ARTICLE AD
468x60 AD AFTER 4 POSTS
দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর খুলে দেওয়া হলো যমুনা রেল সেতু। মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) দুপুর পৌনে ১২টায় সেতুর পূর্ব ইব্রাহিমাবাদ স্টেশন এলাকায় পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে সেতুটির উদ্বোধন করা হয়। এতে রেলপথের সম্ভাবনাময় অগ্রযাত্রার এক নতুন দ্বার উন্মোচন হলো। তবে উত্তরের মানুষের পথের কাঁটা হয়ে থাকলো ১১৪ কিলোমিটার সিঙ্গেল রেললাইন। এছাড়া ১৯ মার্চ থেকে সেতুটি ব্যবহারকারী প্রতিটি ট্রেনের যাত্রীকে গুনতে হবে বাড়তি ভাড়া।
রেলওয়ের মহাপরিচালক এম আফজাল হোসেনের সভাপতিত্বে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মন্ত্রণালয়ের সচিব এম ফাহিমুল ইসলাম প্রধান অতিথি হিসেবে উদ্বোধন ঘোষণা করেন। এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত জাপানি রাষ্ট্রদূত সাইদা শিনিচি ও জাপানের বৈদেশিক উন্নয়ন সংস্থা জাইকার দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক মহা-পরিচালক ইতো তেরুয়ুকি। এই উদ্বোধনের পর তারা সেতুর পূর্ব প্রান্ত থেকে একটি বিশেষ ট্রেনে যমুনা সেতুর পশ্চিমে সিরাজগঞ্জে সায়দাবাদ স্টেশনে সংবাদ সম্মেলন করেন।
এরআগে উদ্বোধনী বিশেষ ট্রেনটি ঘণ্টায় ১০০ মিটার গতিতে ১২টা ১৫ মিনিটে পূর্ব প্রান্ত থেকে ছেড়ে ১২টা ১৮ মিনিট ৩০ সেকেন্ডে সেতুটি পাড়ি দেয়। এতে সেতু অতিক্রম করতে সময় লেগে মাত্র সাড়ে তিন মিনিট।
আরও পড়ুন-
- উদ্বোধন হলো যমুনা রেল সেতু
- যমুনা রেল সেতুর দ্বার খুলছে আজ
- মঙ্গলবার সাড়ে তিন মিনিটে যমুনা অতিক্রম করবে ট্রেন
রেলওয়ে বিভাগ বলছে, রাজশাহী থেকে যমুনা রেলসেতু পর্যন্ত রেলপথের দূরত্ব ১৩৪ কিলোমিটার। এরমধ্যে নাটোরের আব্দুলপুর জংশন থেকে ঈশ্বরদী পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার রেলপথ ডাবল লাইন। আর ঈশ্বরদী থেকে রেলসেতু পর্যন্ত ৭১ কিলোমিটার এবং রাজশাহী থেকে আব্দুলপুর পর্যন্ত ৪৩ কিলোমিটার মিলে মোট ১১৪ কিলোমিটার রেলপথ সিঙ্গেল লাইন। এই ১১৪ কিলোমিটারে ট্রেন পাসিংয়ের জন্য দাঁড়াবে। ফলে যাত্রীদের দুর্ভোগ ঠিকই হবে। যদিও জয়দেবপুর থেকে ঈশ্বরদী পর্যন্ত রেললাইনকে ডাবল লাইনে উন্নীত করতে রেলওয়ের একটি প্রকল্প থাকলেও কাজ চলছে না।
গত ১২ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী থেকে সিল্ক সিটি এক্সপ্রেস ট্রেন প্রথমবারের মতো যাত্রী নিয়ে যমুনা রেল সেতু পার হয়ে ঢাকায় পৌঁছায়। পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেন চালানোর সময় একটি ট্রেন ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার বেগে সেতুটি অতিক্রম করে।
যমুনা রেল সেতু প্রকল্পের পরিচালক আল ফাত্তাহ মাসউদুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, রেল সেতুতে দুটি লাইন রয়েছে। প্রথম পর্যায়ে একটি লাইনে প্রতিদিন ৩৪টি ট্রেন চলাচল করছে। আজ থেকে ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার গতিতে দিনে কমপক্ষে ৮৮টি ট্রেন দ্রুত গতিতে সেতু পারাপার হতে পারবে। এতে অবশ্যই সময় সাশ্রয় হবে। কারণ পুরোনো সেতুতে ওঠার আগে ট্রেন থামতে হতো। বিপরীত দিক থেকে আসা ট্রেন পাসিং না হওয়া পর্যন্ত ট্রেনটিকে অপেক্ষা করতে হতো। এভাবে ৩০ থেকে ৪০ মিনিট কেটে যেত। নতুন সেতু চালুর কারণে এই অপেক্ষা আর রইলো না।
সেতু নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ১৬ হাজার ৭৮০ দশমিক ৯৬ কোটি টাকা। যার ৭২ দশমিক ৪ শতাংশ ঋণ হিসেবে দিয়েছে জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা) এবং বাকি অর্থ সরকার দিয়েছে। জাপানের ওটিজি এবং আইএইচআই যৌথভাবে সেতুটি নির্মাণ করেছে। এরআগে ২০২০ সালের ২৯ নভেম্বর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি এ সেতুর নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। পরবর্তী ২০২১ সালের মার্চে পিলার নির্মাণের জন্য পাইলিংয়ের কাজ শুরু হয়। ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এ রেল সেতু দেশের দীর্ঘতম প্রথম ডাবল ট্রাকের ডুয়েল গেজের সেতু।
এফএ/এমএস