মেডিকেলে ভর্তিতে ৫ শতাংশ কোটা নিয়ে বেকায়দায় সরকার

1 day ago 1
ARTICLE AD
468x60 AD AFTER 4 POSTS

শেষ হচ্ছে না কোটা নিয়ে খোঁটা। গত বছর এই কোটা নিয়ে আন্দোলনে পতন ঘটে আওয়ামী লীগ সরকারের। পতনের আগে হাইকোর্টের রায়ের আলোকে সরকারি চাকরিতে নিয়োগে ৯৩ শতাংশ মেধা ও সাত শতাংশ কোটা প্রথা চালু করে তারা। সেই কোটা নিয়ে এখনো বিতর্কের অবসান হয়নি। এ নিয়েও আবারও প্রশ্ন তুলেছেন ছাত্ররা। বেকায়দায় ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার। বিশেষ করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর পড়েছে বিপাকে।

গত রোববার (১৯ জানুয়ারি) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর। এতেই সামনে আসে কোটা নিয়ে প্রশ্ন। মেধা থেকে ৭৩ নম্বর পেয়েও ভর্তির জন্য প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত হতে পারেননি, কিন্তু কোটায় ৪১ নম্বর পেয়েও নির্বাচিত হতে পেরেছেন।

বিষয়টি নিয়ে সেদিন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দেন জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক ও জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম। তিনি বলেছেন, ‘ভর্তি পরীক্ষায় এখনো কিসের কোটা? আজ থেকেই এই শোষণের শেষ হতে হবে। ফুলস্টপ।’

আরও পড়ুন:

 

মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষায় কোটা পদ্ধতি রাখার প্রতিবাদে রোববার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা কলেজ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন। এসময় তারা কোটাবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দেন।

কোটা আন্দোলনের মাধ্যমে গণআন্দোলনের শুরু। কিন্তু বর্তমান সরকারের ছয় মাস হয়ে গেলেও এখনো কোটা প্রথার বিলুপ্তি দেখতে পাইনি। এখনো কেউ কোটার জোরে ৪১ পেয়ে চান্স পায়, আরেকজন ৭৩ পেয়েও চান্স পায় না। -আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা

শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা এক কঠিন গণআন্দোলনের মধ্যদিয়ে স্বৈরাচার পতনের ইতিহাস লিখেছি। মনে রাখতে হবে, এই কোটা আন্দোলনের মাধ্যমেই সেই গণআন্দোলনের শুরু। কিন্তু বর্তমান সরকারের ছয় মাস হয়ে গেলেও এখনো কোটা প্রথার বিলুপ্তি দেখতে পাইনি। এখনো কেউ কোটার জোরে ৪১ পেয়ে চান্স পায়, আরেকজন ৭৩ পেয়েও চান্স পায় না।

মেডিকেলে ভর্তিতে ৫ শতাংশ কোটা নিয়ে বেকায়দায় সরকার

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, যেই বৈষম্য নিরসন করতে গিয়ে আমাদের রাজপথে নামতে হয়েছিল, সেই বৈষম্য দূর করতে যদি আবারও নামতে হয়, তাহলে এই সরকারেরও পরিণতি হাসিনার মতো হবে।

পরদিন সোমবার (২০ জানুয়ারি) সকাল থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা। এসময় তারা ‘অবিলম্বে ফলাফল বাতিল করো করতে হবে’, ‘কোটা না মেধা-মেধা মেধা’, ‘মেডিকেলের ফলাফল-পুনঃপ্রকাশ করতে হবে’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।

 

 

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানের (নিটোর) সহযোগী অধ্যাপক ডা. ইদ্রিস আলী বলেন, ‘আমার একজন ছেলে বা মেয়ে ৭৩ পেয়েও মেডিকেলে চান্স পাচ্ছে না অথচ মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ৩৬ বা ৩৭ পেয়েও চান্স পেয়ে যাচ্ছে। পরিবর্তিত বাংলাদেশে কেনো এই বৈষম্য থাকবে? আমরা এই ফল মানি না।’

আমরা বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের ‘মেডিকেল/ডেন্টাল কলেজে এমবিবিএস/বিডিএস কোর্সে শিক্ষার্থী ভর্তি নীতিমালা-২০২৫’ অনুসরণ করেছি। হাইকোর্টের রায় ও সরকারের সর্বশেষ প্রজ্ঞাপনের আলোকেই কোটা রাখা হয়েছে। সরকার এ বিষয়ে ভিন্ন কোনো সিদ্ধান্ত দিলে আমরা সেটা প্রতিপালন করবো। -ভর্তি পরীক্ষা কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক ডা. রুবীনা ইয়াসমীন

শিক্ষার্থীরা বলেন, প্রয়োজনে আমরা ঢাকা মেডিকেলসহ সারাদেশের সব মেডিকেলের শিক্ষার্থীরা এই আন্দোলনে নামবো। সুতরাং এই আন্দোলনকে হালকাভাবে নেওয়ার কিছু নেই। আজকের মধ্যেই ফলাফল বাতিল করতে হবে।

মেডিকেলে ভর্তিতে ৫ শতাংশ কোটা নিয়ে বেকায়দায় সরকার

এ সময় শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে বিভিন্ন হাসপাতালের চিকিৎসক ও শিক্ষকরা এসে সংহতি জানান।

সোমবার দিনভর স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিষয়টি নিয়ে তারাও বেশ বেকায়দায় আছেন। দফায় দফায় অধিদপ্তরের শীর্ষ কর্তাদের বৈঠক হয়েছে। কিন্তু সমাধান নেই। তাদের হাতে হাইকোর্টের রায় ও সরকারের প্রজ্ঞাপন আছে। সে আলোকে তারা কোটা রেখেছে। এর বাইরে তাদের যাওয়ার সুযোগ নেই। তবে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের বিষয়টিও তাদের বেশ ভাবাচ্ছে।

আরও পড়ুন:

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘পাঁচ মাসেরও বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় শিক্ষার্থীদেরই সরকার। তারা চাইলে তো কোটা বাতিল করতে পারতো। সেটি তো করেনি। যেহেতু বাতিল করেনি, সেহেতু আমাকে তো বিদ্যমান প্রজ্ঞাপন ও রায়কেই প্রতিপালন করতে হবে।’

এ বিষয়ে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ও ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষা কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক ডা. রুবীনা ইয়াসমীন জাগো নিউজকে বলেন, “আমরা বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের ‘মেডিকেল/ডেন্টাল কলেজে এমবিবিএস/বিডিএস কোর্সে শিক্ষার্থী ভর্তি নীতিমালা-২০২৫’ অনুসরণ করেছি। সেখানে হাইকোর্টের রায় ও সরকারের সর্বশেষ প্রজ্ঞাপনের আলোকেই কোটা রাখা হয়েছে। আমরাও তাই করেছি। সরকার এ বিষয়ে ভিন্ন কোনো সিদ্ধান্ত দিলে আমরা সেটা প্রতিপালন করবো।”

ডা. রুবীনা ইয়াসমীন বলেন, ‘আমরা কোটায় উত্তীর্ণদের প্রমাণাদি যাচাই করবো। আসলেই তারা সংশ্লিষ্ট কোটার উপযোগী কি না। এজন্য আমরা ২৩ ও ২৬ জানুয়ারি পিছিয়ে পড়া পশ্চাৎপদ জনগোষ্ঠীর কোটায় নির্বাচিত প্রার্থীদের প্রমাণাদিসহ অধিদপ্তরে ডেকেছি। মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনার সন্তানদের জন্য সংরক্ষিত আসনে প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত প্রার্থীদের কোটার সপক্ষে সনদ/প্রমাণকসহ ২৭, ২৮ ও ২৯ জানুয়ারি ডেকেছি। প্রমাণাদি যাচাই করে ঠিক পাওয়া গেলে ভর্তির সুযোগ পাবে, না হলে পাবে না।’

এ প্রমাণাদি যাচাইয়ের বিষয়ে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে একটি বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করা হয়েছে। একই বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মেডিকেল কলেজ ২০২৪-২৫ সালের এমবিবিএস ভর্তি কার্যক্রমে ৫ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা বিদ্যমান বিধি অনুসারে শুধু মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনাদের সন্তানদের জন্য প্রযোজ্য হবে, তাদের নাতি-নাতনি বা অন্য কারো জন্য প্রযোজ্য হবে না। এই কোটার অধীনে সংরক্ষিত ২৬৯টি আসনের মধ্যে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ১৯৩ জন প্রার্থী পাওয়া গেছে। অবশিষ্ট ৭৬টি আসন এরইমধ্যে মেধা তালিকা থেকে পূরণ করা হয়েছে। এই কোটায় প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত ১৯৩ জনের পিতা/মাতার মুক্তিযোদ্ধা সনদপত্র, নিজের জন্মনিবন্ধন সনদসহ যাবতীয় প্রমাণাদি ও একাডেমিক সার্টিফিকেট নিয়ে আগামী ২৯ জানুয়ারি মহাখালীতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে পুরোনো ভবনের দোতলায় অবস্থিত মেডিকেল এডুকেশন শাখায় উপস্থিত হয়ে যাচাই-বাছাই করাতে হবে। যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়ায় কোনো ভুল বা অসত্য তথ্য পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ট প্রার্থীর ভর্তি বাতিল হবে এবং মেধা তালিকা থেকে সেই শূন্য আসন পূর্ণ করা হবে। এই যাচাই-বাছাই কার্যক্রম সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত এই ১৯৩ জনের ভর্তি সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যক্রম স্থগিত থাকবে। অবশিষ্টদের ভর্তিসহ মেডিকেল কলেজের অন্যান্য কার্যক্রম যথারীতি চালু থাকবে।

কোন কোটায় কতজন
২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় মোট আবেদন করেন এক লাখ ৩৫ হাজার ৬৬৫ জন। এর মধ্যে এক লাখ ৩১ হাজার ৭২৯ জন পরীক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। ৬০ হাজার ৯৫ জন ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।

মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ৬৮৬ জনের মধ্যে পাস করেন ১৯৩ জন। তাদের জন্য বরাদ্দ আসন ৫ শতাংশ বা ২৬৯টি। পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর ৯৪৬ জনের মধ্যে ২৮২ জন পাস করেছেন। তাদের জন্য ৩১টি আসন বরাদ্দ। সমতলের উপজাতি ২৫৫ জনের মধ্যে ৬৬ জন পাস করেছেন। তাদের জন্য আটটি আসন বরাদ্দ।

‘কোটা কোনো যৌক্তিক পদ্ধতি না। তবে বাংলাদেশের কিছু বাস্তবতা আছে। এখানে আসলেই কিছু পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী আছে। এখানে নারীরা যাতে এগিয়ে আসতে না পারে, সে আয়োজন আছে। অংশীজনদের সঙ্গে বসে বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতে একটি গ্রহণযোগ্য কোটার মাত্রা ঠিক করতে হবে।’ -জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন

এবার ভর্তি পরীক্ষায় পাসের হার ৪৫ দশমিক ৬২ শতাংশ। পাস নম্বর ৪০। সর্বোচ্চ নম্বর ৯০ দশমিক ৭৫ পেয়েছেন একজন শিক্ষার্থী। সরকারি মেডিকেল কলেজের পাঁচ হাজার ৩৮০টি আসনে এবং ৬৭টি অনুমোদিত বেসরকারি মেডিকেল কলেজের ছয় হাজার ২৯৩টি আসনে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে।

মেডিকেলে ভর্তিতে ৫ শতাংশ কোটা নিয়ে বেকায়দায় সরকার

বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল প্রণীত নীতিমালার শর্তানুযায়ী ভর্তি পরীক্ষার প্রাপ্ত নম্বর, এসএসসি/সমমান ও এইচএসসি/সমমান পরীক্ষায় প্রাপ্ত জিপিএ থেকে প্রাপ্ত নম্বর যোগ করে অর্জিত স্কোরের ভিত্তিতে মেধা ও পছন্দক্রম অনুযায়ী পাঁচ হাজার ৩৭২ জন পরীক্ষার্থী ৩৭টি সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। পার্বত্য অঞ্চল ছাড়া দেশের সমতল অঞ্চলের উপজাতীয় কোটার (কোড নম্বর ৭৭) শিক্ষার্থীদের তালিকা কোটার স্বপক্ষে সনদ/প্রমাণকসমূহ স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর যাচাই শেষে পরবর্তী সময়ে প্রকাশ করা হবে।

সরকারি মেডিকেল কলেজে নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের ভর্তির সময়সীমা আগামী ২ ফেব্রুয়ারি থেকে ৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। বেসরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তির অনলাইন আবেদন গ্রহণের বিজ্ঞপ্তি আগামী ২৩ জানুয়ারি প্রকাশিত হবে।

মেডিকেল কলেজে ভর্তিতে কোটার বিষয়টি নিয়ে জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন বলেন, ‘কোটা কোনো একটা যৌক্তিক পদ্ধতি না। এটা আধুনিক কোনো দেশের প্রত্যাশিত পদ্ধতি হতে পারে না। কেউ প্রিফার করতে পারে না। তবে বাংলাদেশের কিছু বাস্তবতা আছে। এখানে আসলেই কিছু পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী আছে। এখানে নারীরা যাতে এগিয়ে আসতে না পারে, সে আয়োজন আছে। বিভিন্ন শুমারি ও গবেষণাকে সামনে রেখে অংশীজনদের সঙ্গে বসে বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতে একটি গ্রহণযোগ্য কোটার মাত্রা ঠিক করতে হবে।’

আরও পড়ুন:

এ নিয়ে সরকারের একাধিক উপদেষ্টার বক্তব্য নিতে যোগাযোগ করেও তাদের সাড়া পাওয়া যায়নি। রাজনৈতিক নেতারাও এ নিয়ে কথা বলতে নারাজ।

ফল পুনরায় প্রকাশের দাবি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের
মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল পুনরায় প্রকাশের দাবি জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। রোববার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য (দপ্তর সেল) শাহাদাত হোসেন সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই দাবি জানানো হয়।

এতে বলা হয়, সদ্য প্রকাশিত এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষা ২০২৪-২৫ এর ফলাফল অনুযায়ী, কোটার বদৌলতে ১০০ নম্বরের মধ্যে কেবল ৪১-৪৬ নম্বর পেয়েও বিভিন্ন মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পাচ্ছেন আড়াই শতাধিক শিক্ষার্থী। ফলে তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি নম্বর পেয়েও যোগ্য শিক্ষার্থীরা ভর্তির সুযোগ পাচ্ছেন না। এতে শিক্ষার্থীদের বড় একটা অংশেরই মেডিকেল কলেজে পড়ার স্বপ্ন অধরাই থেকে যাচ্ছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ২৪ এর জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার নেতৃত্বে যে অভ্যুত্থান হয়েছিল, তার শুরুই হয়েছিল মূলত বৈষম্যমূলক কোটা ব্যবস্থার সংস্কারের দাবি থেকে। এই কোটা ব্যবস্থা বহাল থাকা ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক, যা মূলত অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতার বহিঃপ্রকাশ।

বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন মনে করিয়ে দিতে চায়, শহীদ ও আহতদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে আছে এই সরকার। ফলে, জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থান উত্তর আওয়ামী ফ্যাসিবাদী আমলের তৈরি বৈষম্যমূলক কোটা ব্যবস্থার অপব্যবহারের দায়ভার কেবল তাদের ওপরই বর্তায়। ফলে সরকারি-বেসরকারি সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কেবল অনগ্রসর শ্রেণির ‘উপযুক্ত প্রতিনিধিত্ব’ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় কোটা রেখে অন্যান্য সব অযৌক্তিক কোটা বিলোপ এবং সদ্য প্রকাশিত এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল পুনরায় প্রকাশের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানানো হচ্ছে।

এসইউজে/এসএনআর/এমএমএআর/জেআইএম

Read Entire Article