দাম কমাতে তুরস্ক-দ. কোরিয়া থেকে ডিম আমদানি করবে যুক্তরাষ্ট্র

5 hours ago 1
ARTICLE AD
468x60 AD AFTER 4 POSTS

যুক্তরাষ্ট্রে ডিমের অতিরিক্ত দামের কারণে বিপাকে পড়েছেন ক্রেতারা। এমন পরিস্থিতিতে বিভিন্ন দেশ থেকে ডিম আমদানির পরিকল্পনা করছে কর্তৃপক্ষ। কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন যে, ট্রাম্প প্রশাসন তুরস্ক এবং দক্ষিণ কোরিয়া থেকে ডিম আমদানির পরিকল্পনা করছে এবং আমেরিকান ভোক্তাদের জন্য ডিমের দাম হাতের নাগালে রাখতে অন্যান্য দেশের সঙ্গেও আলোচনা চলছে। খবর বিবিসির।

দেশটির কৃষি বিষয়ক মন্ত্রী ব্রুক রোলিন্স হোয়াইট হাউজে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, আমরা স্বল্পমেয়াদে লাখ লাখ ডিম আমদানির কথা বলছি।

বার্ড ফ্লুর বিধ্বংসী প্রাদুর্ভাবের কারণে সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রে ডিমের উত্পাদন হ্রাস পেয়েছে এবং সেখানে ডিমের দাম সর্বকালের সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। ফলে সেখানে চাহিদার সঙ্গে যোগানের সামঞ্জস্য রাখা যাচ্ছে না।

মূলত বার্ড ফ্লুর কারণেই যুক্তরাষ্ট্রে ডিমের উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। কোনো খামারে ভাইরাস শনাক্ত হলে সংক্রমণ ঠেকাতে পুরো ঝাঁকই ধ্বংস করে ফেলা হয়। অনেক খামারে লাখ লাখ মুরগি থাকায় একেকটি সংক্রমণেই ডিমের সরবরাহে বড় ধাক্কা লাগে।

একটি খামারে প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে পুরো প্রক্রিয়া শেষ করতে কয়েক মাস লেগে যায়। কারণ মরা মুরগি সরানো, শেড পরিষ্কার ও নতুন মুরগি ডিম উৎপাদনে সক্ষম হতে অনেকটা সময় লাগে।

যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে সেখানে বার্ড ফ্লুর প্রাদুর্ভাবের পর ১৬ কোটি ২০ লাখ মুরগী, টার্কি এবং অন্যান্য পাখি নিধন করা হয়।

বার্ড ফ্লুর পাশাপাশি ডিমের উৎপাদন ব্যয়ও বেড়েছে। খাদ্য, জ্বালানি ও শ্রম ব্যয় বৃদ্ধির কারণে খামারিরা বাড়তি খরচের মুখে পড়েছেন। এছাড়া, যুক্তরাষ্ট্রের ১০টি রাজ্যে কেবল খাঁচামুক্ত ডিম বিক্রির বিধান চালু হয়েছে, যার ফলে এ ধরনের ডিমের সরবরাহ কমেছে। বিশেষ করে, ক্যালিফোর্নিয়ায় সাম্প্রতিক সংক্রমণগুলো মূলত খাঁচামুক্ত খামারেই ঘটেছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রে ডিমের চাহিদাও বেড়েছে।

ডিমের মূল্যবৃদ্ধি যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য মূল্যস্ফীতির অন্যতম প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। শ্রম পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, গত মাসে খাদ্যদ্রব্যের মূল্যস্ফীতির দুই-তৃতীয়াংশের জন্য দায়ী ডিমের দাম বৃদ্ধি।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণায় পণ্যের দাম কমানোর প্রতিশ্রুতি থাকলেও গত এক বছরে ডিমের দাম ৬৫ শতাংশের বেশি বেড়েছে।

ব্রুক রোলিন্স বলেন, তারা নতুন সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য অন্যান্য দেশের সঙ্গে আলোচনা করছেন। তবে কোন কোন দেশের সঙ্গে আলোচনা চলছে তা তিনি উল্লেখ করেননি।

তিনি বলেন, যখন আমাদের মুরগির সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে এবং আমাদের এই শিল্পের উৎপাদন আবার শুরু হবে, আশা করি কয়েক মাসের মধ্যেই আমরা আমাদের অভ্যন্তরীণ ডিমের উৎপাদনে ফিরে যেতে পারবো।

গড় মূল্য ৪ দশমিক ৯৫ ডলার হলেও যুক্তরাষ্ট্রের অনেক জায়গায় এক ডজন ডিমের দাম ১০ ডলার ছাড়িয়ে গেছে। বিশেষ করে, অর্গানিক ও মুক্তভাবে পালন করা (কেজ-ফ্রি) মুরগির ডিমের দাম আরও বেশি।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিকট ভবিষ্যতে এই সংকট কাটার সম্ভাবনা নেই। সাধারণত ইস্টারের আগে ডিমের চাহিদা বাড়ে, যা দাম আরও বাড়িয়ে দিতে পারে। মার্কিন কৃষি বিভাগ এর আগে পূর্বাভাস দিয়েছিল, ২০২৫ সালে ডিমের দাম আরও ২০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে।

টিটিএন

Read Entire Article