‘জুলাই অভ্যুত্থান’ শক্তির নতুন প্ল্যাটফর্ম আসছে এপ্রিলে

3 hours ago 1
ARTICLE AD
468x60 AD AFTER 4 POSTS

জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি আলী আহসান জুনায়েদের নেতৃত্বে এপ্রিলে আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে নতুন প্ল্যাটফর্ম।

জাতীয় নাগরিক পার্টিতে (এনসিপি) যোগ না দেওয়া জুলাই অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া অংশ নতুন প্ল্যাটফর্মে যুক্ত হচ্ছেন। ভবিষ্যতে এই প্ল্যাটফর্ম রাজনৈতিক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে পারে।

রবিবার (১৬ মার্চ) আলী আহসান জুনায়েদ তার ফেসবুক প্রোফাইলে নতুন প্ল্যাটফর্ম গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন। কার্যক্রম নিয়ে এপ্রিলে আত্মপ্রকাশ করতে করবে তাদের এই প্ল্যাটফর্ম, যাকে শক্তিশালী হিসেবে বর্ণনা করেছেন তিনি।

এনসিপি গঠনের পরই এমন একটি নতুন প্ল্যাটফর্ম আসার কথা শোনা যাচ্ছিল। অবশেষে জুনায়েদের ঘোষণা থেকে বিষয়টি পরিষ্কার হলো।

অভ্যুত্থানের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবিরের সাবেক সভাপতি জুনায়েদ, রাফে সালমান রিফাত, শরফুদ্দিনসহ অন্তত ৩০ নেতা যোগ দেন জাতীয় নাগরিক কমিটিতে। 

শিবিরের সাবেক নেতারা আলী আহসান জুনায়েদকে এনসিপির সদস্য সচিব পদে চেয়েছিলেন। ছাত্রশক্তি, ছাত্র অধিকার, ছাত্রলীগের পক্ষত্যাগী এবং বাম সংগঠন থেকে আসা নেতারাও নিজ নিজ বলয় থেকে শীর্ষ পদ চেয়েছিলেন।

তখন বলাবলি হয়েছে, পদ-পদবি নিয়ে নাহিদ ইসলাম, সারজিস আলম, হাসনাত আব্দুল্লাহদের সঙ্গে বিরোধ সাবেক শিবির নেতারা এনসিপিতে যোগ দেননি। তারা এখন নতুন রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্মে যুক্ত হচ্ছেন।

এনসিপি গঠনের পর জাতীয় নাগরিক কমিটি বা জনাক বর্তমানে নিষ্ক্রিয়। এই কমিটির ব্যানারে এখন কোনো কার্যক্রম দেখা যায় না। 

যোগ না দেওয়া নেতাদের ভাষ্য- আওয়ামী লীগ আমলে শিবির হত্যাকে যেভাবে বৈধতা দেওয়া হয়েছিল, নতুন দলেও শুধু অতীতে শিবির সংশ্লিষ্টতার কারণে নেতৃত্বে আসতে দেওয়া হয়নি। ট্যাগিংয়ের রাজনীতি অব্যাহত রাখা হয়েছে। 

জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি আলী আহসান জুনায়েদ রবিবার রাতে তার ফেসবুক প্রোফাইলে নতুন প্ল্যাটফর্মের ঘোষণা দেন।


এই অবস্থায় নতুন রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম নিয়ে জুনায়েদের ফেসবুক পোস্টের বিস্তারিত তুলে ধরা হলো।

‘আসসালামু আলাইকুম’ সম্বোধন করে জুনায়েদ লিখেছেন, “৩৬শে জুলাই ফতহে গণভবনের পর বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক নতুন যুগের সূচনা হলেও, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া বহু মানুষের কাছে কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন এখনও বাস্তবায়িত হয়নি।”

“পিলখানা, শাপলা ও জুলাই গণহত্যার মতো ভয়াবহ অপরাধের বিচার, ফ্যাসিবাদী দল আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধকরণ, দুর্নীতিমুক্ত সামাজিক ও রাজনৈতিক কাঠামো নির্মাণ, ধর্মবিদ্বেষ ও ইসলামোফোবিয়ামুক্ত সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বাংলাদেশ গঠন, ফ্যাসিবাদী কাঠামোর সম্পূর্ণ বিলোপ এবং আধিপত্যবাদের বিপক্ষে কার্যকর অবস্থান- এসব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আজ রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে গৌণ হয়ে পড়েছে।”

জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদ ও আহত যোদ্ধাদের স্বীকৃতি ও সম্মান দেওয়ার কাজ এখনও অসম্পূর্ণ রয়েছে বলে মন্তব্য করে জুনায়েদ লিখেছেন, “এই পরিস্থিতিতে, আমরা জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পক্ষের সকল রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সমন্বয়ে একটি শক্তিশালী প্ল্যাটফর্ম গঠনের উদ্যোগ নিয়েছি। এর মাধ্যমে আমরা গণঅভ্যুত্থানের দাবিগুলো প্রকৃতই বাস্তবায়ন করতে চাই।”

“৩৬শে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে বাংলাদেশে যে বিপ্লবের সূচনা হয়েছে, তা পূর্ণতা দেওয়ার লক্ষ্যে আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। সমাজের সর্বস্তরে যোগ্য ও নৈতিক নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা, সামাজিক সুবিচার ও মানবিক মর্যাদা নিশ্চিতকরণ, সামাজিক নিরাপত্তা বিধান, বিদ্যমান ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার মূলোৎপাটন এবং আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারলে এই বিপ্লব পরিপূর্ণতা পাবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।”

ফেসবুক পোস্টে জুনায়েদ লিখেছেন, “আমরা বিশ্বাস করি, নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতি এবং ধর্মীয় বিশ্বাস ও মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধাশীল সামাজিক চুক্তির ভিত্তিতে বাংলাদেশ পুনর্গঠন সম্ভব।”

অভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশ পুনর্গঠনের এই উদ্যোগে সবার সক্রিয় অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়ে তিনি লিখেছেন, “আসুন, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দেশ গঠনের এই সংগ্রামে শামিল হই।”

নতুন প্ল্যাটফর্মে সংযুক্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে কমন্টে অংশ গুগল ফর্ম জুড়ে দিয়েছেন জুনায়েদ।

পোস্টের শেষে জুনায়েদ নিজেকে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান’ শক্তির নতুন প্ল্যাটফর্মের প্রধান উদ্যোক্তা হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন।

Read Entire Article