সেন্টমার্টিনে খাদ্যসংকট কাটলেও কাটেনি আতঙ্ক

1 day ago 1
ARTICLE AD
468x60 AD AFTER 4 POSTS

মিয়ানমারের রাখাইনে চলমান সংঘর্ষের জের ধরে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌ-রুটে চলাচলের সময় আতঙ্কে থাকেন সার্ভিস ট্রলারের চালকরা। কয়েকদিন আগে মিয়ানমার নৌ-বাহিনীর গুলিতে একজন জেলে নিহত হওয়ায় এই আতঙ্ক আরও বেড়েছে। তবে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় নিয়মানুযায়ী টেকনাফ থেকে সার্ভিস ট্রলার যাচ্ছে দ্বীপে। নিয়মিত সার্ভিস ট্রলার চলায় সেখানে খাবারের কোনো সংকট নেই বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

স্থানীয়রা বলেন, মিয়ানমারের রাখাইনে আরাকান আর্মির সঙ্গে দেশটির সেনাবাহিনীর দীর্ঘদিন ধরে লড়াই চলছে। এ লড়াইয়ে মিয়ানমার সীমান্তের একাধিক সেনা ক্যাম্প-চৌকি আরাকান আর্মি দখল করে নিয়েছে। এ ঘটনার পর থেকে নাফ নদী ও বঙ্গোপসাগর অংশ দিয়ে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌপথে খাদ্যসামগ্রীর ট্রলার, অসুস্থ রোগী অথবা যাত্রীবাহী ট্রলার আসা-যাওয়ার সময় অকারণে গুলি করছে অজ্ঞাত লোকজন। মিয়ানমার সীমান্ত থেকে একাধিকবার বাংলাদেশি ট্রলার ও স্পিডবোট লক্ষ্য করে গুলি বর্ষণের ঘটনায় নৌযান চলাচলে ঝুঁকি দেখা দেয়। গুলি এসে পড়ে টেকনাফ স্থলবন্দর অফিসেও। এতে গত কয়েক মাস টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন দ্বীপে খাদ্যসামগ্রী যেতে সমস্যা দেখা দেয়।

তবে শাহপরীর দ্বীপ জেটি দিয়ে এখন স্বাভাবিক নিয়মে সেন্টমার্টিন দ্বীপে খাদ্যসামগ্রী যেতে পারায় সংকট নেই। কিন্তু আতঙ্ক মাথায় নিয়েই নাফ নদী ও বঙ্গোপসাগর পার হতে হয় ট্রলারকে।

টেকনাফ-সেন্টমার্টিন ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুর রশিদ বলেন, সেন্টমার্টিন দ্বীপে টেকনাফ জেটিঘাট থেকে নিয়মানুযায়ী ট্রলারে ব্যবসায়ীরা খাদ্যসামগ্রী দ্বীপে নিয়ে যাচ্ছেন। সেইসঙ্গে যাত্রীবাহী ট্রলারও আসা-যাওয়া করছে।

তবে শাহপরীর দ্বীপ গোলারচরে বালি জমে চর সৃষ্টি হলে মাঝেমধ্যেই মিয়ানমার সীমান্তের কাছাকাছি দিয়ে বাংলাদেশি ট্রলারকে সেন্টমার্টিনে যেতে হয়। বাংলাদেশি ট্রলারে গুলি বর্ষণ না করলে অথবা বৈরী আবহাওয়ার সমস্যা দেখা না দিলে সেন্টমার্টিন দ্বীপে খাদ্য ঠিকমতো পৌঁছানো সম্ভব। সেক্ষেত্রে দ্বীপে আর খাদ্যসংকট সৃষ্টি হয় না।

সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য সৈয়দ আলম মেম্বার বলেন, সেন্টমার্টিন দ্বীপে আপাতত মাসখানেক নিয়ম অনুযায়ী পরিমাণমতো খাদ্যপণ্যসহ যাত্রীবাহী ট্রলার যাতায়াত করতে পারছে। তাই দ্বীপে খাদ্যসংকট নেই। তবে সবার মধ্যে চলাচলের ক্ষেত্রে আতঙ্ক রয়েছে। মিয়ানমার সীমান্ত থেকে একাধিকবার বাংলাদেশি ট্রলার ও স্পিডবোট লক্ষ্য করে গুলি বর্ষণ করায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

তার মতে, যাতায়াতের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারের পক্ষ থেকে মিয়ানমার সীমান্তে থাকা আরাকান আর্মিসহ দেশটির সরকারের সঙ্গে আরও কার্যকরী যোগাযোগ বাড়ানো দরকার। এটা নিশ্চিত করা গেলে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌপথে চলাচলের নিরাপত্তা নিশ্চিত সম্ভব। আর টেকনাফ জেটি ও শাহপরীর দ্বীপ জেটিঘাটের বিকল্প হিসেবে টেকনাফ জিরো পয়েন্ট দিয়ে সেন্টমার্টিন যেতে নতুন একটি জেটিঘাট নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। ওই স্থান থেকে দ্বীপের দূরত্ব কম হলেও সাগর সবসময় উত্তাল থাকায় চলাচলে কিছুটা ঝুঁকি থেকে যায়।

এ বিষয়ে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বলেন, এখন সেন্টমার্টিনে পরিমাণ মতো খাদ্যসামগ্রী যাচ্ছে। তেমন কোনো সমস্যা দেখা যাচ্ছে না। তবে মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সমস্যার কারণে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌপথে মাঝেমধ্যেই সমস্যা দেখা দেয়। বিকল্প পথ হিসেবে টেকনাফ জিরো পয়েন্টে একটি জেটিঘাট নির্মাণের বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।

এফএ/জিকেএস

Read Entire Article