ARTICLE AD
468x60 AD AFTER 4 POSTS
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শৃঙ্খলা পরিপন্থী কার্যক্রম ও সাংবাদিক মারধরের ঘটনায় নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের ১৬ নেতাকর্মীর সনদ বাতিল, স্থায়ী বহিষ্কারসহ বিভিন্ন শাস্তি প্রদান করা হয়েছে।
তদন্ত কমিটির সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে গত বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮৭তম সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) রেজিস্ট্রার দপ্তর থেকে এ বিষয়টি জানানো হয়।
রেজিস্ট্রার দপ্তর সুত্রে জানা গেছে, আবাসিক হলের সিট দখলকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ ও সাংবাদিক মারধরের ঘটনায় চারজনের সনদ বাতিল, একজনকে স্থায়ী বহিষ্কার, দুইজনের সনদ এক বছরের জন্য স্থগিত এবং নয়জনকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করা হয়েছে।
এসব নেতাকর্মীদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি আবু নাঈম আব্দুল্লাহ ওরফে যাযাবর নাঈমকে (ফোকলোর বিভাগ,২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষ) স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়েছে।
এছাড়া সাবেক উপ-কর্মসংস্থান বিষয়ক সম্পাদক জয় মোড়লের (আইন ও বিচার বিভাগ, ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষ) স্নাতক, সাবেক উপ-দপ্তর সম্পাদক লোবন মোখলেছের (ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ,২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষ) স্নাতকোত্তর, ছাত্রলীগ নেতা তানভীর আহমেদ তুহিনের (লোকপ্রশাসন ও সরকার পরিচালনা বিদ্যা বিভাগ,২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষ) স্নাতক, ছাত্রলীগ কর্মী মোস্তফা ফাহিম সিরাজির (অর্থনীতি বিভাগ,২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ) স্নাতকোত্তর সনদ বাতিল করা হয়েছে।
বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার হওয়া নেতাকর্মীদের মধ্যে বর্তমান কমিটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সামিউল হক হিমেলকে (টিপিএস বিভাগ, স্নাতকোত্তর ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষ) ১ বছর, সাবেক উপশিক্ষা ও পাঠচক্র বিষয়ক সম্পাদক মাছুম বিল্লাহকে (নৃবিজ্ঞান বিভাগ,২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষ) ১ বছর, ছাত্রলীগ কর্মী রেজওয়ানুল কবীর রাব্বিকে (ইইই বিভাগ, ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষ) ৩ বছর, আবু রায়হানকে (লোকপ্রশাসন ও সরকার পরিচালনা বিদ্যা বিভাগ, ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষ) ৩ বছর, গালিব ফয়সাল নির্ঝরকে ( ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ, ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষ) ২ বছর, সৌমিক জাহানকে (চারুকলা বিভাগ, ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষ) ৩ বছর, নাঈমুল ইসলাম অনিককে (আইন ও বিচার বিভাগ, স্নাতকোত্তর ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষ) ১ বছর, পবিত্র মণ্ডলকে (পপুলেশন সায়েন্স, ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষ) ১ বছর এবং আব্দুল্লাহ আল শাহরিয়ারকে (চারুকলা ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ) ১ বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।
এছাড়া ছাত্রলীগ কর্মী হাবিবুল্লাহ (আইন ও বিচার বিভাগ, স্নাতকোত্তর ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষ) স্নাতকোত্তর সনদ ও নয়ন হাসানের (ইএসই ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ) স্নাতক সনদ ১ বছরের জন্য স্থগিত করা হয়েছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মাহবুবুর রহমান বলেন, “তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করা হয়েছে। ভবিষ্যতেও বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে এবং সব ধরনের অপরাধ দমনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তৎপর থাকবে।”
হলের সিট দখলকে কেন্দ্র করে গত বছর ৫ ফেব্রুয়ারি ছাত্রলীগ নেতা আবু নাঈম আব্দুল্লাহ ও আরেক ছাত্রলীগ নেতা মাহফুজুর রাজ্জাক অনিকের অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। খবর পেয়ে সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতি ও আজকের পত্রিকার বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি ফাহাদ বিন সাঈদ এবং বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও যায়যায়দিনের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি আহসান হাবীবের উপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে কয়েক দফায় মারধর করেন আবু নাঈম আব্দুল্লাহর অনুসারীরা।
এ ঘটনায় সেদিনই তৎকালীন বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ মাসুম হাওলাদারকে সভাপতি ও তৎকালীন প্রক্টর সঞ্জয় কুমার মুখার্জিকে সদস্য সচিব করে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।