ঠিকাদারের দখলে স্কুলমাঠ, দুই মাস ধরে খেলাধুলা বন্ধ শিক্ষার্থীদের

2 days ago 1
ARTICLE AD
468x60 AD AFTER 4 POSTS

ফরিদপুরের সালথা উপজেলার যুদন্দদী ইউনিয়নের কুমারকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ দখল করে সড়ক সংস্কার কাজের নির্মাণ সামগ্রী রাখা হয়েছে। গত দুই মাস ধরে স্থানীয় প্রভাবশালীদের সহযোগিতায় মাঠটি দখলে রেখেছেন এক ঠিকাদার। ফলে ওই বিদ্যালয়ের মাঠে খেলাধুলা ও স্বাভাবিক চলাচল করতে পারছে না শিক্ষার্থীসহ শিশু-কিশোররা। এমন অবস্থায় মাঠে থাকা সড়কের সামগ্রীগুলো দ্রুত সরিয়ে নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন শিক্ষকরা।

জানা গেছে, উপজেলার চন্ডিবর্দী থেকে কালীনগর বাজার পর্যন্ত ১১৮০ কিলোমিটার সড়কের সংস্কারের কাজ চলছে। টেন্ডারের মাধ্যমে ওই সড়ক সংস্কারের কাজ করছেন ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইসতিয়াক আরিফের ভাই ইমতিয়াজ আসিফ। তার লোকজন বিদ্যালয়ের ওই মাঠটি দখল করে নির্মাণ সামগ্রী রেখেছেন।

সরেমিজনে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের পুরো মাঠজুড়ে বিপুল পরিমাণ খোয়া ও বালু ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখা হয়েছে। স্কুল ভবনের পাশেই রাখা হয়েছে ভারী ভারী যন্ত্র।

শিক্ষকরা জানান, খোয়া-বালু মিশ্রণের সময় ওইসব যন্ত্রের বিকট শব্দ আর ধুলাবালিতে অতিষ্ঠ হয়ে যান বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও আশপাশের বাসিন্দারা। অন্যদিকে ওই মাঠেই বিটুমিন গলাতে ও পাথর-বালু মিশ্রণের জন্য প্লান্ট মেশিনও প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে। সামনে যদি ওই মাঠে বিটুমিন গলানো হয়, তাহলে কালো ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হবে বিদ্যালয় এলাকা। এতে শিক্ষার্থীদের ক্লাস করাই মুসকিল হয়ে পড়বে।

ঠিকাদারের দখলে স্কুলমাঠ, দুই মাস ধরে খেলাধুলা বন্ধ শিক্ষার্থীদের

এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান বলেন, গত দুই মাস ধরে আমাদের বিদ্যালয়ের মাঠটি দখল করে খোয়া-বালু ও বড় বড় যন্ত্র রেখেছেন ঠিকাদারের লোকজন। এমনকি স্কুল ভবনের বারান্দায় পর্যন্ত তারা মাঝে মাঝে মালামাল রাখছেন। ফলে স্কুলের শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা ও স্বাভাবিক চলাফেলা করতে পারছে না। মাঠের এমন অবস্থা হওয়ায় অনেক শিশু শিক্ষার্থী ক্লাসে আসা বন্ধ করে দিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে মাঠ দখল করে সড়কের সামগ্রী রাখার জন্য কাউকে অনুমতি দেওয়া হয়নি। তবে স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি ঠিকাদারের কাছ থেকে সুবিধা নিয়ে মাঠ দখলের সুযোগ করে দিয়েছেন বলে জানতে পেরেছি। তাই আমরা ঠিকাদারকে বলার পরও মাঠ ছাড়ছে না তারা। এই অবস্থায় মাঠ থেকে সড়কের সামগ্রীগুলো দ্রুত সরানোর জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

এ ব্যাপারে ঠিকাদার ইমতিয়াজ আসিফের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

তবে ঠিকাদারের ম্যানেজার সিদ্দিকুর রহমান বলেন, মাঠটা পুরোপুরি বিদ্যালয়ের না। মাঠের কিছু অংশ স্থানীয়দের। তাই স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে মালামাল রাখা হয়েছে।

সড়ক সংস্কার কাজের তদারকি কর্মকর্তা উপজেলা উপ-প্রকৌশলী কাইয়ুম হোসেন বলেন, ঠিকাদার কোথায় মালামাল রাখবে এটা তার ব্যাপার। আমরা কাজ বুঝে পেলেই হলো।

সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আনিছুর রহমান বালী বলেন, বিদ্যালয় মাঠ দখলের বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে খোঁজখবর নিয়ে ওই মাঠ থেকে মালামাল অপসারণের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এন কে বি নয়ন/এফএ/এএসএম

Read Entire Article