারণত একটি করে সমিতি থাকলেও কুরিয়ার সেবা খাতে রয়েছে পাঁচটি সমিতি। সিএসএবি ছাড়া বাকিগুলো হচ্ছে ইন্টারন্যাশনাল এয়ার এক্সপ্রেস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আইএইএবি), অন বোর্ড কুরিয়ার সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ পার্সেল সার্ভিস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন এবং বাংলাদেশ প্রাইভেট কোরিয়ার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন।
আইএইএবির সভাপতি এবং কনভেয়র ইউনি এক্সপ্রেসের স্বত্বাধিকারী কবির আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, এ সার্ভিসের বর্তমান অবস্থা খারাপ থেকে খারাপ হওয়ার উপক্রম। বিশেষ করে কাস্টমসের অসহযোগিতা, সিভিল এভিয়েশনের ওয়্যারহাউজের উচ্চ ভাড়া বড় সমস্যা। সিভিল এভিয়েশনের তো ব্যবসা করার কথা নয়, তারা হবে রেগুলেটর যারা ফ্যসিলিটেট করবে। তারা আমাদের হয়রানি করে। আবার কাস্টমসের লাইসেন্স বিধিমালা নিয়েও নানা হয়রানির মুখে পড়তে হয়। বিশ্বের যে কোনো দেশ থেকে আমাদের এখানে রেট ২০০-৩০০ শতাংশ বেশি, যেন সোনার দোকান আমাদের। এত সমস্যার কারণেই অনেক সময় ক্ষতি পুষিয়ে নিতে অনৈতিক কাজে যেতে হয় ব্যবসায়ীদের।
কবির আহমেদ বলেন, ‘আমাদের লাইসেন্সধারী ৫২টি আন্তর্জাতিক কুরিয়ার কোম্পানি কার্যকর আছে। সাতটি কোম্পানি লাইসেন্সের জন্য অপেক্ষা করছে। ফলে আমরা প্রতিযোগিতায় আসতে পারছি না। বড় বড় আন্তর্জাতিক কোম্পানি যেমন: ডিএইচএল, ফেডএক্স ইত্যাদির সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে পারছি না। সেটা করতে হলে তো আমাদের আগে সক্ষমতা অর্জন করতে হবে। এ সমস্ত প্রতিবন্ধকতা থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে।’
এসআরএস/এমএমএআর/এএসএম